logo
প্রবাসের খবর

যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী মনোভাব ও কর্মকাণ্ড থাকলে ভিসা হবে না

বিডিজেন ডেস্ক
বিডিজেন ডেস্ক২১ আগস্ট ২০২৫
Copied!
যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী মনোভাব ও কর্মকাণ্ড থাকলে ভিসা হবে না
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস বা কাজের জন্য আবেদনকারী ব্যক্তিদের এখন থেকে ‘আমেরিকাবিরোধী মনোভাব’ খতিয়ে দেখা হবে। এর মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবেদনকারীর কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখার বিষয়টিও রয়েছে।

খবর যুক্তরাষ্ট্রের সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনের।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ এ ঘোষণা দিয়েছে। বিধিনিষেধের এই কড়াকড়ি অভিবাসনবিষয়ক অধিকারকর্মী ও আইনজীবীদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ও অভিবাসন পরিষেবার (ইউএসসিআইএস) হালনাগাদ নীতিমালায় বলা হয়েছে, অভিবাসন কর্মকর্তারা এখন আবেদনকারীদের ‘আমেরিকাবিরোধী কর্মকাণ্ড বা সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা’ বা ‘ইহুদিবিদ্বেষী কার্যকলাপের কোনো প্রমাণ’ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে পারবেন।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, অভিবাসনের আবেদন পরীক্ষা–নিরীক্ষায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যাচাই-বাছাইয়ের নিয়ম ট্রাম্প প্রশাসন কর্তৃক ইতিমধ্যে জুন মাসে চালু করা হয়েছিল। এটি এখন আরও বিস্তৃত করে ‘আমেরিকাবিরোধী কার্যকলাপের’ অনুসন্ধানের বিষয়গুলোও অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

এটি যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতিমালা কঠোর করার ক্ষেত্রে ট্রাম্প প্রশাসনের সর্বশেষ পদক্ষেপ। এ ধরনের অনেক নতুন পদক্ষেপে অভিবাসী ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে আসার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

একজন কর্মকর্তা সোমবার জানিয়েছেন, এ বছর ৬ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আর গত জুনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে, শিক্ষার্থী ভিসার আবেদনকারীদের ‘আমাদের নাগরিক, সংস্কৃতি, সরকার, প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রের মূলনীতিগুলোর প্রতি বিরূপ মনোভাব’ আছে কি না, তা দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোকে যাচাই করে দেখতে হবে।

মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইউএসসিআইএসের মুখপাত্র ম্যাথু ট্র্যাজেসার বলেন, ‘যারা এই দেশকে ঘৃণার চোখে দেখে এবং আমেরিকাবিরোধী মতাদর্শ প্রচার করে, তাদেরকে আমেরিকার সুবিধা দেওয়া উচিত নয়।’

ম্যাথু ট্র্যাজেসার আরও বলেন, আমেরিকাবিরোধী মনোভাব নির্মূল করতে নীতিমালা ও পদ্ধতি বাস্তবায়নে অভিবাসন সংস্থা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং যত দূর সম্ভব পূর্ণ মাত্রায় কঠোর পরীক্ষা–নিরীক্ষা ও যাচাই-বাছাইয়ের পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়নকে সর্বাত্মকভাবে সমর্থন করে।

‘আমেরিকাবিরোধী মনোভাব’ নিয়ে ধোঁয়াশা

হালনাগাদ নীতিমালায় ‘আমেরিকাবিরোধী মনোভাবের’ কোনো সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা দেওয়া হয়নি। শুধু বলা হয়েছে, এর মধ্যে তারাই অন্তর্ভুক্ত, যারা ‘ইহুদিবিদ্বেষী সন্ত্রাসবাদ, ইহুদিবিদ্বেষী সন্ত্রাসী সংগঠন এবং ইহুদিবিদ্বেষী মতাদর্শ’ সমর্থন করে।

তবে এতে ‘আমেরিকাবিরোধী’ মতাদর্শের উদাহরণ হিসেবে ১৯৫২ সালের অভিবাসন ও জাতীয়তা আইনের (আইএনএ) একটি ধারার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। একে অভিবাসনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামগ্রিক আইনি কাঠামো হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই ধারায় নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তিকে নাগরিকত্ব প্রাপ্তি থেকে নিষিদ্ধ করা হয়। এসব ব্যক্তির মধ্যে রয়েছেন বিভিন্ন কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য; যারা ‘বৈশ্বিক কমিউনিজমের’ পক্ষে কথা বলেন; যারা ‘রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার মৌলিক ধারণার’ বিরোধিতা করে লেখালেখি করেন বা এ ধরনের জিনিসপত্র প্রচার করেন, অথবা যারা বলপ্রয়োগ বা সহিংসতার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারকে উৎখাত করতে ইচ্ছুক।

এই ঘোষণা তাৎক্ষণিকভাবে বিভ্রান্তি ও উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। অনলাইন ফোরামগুলোতে বিতর্ক শুরু হয়েছে, ঠিক কোন বিষয়টি ‘আমেরিকাবিরোধী’ হিসেবে গণ্য হবে। অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, অস্পষ্ট শব্দচয়ন এবং সুস্পষ্ট সংজ্ঞা না থাকায় বাস্তবে হুমকি থাকুক বা না থাকুক, অভিবাসন কর্মকর্তারা অভিবাসনের বিষয়ে আরও কঠোর হওয়ার ক্ষমতা পাবেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম রেডিট–এ অভিবাসনবিষয়ক একটি পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘ইরানে সাম্প্রতিক হামলার বিরোধিতা করা বা গাজায় যুদ্ধবিরতির পক্ষে থাকাটা কি আমেরিকাবিরোধী বা ইহুদিবিদ্বেষী? যদি আপনি ব্যক্তিগতভাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে পছন্দ না করেন অথবা সাউথ পার্কের (অ্যানিমেটেড টিভি সিরিজ) সাম্প্রতিক পর্বগুলো শেয়ার করেন, যেখানে তাঁকে এবং (হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি) নোয়েমকে নিয়ে মজা করা হয়েছে, তাহলে কি সেটা “আমেরিকাবিরোধী” হবে?’

অভিবাসীদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার আমেরিকান ইমিগ্রেশন কাউন্সিলের জ্যেষ্ঠ ফেলো অ্যারন রেইচলিন-মেলনিক এক্সে এক পোস্টে লেখেন, ‘অভিবাসন আইনে (আমেরিকাবিরোধী) পরিভাষাটি ব্যবহারের কোনো পূর্ব নজির নেই এবং এর সংজ্ঞা সম্পূর্ণভাবে ট্রাম্পের (প্রশাসনের) ওপর নির্ভরশীল।’

অ্যারন আরও বলেন, এই পদক্ষেপ ম্যাকার্থিজমের কথা মনে করিয়ে দেয়, ১৯৫০-এর দশকের সেই সময়কাল ‘রেড স্কয়ার’ নামেও পরিচিত। ওই সময় কমিউনিজম এবং আমেরিকার প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর এর প্রভাব নিয়ে জনমনে ব্যাপক আতঙ্কের সুযোগে বামপন্থীদের বিচারের মুখোমুখি করত সরকার।

ব্রিগহাম ইয়াং ইউনিভার্সিটির সমাজবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক ইয়েনি লিলি লোপেজ একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার কাছে সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, তারা এই সিদ্ধান্তগুলো নেওয়ার ক্ষেত্রে গৎবাঁধা বিশ্বাস ও ধারণা এবং প্রচ্ছন্ন পক্ষপাতকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। এটা সত্যিই উদ্বেগজনক।’

এই সহযোগী অধ্যাপক আরও বলেন, ‘এসব কিছুর মানে হলো আপনি আমাদের মানদণ্ড পূরণ করছেন, সেটা প্রমাণের জন্য আপনাকে আরও অনেক কাজ করতে হবে।’

আরও পড়ুন

সিডনিতে চট্টগ্রাম ক্লাব অস্ট্রেলিয়ার সফল মেজবান পরবর্তী মিলনমেলা

সিডনিতে চট্টগ্রাম ক্লাব অস্ট্রেলিয়ার সফল মেজবান পরবর্তী মিলনমেলা

অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের সিডনিতে চট্টগ্রাম ক্লাব অস্ট্রেলিয়ার (সিসিএ) উদ্যোগে ‘মেজবান ২০২৫’-এর সফলতা উদ্‌যাপন উপলক্ষে এক বিশেষ পারিবারিক মধ্যাহ্নভোজ ও মিলনমেলার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

১ দিন আগে

প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন: জেদ্দায় প্রবাসীদের আগ্রহ কম, প্রক্রিয়া জটিল বলছেন অনেকেই

প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন: জেদ্দায় প্রবাসীদের আগ্রহ কম, প্রক্রিয়া জটিল বলছেন অনেকেই

সৌদি আরবের বন্দর নগরী জেদ্দায় এই ঐতিহাসিক উদ্যোগের প্রতি প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাড়া এখনো আশানুরূপ নয়। মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে প্রায় ৩০ লাখ বাংলাদেশি কর্মরত আছেন, তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ২ হাজার ৫০০ জন ভোটার হিসেবে নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন।

২ দিন আগে

বাংলাদেশ–বাহরাইন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও সহযোগিতা জোরদারে ফলপ্রসূ আলোচনা

বাংলাদেশ–বাহরাইন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও সহযোগিতা জোরদারে ফলপ্রসূ আলোচনা

ড. আসিফ নজরুল তার আলোচনার শুরুতে বাহরাইন ও বাংলাদেশের মাঝে বন্ধুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক সর্ম্পকের কথা তুলে ধরেন। তিনি দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোকপাত করেন। বিশেষ করে বাহরাইনে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকা শ্রমবাজার ও ভিসা উন্মুক্ত করে দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান তিনি।

৩ দিন আগে

প্রবাসীদের দৃষ্টিতে এশিয়ার সেরা ৩ দেশ

প্রবাসীদের দৃষ্টিতে এশিয়ার সেরা ৩ দেশ

এ বছর সূচকে চীনের অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো। ২০২৪ সালে ১৯তম অবস্থান থেকে উঠে এসে এবার ৬ষ্ঠ হয়েছে দেশটি। অন্যদিকে মালয়েশিয়া প্রথমবারের মতো শীর্ষ ১০-এ প্রবেশ করেছে। ভিয়েতনাম রয়েছে ৫ম স্থানে।

৫ দিন আগে