logo
প্রবাসের খবর

আফগানিস্তান, ভুটান ও ইরানসহ ৪৩টি দেশের নাগরিকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার পরিকল্পনা ট্রাম্পের

বিডিজেন ডেস্ক
বিডিজেন ডেস্ক১৫ মার্চ ২০২৫
Copied!
আফগানিস্তান, ভুটান ও ইরানসহ ৪৩টি দেশের নাগরিকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার পরিকল্পনা ট্রাম্পের
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন বিশ্বের ৪৩টি দেশের নাগরিকদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কথা ভাবছে। নতুন এ নিষেধাজ্ঞা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে আরোপিত নিষেধাজ্ঞার তুলনায় বেশি বিস্তৃত হবে। ট্রাম্প প্রশাসনের এ তৎপরতার সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের কাছ থেকে এমন তথ্য জানা গেছে।

খবর যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের।

ওই কর্মকর্তারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা এ–সংক্রান্ত একটি খসড়া তালিকা তৈরি করেছেন। চূড়ান্ত প্রস্তাবে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে।

খসড়া প্রস্তাবে যে দেশগুলোর নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তা হলো আফগানিস্তান, ভুটান, কিউবা, ইরান, লিবিয়া, উত্তর কোরিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া, ভেনেজুয়েলা, ইয়েমেন, বেলারুশ, ইরিত্রিয়া, হাইতি, লাওস, মিয়ানমার, পাকিস্তান, রাশিয়া, সিয়েরা লিওন, দক্ষিণ সুদান, তুর্কমেনিস্তান, অ্যাঙ্গোলা, অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডা, বেনিন, বুরকিনা ফাসো, কম্বোডিয়া, ক্যামেরুন, কেপ ভার্দে, চাদ, রিপাবলিক অব কঙ্গো, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, ডমিনিকা, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, গাম্বিয়া, লাইবেরিয়া, মালাউই, মালি, মৌরিতানিয়া, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, সেন্ট লুসিয়া, সাও তোমে অ্যান্ড প্রিন্সিপে, ভানুয়াতু ও জিম্বাবুয়ে।

এর মধ্যে ১১টি দেশকে ‘লাল’ তালিকায় রাখা হয়েছে। লাল তালিকার মানে হলো এসব দেশে সব ধরনের ভ্রমণ নিষিদ্ধ। অর্থাৎ এসব দেশের নাগরিকেরা কোনোভাবেই যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে পারবেন না। এই দেশগুলো হলো আফগানিস্তান, ভুটান, কিউবা, ইরান, লিবিয়া, উত্তর কোরিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া, ভেনেজুয়েলা ও ইয়েমেন।

খসড়া প্রস্তাবে ১০টি দেশকে ‘কমলা’ তালিকায় রাখা হয়েছে। কমলা তালিকার মানে হলো, এসব দেশের নাগরিকদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি থাকবে, তবে ভিসা একেবারে বন্ধ থাকবে না। এ ক্ষেত্রে ধনী ব্যবসায়ীদের ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হতে পারে। কিন্তু অভিবাসী বা পর্যটন ভিসায় কাউকে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হবে না। সেই তালিকায় থাকা নাগরিকদের ভিসা পেতে বাধ্যতামূলকভাবে সরাসরি সাক্ষাৎকারের মুখোমুখি হতে হবে।

কমলা তালিকায় থাকা এই ১০টি দেশ হলো বেলারুশ, ইরিত্রিয়া, হাইতি, লাওস, মিয়ানমার, পাকিস্তান, রাশিয়া, সিয়েরা লিওন, দক্ষিণ সুদান ও তুর্কমেনিস্তান।

খসড়া প্রস্তাবটিতে ২২টি দেশকে ‘হলুদ’ তালিকায় রাখা হয়েছে। এ তালিকায় থাকা দেশগুলোকে তাদের ত্রুটি সংশোধনের জন্য ৬০ দিন সময় দেওয়া হবে। এ সময়ের মধ্যে তারা যদি ত্রুটি কাটিয়ে উঠতে না পারে, তবে তাদের লাল বা কমলা তালিকার অন্তর্ভুক্ত করার হুমকি দেওয়া হবে।

এ তালিকায় আছে অ্যাঙ্গোলা, অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডা, বেনিন, বুরকিনা ফাসো, কম্বোডিয়া, ক্যামেরুন, কেপ ভার্দে, চাদ, রিপাবলিক অব কঙ্গো, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, ডমিনিকা, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, গাম্বিয়া, লাইবেরিয়া, মালাউই, মালি, মৌরিতানিয়া, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, সেন্ট লুসিয়া, সাও তোমে অ্যান্ড প্রিন্সিপে, ভানুয়াতু ও জিম্বাবুয়ে।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প প্রথমে দুটি ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে চাইলে আদালত তাতে বাধা দেয়। তবে পরে সুপ্রিম কোর্ট একটি পুনর্লিখিত নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য ট্রাম্প প্রশাসনকে অনুমতি দিয়েছিল। ৮টি দেশের ওপর ওই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে ৬টি দেশই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ। পরে তালিকাটি আরও বিস্তৃত হয়।

২০২১ সালে জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই ট্রাম্পের আরোপিত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহার করেন।

গত জানুয়ারিতে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সুরক্ষার স্বার্থে তিনি নিষেধাজ্ঞাগুলো নতুন করে আরোপ করবেন।

ট্রাম্প প্রশাসনের এ তৎপরতার সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কয়েক সপ্তাহ আগে পররাষ্ট্র দপ্তরের উদ্যোগে তালিকা তৈরি করা হয়। হোয়াইট হাউসে যাওয়ার পর এতে পরিবর্তন আসতে পারে।

বিভিন্ন দূতাবাস ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের আঞ্চলিক ব্যুরোর কর্মকর্তা এবং অন্য বিভাগ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নিরাপত্তাবিশেষজ্ঞরা খসড়া প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করছেন। উল্লিখিত দেশগুলোর যে ত্রুটির কথা বলা হচ্ছে, তা সঠিক কি না বা এর পেছনে নীতিগত কারণ আছে কি না, সেগুলো পুনর্বিবেচনা করবেন তারা।

গত ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন। সেখানে পররাষ্ট্র দপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে তারা যেন সেসব দেশকে চিহ্নিত করে, যেসব দেশের যাচাই-বাছাই ও স্ক্রিনিং তথ্যগুলো ত্রুটিপূর্ণ। যেন এসব দেশের নাগরিকদের প্রবেশের ওপর আংশিক বা সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা যায়।

ট্রাম্প পররাষ্ট্র দপ্তরকে ৬০ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। এ সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করে তালিকাটি হোয়াইট হাউসে জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। আগামী সপ্তাহে এ সময়সীমা শেষ হচ্ছে।

ট্রাম্পের আদেশ অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্যুরো অব কনস্যুলার অ্যাফেয়ার্সকে এ কাজে নেতৃত্ব দিতে বলা হয়। আর যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ এবং জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালকের কার্যালয়কে এ কাজে সহযোগিতা করতে বলা হয়।

বেশ কয়েকটি সংস্থার মুখপাত্র এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন কিংবা মন্তব্য জানতে চাওয়ার পর জবাব দেননি।

তবে এর আগে পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছিল, তারা ট্রাম্পের আদেশ অনুযায়ী কাজ করছে। তারা আরও বলেছিল, ‘আমরা আমাদের ভিসা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জাতীয় নিরাপত্তা ও জননিরাপত্তার সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে আমাদের দেশ ও এর নাগরিকদের রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

আরও পড়ুন

মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার জঙ্গিরা সিরিয়া ও বাংলাদেশের আইএস সেলগুলোর জন্য অর্থ সংগ্রহ করছিল

মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার জঙ্গিরা সিরিয়া ও বাংলাদেশের আইএস সেলগুলোর জন্য অর্থ সংগ্রহ করছিল

মালয়েশিয়ায় সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া একটি বাংলাদেশি জঙ্গি গোষ্ঠী সিরিয়া ও বাংলাদেশে ইসলামিক স্টেট (আইএস) সেলগুলোকে অর্থ সহায়তা দেওয়ার জন্য অর্থ সংগ্রহ করছিল। আজ শুক্রবার (৪ জুলাই) সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) দাতুক সেরি মোহাম্মদ খালিদ ইসমাইল।

২ ঘণ্টা আগে

গাজায় কার্যকর যুদ্ধবিরতির নিশ্চয়তা চায় হামাস

গাজায় কার্যকর যুদ্ধবিরতির নিশ্চয়তা চায় হামাস

যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত নতুন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গাজায় যুদ্ধের অবসান ঘটাবে—এমন নিশ্চয়তা চায় হামাস। গতকাল বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এমনটাই জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটির ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র।

৩ ঘণ্টা আগে

৬০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি ইসরায়েল, হামাস না মানলে ফল খারাপ হবে: ট্রাম্প

৬০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি ইসরায়েল, হামাস না মানলে ফল খারাপ হবে: ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি, ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে নিতে রাজি হয়েছে ইসরায়েল। পাশাপাশি, হামাস এই চুক্তি না মানলে ফলাফল আরও খারাপ হবে বলেও দাবি করেন ট্রাম্প।

২ দিন আগে