logo
মতামত

যুদ্ধ চাই না এই পৃথিবীতে

ফারহানা আহমেদ লিসা, ক্যালিফোর্নিয়া, যুক্তরাষ্ট্র
ফারহানা আহমেদ লিসা, ক্যালিফোর্নিয়া, যুক্তরাষ্ট্র২ দিন আগে
Copied!
যুদ্ধ চাই না এই পৃথিবীতে

কিছু ঘটনা শেয়ার করছি, যার পরিপ্রেক্ষিতে পজেটিভ পরিবর্তন আসছে, আসবে ভালোবাসার এই দেশে।

মাহমুদ খলিল, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ‍্যালয়ের ষ্টুডেন্ট অ্যাকটিভিস্ট মানে ক‍্যাম্পাসে লিড নেগেশিয়েটর, প্রো প‍্যালেস্টাইন। তাঁর যুক্তরাষ্ট্রে থাকার লিগ্যাল রাইট আছে। কিন্তু তাঁকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁর স্ত্রী সন্তানসম্ভাবা। জেলে বসে তিনি ফোনে সন্তানের জন্মের সময়ে ফিসফিস করে স্ত্রীকে সাহস জুগিয়ে চলেছেন। কেন ফিসফিস করছেন তিনি? ঘুমিয়ে থাকা অন‍্য কয়েদিদের যেন ঘুম ভেঙ্গে না যায়।

হার্ভার্ড ও কলম্বিয়াসহ প্রায় ৫০–৬০টি বিশ্ববিদ‍্যালয় ফেডারেল ইনভেস্টিগেশনের আওতায়। এ রকম কিছু অপ্রোজনীয় ছাত্র অবান্ধব পদক্ষেপে শিক্ষাক্ষেত্রে অপ্রোয়জনীয় হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে জনমত বাড়ছে। পুরো পৃথিবীর সব মেধাবি শিক্ষার্থীরা আসেন যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে। প্রচুর পয়সা খরচ করে। কিছু আসেন স্কলারশিপ নিয়ে।

যারা চাকরি নিয়ে থাকেন, সমাজে তাদের অবদান অসীম। ৩০–৩৫ পার্সেন্ট আয়কর তো দিতেই হয় ফেডারেল আয়কর হিসেবে। ক‍্যালিফোর্নিয়ার মতো কিছু স্টেটে স্টেট ট‍্যাক্সও দিতে হয় অনেক। আর চেক আর ব‍্যালেন্স সব সময় উন্নতি আনে। একক ক্ষমতাধারী হলে ভুল সিদ্ধান্ত প্রতিরোধ করার কেউ থাকে না।

জানুয়ারির ২০ তারিখ থেকে রিপাবলিকানদের হাতে এল দেশ চালানোর ক্ষমতা। ক্ষমতা হাতে পেয়ে ইলন মাস্ক যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কার্যকারিতা বিভাগের দায়িত্ব নিলেন। অপচয় কমাবেন। কিন্তু পদ্ধতিগুলো ছিল ভুল। ফেডারেল কর্মীদের অযথা ছাটাই করলেন, শিক্ষা, বাণিজ‍্য থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে ভুলের পর ভুল সিদ্ধান্ত নিলেন। পুরো বিশ্বে ইউএসএইডের টাকা বন্ধ করলেন। তাঁর প্রযুক্তির সূর্য শক্তি ব‍্যাবহার করে চালানো গাড়ি টেসলার বানিজ্যে ধ্বস নামল। যে টাকা সকরার থেকে তিনি পাচ্ছিলেন তার থেকে বহুগুন ক্ষতি হয়ে গেল কয়েক দিনেই। প্রেসিডেন্ট শুল্ক বাড়ালেন আমদানি পের ওপর বহুগুন। যে ভার বইতে হবে আমেরিকানদেরই। কারণ চায়না, কানাডা, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন কেউ মেনে নেননি এসব আবদার।

IMG_7022 (1)

ইলন মাস্ক ব‍্যাবসীয়ি। ক্ষতির সম্ভাবনা দেখে সরকারের সাথে দূরত্ব বাড়তে থাকল তাঁর। বাজেটের বিগ বিউটিফুল বিলে শুল্ক আরোপ এবং স্বাস্থ্যখাতসহ সব প্রয়োজনীয় খাতে টাকা কমিয়ে বিলিওনিয়ারদের ট‍্যাক্স কাটতে তিনি রাজি হলেন না। চলে গেলেন দায়িত্ব ছেড়ে যেটা প্রয়োজনীয় ছিল। ক্ষুধার্থ চাকরীহীন মানুষের ওপর দাঁড়িয়ে কি আর সাফল্যের হাসি হাসা যায়? শুরু হয়েছে আইসের (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) তাণ্ডব। ক‍্যালিফোর্নিয়ার স‍ব জায়গায় প্রচুর ইমগ্রান্ট। লিগ্যাল বা লিগ‍্যাল না। তাঁরা রান্না করেন রেস্টুরেন্টে, খাবার পরিবেশন করেন, হোটেল, খেত খামার, বাগান পরিচর্যা থেকে যত রকম কষ্টের কাজ আছে করেন। লিগ্যাল সুবিধা না পেলেও ট্যাক্স দেন। আছেন বহু বছর ধরে। তাঁদের বাছবিচার ছাড়া ধরে ধরে বিভিন্ন দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এরমধ্যে আমেরিকায় জন্ম নেওয়া ক্যনসারের চিকিৎসা নেওয়া ৪ বছরের শিশুও আছে। পরিবারের পর পরিবারে কান্নার রোল পড়ে গেল। সাধারণ মানুষ বাক্‌স্বাধীনতা কাজে লাগিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুললেন। গভর্নর গ‍্যাভিন নিউসোম আর্মি নামিয়ে অতিরিক্ত বলপ্রয়েগের বিরোধিতা করলেন। পুরো দেশজুড়ে শুরু হয়ে গেল নো আবলো কিংস মুভমেন্ট। হাজার হাজার মানুষ পথে নেমে গেলেন। আপাতত কৃষক, রেস্টোরেন্ট শ্রমিক সহ বেশ কিছু পেশার লোককে আমেরিকার বাইরে পাঠানো হবে না সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ইসরাইল অযথা গাজাবাসীদের ওপর আক্রমন করে ২০২৫ শে মানবিক ক্রাইসিস তৈরি করেছে নিজেদের সুরক্ষা করতে হবে বলে। এরপর আক্রমন করেছে ইরান। ক্ষমতার লোভ নেতেনইয়াহুর বা হিটলারদের মত শাসকদের শেষ হয়না। প্রচুর হোলকাষ্ট সারভাইবার রুগীদের সাথে আমার কথা হয়েছে। সে গল্প অ কোন দিনের জন‍্য তোলা থাক। এদেশের মাগা (মেইক আমেরিকা গ্রেট এগেইন) সমার্থক সহ রাশিয়া, সবাই ইরান আক্রমন তো দূরে থাক, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর অমানবিক জেনোসাইড থেকে আমেরিকাকে দূরে থাকতে বলছেন। আমরা যুদ্ধ চাই না।

সেদিন বাসায় ফিরে দেখি ইলন মাস্কের স্টার লিংকের রকেট উড়ে যাচ্ছে। তিনি স‍্যাটেলাইটের মাধ‍্যমে ইরানে ইন্টারনেট সেবা ফিরিয়ে দিয়েছেন। মানবতার পাশে আসুন প্লিজ পরাশক্তি।

কারও কবরের ওপরের বেহেশত তৈরি করা যায়না।

আরও পড়ুন

যুদ্ধ চাই না এই পৃথিবীতে

যুদ্ধ চাই না এই পৃথিবীতে

ভালোবাসার এই দেশে মাহমুদ খলিল, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ‍্যালয়ের ষ্টুডেন্ট অ্যাকটিভিস্ট মানে ক‍্যাম্পাসে লিড নেগেশিয়েটর, প্রো প‍্যালেস্টাইন। তাঁর যুক্তরাষ্ট্রে থাকার লিগ্যাল রাইট আছে। কিন্তু তাঁকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁর স্ত্রী সন্তানসম্ভাবা।

২ দিন আগে

নতুন অতিথি এবং একটা সুন্দর পৃথিবীর আশায়

নতুন অতিথি এবং একটা সুন্দর পৃথিবীর আশায়

এই মানবিকতা আমেরিকানদের জন‍্য নতুন নয়। ক‍্যালিফোর্নিয়াতে নিজেকে কখনো ইমিগ্র‍্যান্ট মনে হয়নি নিজেকে। মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়ায়। হাত বাড়িয়ে দেয় সাহায‍্যে।

১৫ দিন আগে

বাংলাদেশ, আমার প্রিয় জন্মভূমি

বাংলাদেশ, আমার প্রিয় জন্মভূমি

আমেরিকায় আসার আমার ২৫ বছর পূর্ণ হলো। সময়ের হিসাবে এটি অনেক লম্বা একটা সময়। প্রথম প্রথম এখানে এসে অনেক লাভ–লোকসানের হিসাব করতাম। একটা পর্যায়ে দেশে ফেরত যাবারও ইচ্ছা করেছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর যাওয়া হয়ে ওঠেনি। তাই জীবনকে এখানে অন্যভাবে সাজিয়ে নিয়েছি।

২২ মে ২০২৫

একাকিত্ব

একাকিত্ব

একাকিত্ব একটি জটিল ও বহুমাত্রিক মানসিক সমস্যা। এটি মানুষের মনোজগতে গভীর প্রভাব ফেলে। এটি শুধুমাত্র শারীরিক বিচ্ছিন্নতা বা একা থাকার অনুভূতি নয়, বরং মানসিক ও আবেগিক বিচ্ছিন্নতার অনুভূতিও তৈরি করে। তবে একাকিত্বকে শুধু নেতিবাচক হিসেবে দেখার কোনো কারণ নেই।

২১ মে ২০২৫