logo
প্রবাসের খবর

কাশ্মীরে পর্যটকদের গুলি করার আগের ঘটনা জানাল প্রত্যক্ষদর্শীরা

বিডিজেন ডেস্ক
বিডিজেন ডেস্ক১২ দিন আগে
Copied!
কাশ্মীরে পর্যটকদের গুলি করার আগের ঘটনা জানাল প্রত্যক্ষদর্শীরা
কাশ্মীরে হামলার ঘটনায় নিহতদের জন্য শোক। ফাইল ছবি: রয়টার্স

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর হামলা করার আগে পুরুষদের নারী ও শিশুদের কাছ থেকে আলাদা করেছিল সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা। এরপর পুরুষদের তাঁদের নাম জিজ্ঞাসা এবং খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তা এবং হামলার ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া মানুষেরা এ কথা জানিয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স শ্রীনগন থেকে এ খবর দিয়েছে।

গত মঙ্গলবার পহেলগামের বৈসরান এলাকায় হামলার সময় ঘটনাস্থলে প্রায় এক হাজার পর্যটক এবং তাদের নানা ধরনের সেবাদানকারী ৩০০ স্থানীয় ব্যক্তি উপস্থিত ছিল। ঘন পাইনবনঘেরা সবুজ পাহাড়ি তৃণভূমির জন্য বৈসরান ‘মিনি সুইজারল্যান্ড’ নামে পরিচিত।

৩ জন বন্দুকধারী এই হামলা চালিয়েছে। ভারতে গত প্রায় দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলার ঘটনা এটি।

একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তৃণভূমির আশপাশে ঘোরাফেরা করছিল। তারা প্রায় ৬০টি গুলি চালায়। তবে তারা নারী ও শিশুদের ওপর হামলা করেননি। গণমাধ্যমে কথা বলার অনুমতি না থাকায় ওই কর্মকর্তা নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি। হামলার ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া মানুষের সঙ্গে আলাপের মাধ্যমে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তিনি এ কথা বলেছেন।

হামলায় বাবা ও চাচাকে হারিয়েছেন ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা আসাবরী জগদালে। স্থানীয় গণমাধ্যমকে আসাবরী বলেন, গুলি শুরু হলে তিনি ও তাঁর পরিবার অন্য পর্যটকদের সঙ্গে কাছাকাছি একটি তাঁবুতে লুকিয়ে পড়েছিলেন।

আসাবরী বলেন, তাঁর বাবার পরিচয় নিশ্চিত হয়ে সন্ত্রাসীরা তাঁর মাথায়, কানের পেছনে এবং পিঠে মোট তিনটি গুলি চালায়। তাঁর কাকা তখন তাঁর পাশেই ছিলেন। সন্ত্রাসীরা তাঁর ওপর ৪ থেকে ৫টি গুলি চালায়।

আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দু শিক্ষক দেবাশীষ ভট্টাচার্য ওই হামলায় বেঁচে যান। তিনি বলেন, বন্দুকধারীরা চলে যাওয়ার পর তাঁরা পালিয়ে যান এবং প্রাণে বাঁচতে প্রায় দুই ঘণ্টা জঙ্গলের ভেতর দিয়ে হেঁটেছেন।

নিরাপত্তাবাহিনীর একটি সূত্র বলেছে, হামলাকারী ব্যক্তিরা ঐতিহ্যবাহী লম্বা কুর্তা ও ঢিলে পায়জামা পরা ছিল এবং তাদের একজনের শরীরে একটি ক্যামেরা লাগানো ছিল। জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র বৈসরানের ৩টি স্থানে তারা গুলি চালায়।

নিরাপত্তা সূত্র বলছে, কিছু পর্যটককে মাঠে অবস্থিত খাবারের দোকানগুলোতে গুলি করা হয়েছে। আবার কিছু মানুষকে জঙ্গলের ভেতর নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয়।

হিমালয়ের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পহেলগাম থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরত্বে বৈসরানের অবস্থান। সেখানে পৌঁছাতে পর্যটকদের পায়ে হেঁটে যেতে হয় অথবা টাট্টু ঘোড়া ভাড়া করতে হয়।

এই জায়গায় জিপলাইনিং ও জর্বিংয়ের মতো রোমাঞ্চকর আয়োজনগুলো আছে। এটি তুলিয়ান হ্রদের দিকে যাত্রারত পর্বতারোহীদের জন্য ক্যাম্পসাইট হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। বৈসরান থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে তুলিয়ান হ্রদের অবস্থান।

প্রশান্ত সাতপথি, তাঁর স্ত্রী ও ৯ বছর বয়সী ছেলে পূর্বাঞ্চলীয় ওড়িশা রাজ্য থেকে বৈসরানে ভ্রমণে এসেছিলেন। এটি ছিল তাঁদের চার দিনের সফরের শেষ দিন।
প্রশান্তের স্ত্রী প্রিয়দর্শিনী স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, একটি জিপলাইন রাইড শেষ করা মাত্রই একটি গুলি এসে সাতপথির মাথায় লাগে। তিনি বলেন, ‘তিনি আমার চোখের সামনেই লুটিয়ে পড়েন।’

হামলায় নিহত ২৬ জনের একজন পহেলগামের টাট্টু ঘোড়াচালক আদিল হুসেন শাহ। জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ গত বুধবার শাহের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা শুনেছি তিনি সাধারণভাবে মারা যাননি, তিনি সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন… তিনি হামলা থামানোর চেষ্টা করেছিলেন, হয়তো বন্দুকটি কেড়ে নেওয়ারও চেষ্টা করেছিলেন, সেই কারণেই তাঁকে নিশানা করা হয়।’

আরও পড়ুন

পাল্টাপাল্টি হামলার জেরে ভারত–পাকিস্তানে বহু ফ্লাইট বাতিল

পাল্টাপাল্টি হামলার জেরে ভারত–পাকিস্তানে বহু ফ্লাইট বাতিল

বিবিসি জানিয়েছে, বেশ কয়েকটি ভারতীয় উড়োজাহাজ সংস্থা ভারত–নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরে তাদের ফ্লাইট চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে। রাজস্থান ও পাঞ্জাবসহ সীমান্তবর্তী কয়েকটি নগরেও উড়োজাহাজ চলাচল বাতিল করা হয়েছে।

১১ মিনিট আগে

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা

ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর পাকিস্তানের জনবহুল প্রদেশ পাঞ্জাবে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। হাসপাতালসহ জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো উচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।

৪১ মিনিট আগে

ভারতের হামলায় পাকিস্তানে নিহত বেড়ে ২৬, আহত ৪৬

ভারতের হামলায় পাকিস্তানে নিহত বেড়ে ২৬, আহত ৪৬

পাকিস্তানের ৬টি জায়গায় ভারতের হামলায় নিহত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে ২৬ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছে ৪৬ জন। আজ বুধবার (৭ মে) স্থানীয় সময় সকাল ১০টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক আহমেদ শরিফ চৌধুরী এসব তথ্য জানিয়েছেন।

১ ঘণ্টা আগে

ভারত-পাকিস্তানকে সংযম দেখানোর আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

ভারত-পাকিস্তানকে সংযম দেখানোর আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার পর অনুমেয়ই ছিল যে, ভারত-পাকিস্তান সংঘাত অনিবার্য। তবে সেটা কখন ঘটবে তা কেউই অনুমান করতে পারছিলেন না। অবশেষে শুরু হয়ে গেছে চিরবৈরী দুই দেশের মধ্যকার সংঘর্ষ। জাতিসংঘের মহাসচিব এই সংঘর্ষ শুরুর দুই দেশকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

৫ ঘণ্টা আগে