১৪৩২ বঙ্গাব্দ স্মরণকালের বিস্ময় নিয়ে আবির্ভূত হয়েছে নিউইয়র্ক শহরে। দুই দিনের বর্ষবরণ উৎসব বাঙালি জাতির পরম আরাধ্য ও চরম প্রাপ্তির বৈকুণ্ঠময় অনুভবের স্মারক হয়ে থাকল। যেন একখণ্ড বাংলাদেশ বিশ্ববাসীকে জানান দিল যে আমাদের জীবনও আনন্দময়।
পয়লা বৈশাখ (১৪ এপ্রিল সোমবার) জেদ্দার বাংলাদেশ কনস্যুলেট বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য আর নগর জীবনের নতুনের জয়গান সমৃদ্ধ এক আন্দঘন বৈশাখী উপহার দিয়েছে ‘শুভ নববর্ষ-১৪৩২’ উদ্যাপনে।
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে গতকাল সোমবার নাচ, গান ও রসনাতৃপ্তির মধ্য দিয়ে বরণ করা হয়েছে বাংলা নববর্ষকে। অনুষ্ঠানে অভিবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের পাশাপাশি আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বিদেশি কূটনীতিক ও বিশিষ্ট অতিথিদের।
চ্যানেল আই-সুরের ধারা আয়োজিত ১৪৩২ বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুরু হয় রাতের আঁধার কেটে ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে। রাজধানীর ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবরের উন্মুক্ত চত্বরে যেন প্রকৃতিকে সঙ্গে নিয়েই শুরু হলো নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর সূচনা।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান আমাদের সামনে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার সুযোগ এনে দিয়েছে। এ সুযোগ যেন আমরা না হারাই। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক এবারের নববর্ষে আমাদের অঙ্গীকার।
আকাশে সবে লাল সূর্য উঠতে শুরু করেছে। রাজধানী ঢাকার রমনা বটমূলের মঞ্চে প্রস্তুত শিল্পীরা। শিল্পী সুপ্রিয়া দাশ গেয়ে উঠলেন ‘ভৈরবী’ রাগালাপ। এর মধ্য দিয়ে আজ পয়লা বৈশাখ (সোমবার) ভোরে ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের উদ্যোগে শুরু হয় বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ বরণের পালা।
চট্টগ্রামের ডিসি হিলে ঐতিহ্যবাহী নববর্ষের অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিকালে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ভাঙচুর করা হয়েছে মঞ্চ, ছিঁড়ে ফেলা হয় ব্যানার। হামলার পর সোমবারের পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে।
পয়লা বৈশাখ পালনের ঐতিহ্যগত নানা আয়োজন ও অনুষ্ঠান নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি ও উসকানি দেওয়ার অপপ্রয়াসের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ১৮ বিশিষ্ট নাগরিক।
বাঙালি সমাজকে নিয়ে আলোর পথে মুক্তির পথযাত্রী হওয়ার আহ্বান জানানো হবে এবার পয়লা বৈশাখে ছায়ানটের ঐতিহ্যবাহী প্রভাতি অনুষ্ঠানে। শুক্রবার বিকেল ৪টায় ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি–ভবন মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
২০২৫ সালের সূচনার সঙ্গে বিদায় নিয়েছে ২০২৪। নানা ঘটন–অঘটনে বেশ আলোচিত ছিল বছরটি। এ বছর দেশে দেশে যেমন নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারের পালাবদল হয়েছে, দুর্যোগ–বিপর্যয়ও কম হয়নি। বিশ্বজুড়ে নতুন করে ছড়িয়ে পড়েছে যুদ্ধবিগ্রহ।