logo
মতামত

সিলেটের সাদা পাথর গায়েব হলো কীভাবে?

মঞ্জুর চৌধুরী১৬ আগস্ট ২০২৫
Copied!
সিলেটের সাদা পাথর গায়েব হলো কীভাবে?
ছবি: সংগৃহীত

ঘটনাটা এক বড় ভাইয়ের কাছ থেকে শোনা। 

আমেরিকার এক স্টেটে (রাজ্য) এক বাঙাল থাকতে এসেছে। এসে রেস্টুরেন্টে চাকরি নিয়েছে। মাঝে মাঝে পার্কে বেড়াতে যায়। পার্কে রাজহাঁস ঘুরে বেড়ায়। দুনিয়ার অন্য দেশের দর্শনার্থীরা হাঁস দেখে মুগ্ধ হয়, ছবি তোলে।

বাঙালের মনে প্রশ্ন আসে, ‘একটি যদি ধরে নিয়ে খেয়ে ফেলি, সমস্যা কী? কেউতো দেখছে না। আর দেখলেই বা কী? এগুলোতো কারওর বাড়ির পোষা হাঁস না। সরকারি মাল, দরিয়ামে ডাল!’ 

একদিন বাঙাল সুযোগ বুঝে আস্ত একটা রাজহাঁস ধরে বাড়িতে নিয়ে এল। ‘বিসমিল্লাহ’ বলে জবাই করল। কোনো প্রাণীকে বিসমিল্লাহ বলে জবাই না করলে সেটা আবার হালাল হয়না। বিদেশে এসে ‘হারাম’ খেলে ধর্মভ্রষ্ট হয়ে যাবে। চুরির মাল? ইয়ে, এত গভীরে চিন্তা করবেন না! ঘটনায় মনোযোগ দিন। 

ধুয়ে মুছে বেশি বেশি মশলা দিয়ে অনেকক্ষণ ধরে কষিয়ে রান্না করে তৃপ্তি সহকারে কয়েক দিন খেল। 

প্রথম হাঁসের মাংস খাওয়া শেষ হলে আরেকটা ধরে আনল। পার্কে হাঁসের অভাব নেই। ফ্রিতে রাজহাঁস খেতে কার না ভালো লাগে? বাইরে থেকে কিনতে গেলে ১০০ ডলারতো মিনিমাম যাবেই। 

এইভাবে ওই বাঙাল কিছুদিন নিজে খেল। 

তারপরে একদিন সে যে রেস্টুরেন্টে কাজ করত, সেখানে বাঙাল কলিগদের বলল রাজহাঁস খাবে কি না।

ভুনা রাজহাঁসের মাংস কোন বাঙালি না করবে? ওরাও খেল। 
কয়েক দিন এইভাবে খাওয়ার পরে মাথায় এল ব্যবসায়িক চিন্তা। দেশের সবাই উদ্যোক্তা হয়ে যাচ্ছে, আমি মার্কিন মুল্লুকে এসে কতদিন রেস্টুরেন্টের ডেকচি পাতিল মাজব? রাজহাঁসের মাংস বিক্রি করব। তা থেকে যা টাকা আসবে, তা জমিয়ে আমি নিজের রেস্টুরেন্ট খুলব। তারপরে সেই রেস্টুরেন্টের লাভের টাকায় আরেকটা রেস্টুরেন্ট। তারপর আরেকটা। এইভাবে গোটা আমেরিকা ছাড়িয়ে বিশ্বময় ছড়িয়ে যাবে আমার রাজহাঁসের রেস্টুরেন্ট। কেএফসির বুড়ার মতোন আমার ছবিও বিলবোর্ডের শোভা বাড়াবে। হলিউডের সেলিব্রেটি তরুণীরা গাড়ির কাচ নামিয়ে সেই বিলবোর্ডের ছবি দেখে বলবে ‘ওয়াও’ কত হ্যান্ডসাম এই যুবক! এ যদি আমার জীবনে চলে আসত, তাহলে লাইফে আর কিছু চাওয়ার থাকবে না।;

ওই বাঙালকে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আত্মীয়-ঘটকেরা তার মোবাইল ফোনে কল করবে, কিন্তু সে ব্যস্ততার কারণে ধরবে না। 

রেস্টুরেন্টে কাস্টমার আসে, তাদেরকে সে বলে, ‘ভুনা রাজহাঁস খাবেন?’

কাস্টমার জিভে জল এনে বলে, ‘মেনুতেতো দেখছি না!’

‘ওটা ইস্পিশাল আইটেম। খাইলে বলেন, এনে দেব। দাম এত।

কাস্টমার ভুনা রাজহাঁস খায়। 

ব্যবসা চলতে থাকে। স্বপ্নের পথে ধাপে ধাপে এগিয়ে যেতে থাকে সে। 

এদিকে পার্কে রেঞ্জার এক সময় লক্ষ্য করে রাজহাঁসের সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে কমে গেছে। তারা তদন্তে নামে এবং চোরচক্রকে গ্রেপ্তার করে। 

সেদিনই সেই বাঙালের মন থেকে আমেরিকার ওপর থেকে সব বিশ্বাস, ভালোবাসা, ভক্তি গায়েব হয়ে যায়। কিসের স্বপ্নের দেশ? কিসের দুনিয়ার সেরা অর্থনীতি? সামান্য রাজহাঁস খাওয়ার জন্য যে সরকার এত ঝামেলা করে, এর চেয়ে ছোটলোক দুনিয়ায় আর কেউ আছে?

আর আপনারা অবাক হচ্ছেন সিলেটের সাদা পাথর গায়েব হলো কীভাবে?

আরও দেখুন

অনন‍্য সাধারণ এক ব্যক্তিত্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা গামা আব্দুল কাদির

অনন‍্য সাধারণ এক ব্যক্তিত্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা গামা আব্দুল কাদির

গামা আব্দুল কাদির সুদীর্ঘ প্রবাস জীবনে বাংলাদেশ অ্যাসেসিয়েশনের পাচঁবার সভাপতি এবং তিনবার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি এখনো এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বঙ্গবন্ধু পরিষদ, অস্ট্রেলিয়া এবং আওয়ামী লীগের অস্ট্রেলিয়া শাখারও প্রধান উপদেষ্টা।

৩ দিন আগে

পরিবার থেকে রাজনীতি: বাংলাদেশের সামাজিক ও নৈতিক চিত্র

পরিবার থেকে রাজনীতি: বাংলাদেশের সামাজিক ও নৈতিক চিত্র

বাংলাদেশে রাজনৈতিক নেতাদের একমাত্র যোগ্যতা—অসততা ও মিথ্যাচার। আর কর্মীদের যোগ্যতা—তোষামোদ। এক কঠিন সত্য হলো—এই দেশে কোনো নেতা কখনোই অযোগ্য হয় না, দুর্নীতি যতই করুক।

৩ দিন আগে

সততার দুর্ভিক্ষে চরিত্রের ঐশ্বর্য

সততার দুর্ভিক্ষে চরিত্রের ঐশ্বর্য

সমস্যা সম্পদ নয়—সমস্যা চরিত্রের, মানসিকতার, আর সৎ মানুষের কণ্ঠরোধের। রাজনৈতিক নেতাদের ওলি-আউলিয়া ভাবার সুযোগ নেই। সভ্য দেশে একটি গুরুতর অপরাধই তাদের রাজনৈতিক জীবনের ইতি টানে। আমাদের দেশে এটিই সবচেয়ে বড় ঘাটতি।

৩ দিন আগে

গণতন্ত্রের অপমৃত্যু এবং জনগণের নবজাগরণের অনিবার্য ডাক

গণতন্ত্রের অপমৃত্যু এবং জনগণের নবজাগরণের অনিবার্য ডাক

আজও বহু দেশে স্বৈরাচারী শাসন টিকে আছে; পরিবারতন্ত্র ও একনায়কতন্ত্র আরও গাঢ় হয়েছে। শাসন আর শোষণ যেন একই স্রোতে মিশে গেছে। বক্তব্যের স্বাধীনতা প্রতিনিয়ত আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে, ভিন্নমত প্রকাশের অধিকার পরিণত হয়েছে নিছক প্রহসনে।

৬ দিন আগে