গাজা ভূখন্ডে চলমান যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে জাতিহত্যা (জেনোসাইড) চালাচ্ছে ইসরায়েল। অ্যামনেস্টি বলেছে, কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন ঘটনা ও ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বক্তব্য বিশ্লেষণের ভিত্তিতে তারা এমন উপসংহারে পৌঁছেছে।
গাজায় সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা করতে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের প্রতিনিধিদলের আজ শনিবার (৩০ নভেম্বর) মিসরের রাজধানী কায়রোতে যাওয়ার কথা রয়েছে।
ইসরায়েলের ট্যাংক গাজা ভূখন্ডের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলীয় এলাকাগুলোর বেশ গভীরে ঢুকে পড়েছে এবং ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪২ জন নিহত হয়েছেন।
লেবাননে সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে আজ বুধবার (২৭ নভেম্বর) থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। তবে লেবানন থেকে এখনই সেনা প্রত্যাহার করবে না ইসরায়েল। অবশ্য ৬০ দিনের মধ্যে তাদের অবশ্যই লেবানন থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা।
ফিলিস্তিনের গাজা ভূখন্ডে এক বছরের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ১ হাজারের বেশি চিকিৎসক ও নার্স নিহত হয়েছেন।
গাজায় গত দুই দিনে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ১২০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শনিবার ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, গাজা সিটির জয়তুন এলাকায় রাতে একটি আবাসিক ভবনে হামলায় অন্তত ৭ জন নিহত হয়েছেন।
বিশ্বজুড়ে ২০২৪ সালে এ পর্যন্ত ২৮১ জন সাহায্যকর্মী নিহত হয়েছেন। এতে করে মানবতাবাদীদের কাছে ২০২৪ সাল হয়ে উঠেছে সবচেয়ে মারাত্মক বছর।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী লেবাননে দুই মাস আগে হামলা জোরদার করার পর থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে ইসরায়েলি বোমার আঘাতে ২০০ শর বেশি শিশু নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ এ তথ্য জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনের গাজার উত্তরাঞ্চলীয় বেইত লাহিয়া এলাকায় একটি বহুতল আবাসিক ভবনে ইসরায়েলের বিমান হামলায় বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি হতাহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে যেতে প্রস্তুত। শুক্রবার হামাসের পক্ষ থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মতির কথা জানানো হয়।
লেবাননের বিভিন্ন জায়গায় শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) ইসরায়েলের চালানো বিভিন্ন হামলায় কমপক্ষে ৫৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১৮২ জন।
লেবাননে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় ১২ জন প্যারামেডিক নিহত হয়েছেন। স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে সরাসরি জড়িত এসব ব্যক্তির নিহত হওয়ার ঘটনায় শোক জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস।
ফিলিস্তিনের গাজা ভূখন্ডে এক বছরের বেশি সময় ধরে চলমান যুদ্ধের সময় প্রাণভয়ে সেখানকার বাসিন্দারা ছুটে বেড়িয়েছেন এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে। ইসরায়েলি বাহিনী তাদের বারবার এলাকা ত্যাগে বাধ্য করেছে।
ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজায় এত দিনে কমপক্ষে ৪৬ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ইসরায়েল ঘোষিত মানবিক অঞ্চলের একটি অস্থায়ী ক্যাফেটেরিয়ায় ১১ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা পাঠানো নিশ্চিত করতে আমেরিকা যে সময় ঠিক করে দিয়েছিল তা মানেনি ইসরায়েল। জরুরি ভিত্তিতে ইসরায়েলকে এই ইস্যুতে ৩০ দিন সময় দিয়ে গত মাসে চিঠি দেয় আমেরিকা।
ফিলিস্তিনের গাজা নগরীর উত্তরাঞ্চলে চার সপ্তাহ আগে অভিযান শুরু করেছিল ইসরায়েলি বাহিনী। এরপর থেকে সেখানে ১ হাজার ২০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
ইসরায়েলকে অবিলম্বে গাজা ও লেবাননে সামরিক আগ্রাসন বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এ ছাড়া ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে বিশ্ববাসীর প্রতিও আহ্বান জানান তিনি।
গাজার জাবালিয়া উদ্বাস্তুশিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ১৩ শিশুসহ অন্তত ৩৩ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন একই পরিবারের মা–বাবা, সন্তান, নাতি-নাতনিসহ সব সদস্যও।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কার্যালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ব্যাপকভাবে ইসরায়েলের হামলা চালানো এত বেশিসংখ্যক প্রাণহানি হওয়ার পেছনে একটি বড় কারণ।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ৪৩ হাজার ৪৬৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত এক লাখের বেশি ফিলিস্তিনি। অন্যদিকে লেবাননে নিহত হয়েছেন ৩ হাজার ১০২ জন। আহত ১৩ হাজার ৮১৯ জন।