সিএনএনের বিশ্লেষণ
বিডিজেন ডেস্ক
বেন ওয়েডম্যান
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু গত ২৮ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করেছেন, হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহকে হত্যা করা ‘আগামী কয়েক বছর ধরে এই অঞ্চলে ক্ষমতার ভারসাম্য পরিবর্তনের দিকে একটি পদক্ষেপ’।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী একে মধ্যপ্রাচ্যে ক্ষমতার মৌলিক পুনর্গঠনের জন্য একটি সুযোগ হিসেবে দেখেছেন। তার ধারনা, হিজবুল্লাহ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারপরেও পূর্ণ বিজয় এখনো অধরা। বিষয়টি এমন, যারা যা চায় তা না পেয়ে প্রায়শই অনুশোচনা নিয়ে বেঁচে থাকে।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ইসরায়েল লেবাননে ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহকে একের পর এক আঘাত করে চলেছে। এই আঘাত সরাসরি শারীরিক। প্রথমে পেজার ও ওয়াকিটকি বিস্ফোরণ, তারপর দক্ষিণ বৈরুতে বিশাল বিমান হামলা, যাতে সিনিয়র কমান্ডার ইব্রাহিম আকিলসহ কমপক্ষে দুই ডজন নেতা-কর্মী নিহত হন। তিন দিন পরে শুরু হয় নৃশংস বোমা হামলা। গত ২৭ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ নাসরাল্লাহ বোমা হামলায় নিহত হন। এই হামলায় একাধিক ভবন গুড়িয়ে গেছে। হিজবুল্লাহর জ্যেষ্ঠ নেতৃত্ব প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
তবুও সাম্প্রতিক ইতিহাস শুধুমাত্র ইসরায়েলি নেতাদের জন্য তিক্ত শিক্ষাই দেয়, বিশেষ করে যারা লেবানন ও সাধারণভাবে মধ্যপ্রাচ্যে বড়মাপের পরিবর্তনের আশায় মজে আছেন।
ইসরায়েল পিএলও বা প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনকে নির্মুল করার জন্য ১৯৮২ সালের জুন মাসে লেবাননে আক্রমণ করে। এর বাইরে তারা বৈরুতে একটি নমনীয় খ্রিস্টান-প্রধান সরকার প্রতিষ্ঠা এবং সিরিয়ার বাহিনীকে তাড়িয়ে দেওয়ার আশা করেছিল।
এই তিনটিতেই তারা ব্যর্থ হয়েছে। হ্যাঁ, লেবাননে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলিকে আমেরিকা-মধ্যস্ততায় স্বাক্ষরিত চুক্তির অধীনে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। তাদের তিউনিসিয়া, ইয়েমেন ও অন্যত্র নির্বাসনে পাঠান হয়। কিন্তু পিএলওর পাশাপাশি ফিলিস্তিনি জাতীয় আকাঙ্খাকে ঝেড়ে ফেলার লক্ষ্য ব্যর্থ হয়। পাঁচ বছর পর প্রথম ফিলিস্তিনি ইন্তিফাদা বা বিদ্রোহ গাজায় শুরু হয় এবং পশ্চিম তীরে ছড়িয়ে পড়ে। আজ ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলি দখলদারিত্ব প্রত্যাখ্যানের ক্ষেত্রে একই রকম অটল ও অস্থির।
লেবাননে হামলার সময় ইসরায়েলের প্রধান মিত্র ছিলেন বশির আল-গেমায়েল, একজন ম্যারোনাইট খ্রিষ্টান মিলিশিয়া নেতা, যিনি আইনসভায়ও নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি দায়িত্ব নেওয়ার আগে পূর্ব বৈরুতে এক বিস্ফোরণে নিহত হন। তার স্থলাভিষিক্ত হন নিজের ভাই আমিন। আমিনের নেতৃত্বে এবং সক্রিয় আমেরিকান সম্পৃক্ততা ও উৎসাহে ১৯৮৩ সালের মে মাসে লেবানন ও ইসরায়েল স্বাভাবিক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার জন্য চুক্তি সই করে। তীব্র বিরোধিতার মুখে পরের ফেব্রুয়ারিতে সরকারের পতন ঘটে এবং দ্রুত চুক্তিটি বাতিল করা হয়।
আমেরিকা ১৯৮২ সালের সেপ্টেম্বরের সাবরা-শাতিলা গণহত্যার পরে বৈরুতে সৈন্য মোতায়েন করেছিল। ১৯৮৩ সালের অক্টোবরে মার্কিন মেরিন ও ফরাসি সেনা থাকার পরেও তাদের দূতাবাস দুবার বোমা হামলা হয়। এরপর সেনা প্রত্যাহারের ঘটনা ঘটে।
এদিকে লেবাননের গৃহযুদ্ধ পুনরায় শুরু হয় এবং ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে তা চলে।
সিরিয়ার বাহিনী, যারা ১৯৭৬ সালে আরব লীগের ম্যান্ডেটের অধীনে একটি ‘প্রতিরোধ বাহিনী’ হিসেবে লেবাননে প্রবেশ করে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রফিক আল-হারিরির হত্যাকাণ্ডের পর ২০০৫ সালে তারা লেবানন ছেড়ে চলে যায়।
সম্ভবত ১৯৮২ সালে লেবাননে ইসরায়েলি আগ্রাসনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ফলাফল ছিল হিজবুল্লাহর জন্ম। যারা নিরলসভাবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ পরিচালনা করে চলেছে। আর তাদের কারণে ইসরায়েল একতরফাভাবে দক্ষিণ লেবানন থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছিল। উল্লেখ্য হিজবুল্লাহই প্রথম এবং একমাত্র একটি আরব সামরিক বাহিনী যারা ইসরায়েলকে আরব ভূমি থেকে সফলভাবে পিছু হটতে বাধ্য করে। ইরানের সহায়তায় এই নতুন দলটি প্রমাণ করে ফিলিস্তিনি জঙ্গিদের লেবানন থেকে সফলভাবে বিতাড়িত করার চেয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তারা অনেক বেশি প্রাণঘাতী ও কার্যকর।
হিজবুল্লাহ ২০০৬ সালের যুদ্ধেও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে গিয়েছিল এবং পরবর্তী বছরগুলোতে ইরানের উল্লেখযোগ্য সাহায্যে শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
আজ হিজবুল্লাহ পঙ্গু ও বিশৃঙ্খল অবস্থায় রয়েছে। স্পষ্টতই ইসরায়েলি গোয়েন্দারা তাদের অন্দরে ঢুকে পড়ার কারণে। তবুও তাদের নিঃশেষ হওয়ার বয়ান লেখার সময় এখনো আসেনি।
লেবানন ও ইসরায়েলের বাইরেও ২০০৩ সালে মার্কিন নেতৃত্বে ইরাক আক্রমণের উদাহরণ রয়েছে, যা নির্মম অমানবিকতার এক বিরাট পাঠ। যখন সাদ্দামের সেনাবাহিনী ভেঙে পড়ে এবং মার্কিন সৈন্যরা বাগদাদে ছুটে যায়, তখন জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রশাসন কল্পনা করেছিল যে, সাদ্দাম হোসেনের পতন তেহরান ও দামেস্কের শাসকদের পতন ঘটাবে এবং সমগ্র অঞ্চল জুড়ে উদার গণতন্ত্রের ফুল ফোটাবে।
পরিবর্তে ইরাকের মার্কিন দখলদারিত্ব সাম্প্রদায়িক সহিংসতার রক্তস্নানে পরিণত হয়। সেখানে আমেরিকাকে রক্ত ও অর্থ দিয়ে এর মূল্য চোকাতে হয়েছে। তবে ইরাকের জনগণ মূল্য দিতে হয়েছে আরও বেশি। সাদ্দাম হোসেনের হত্যাকাণ্ড ইরানকে বাগদাদের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের কেন্দ্রস্থলে প্রভাব বিস্তারের সুযোগ করে দেয়। আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনের ফলে ভেঙে পড়া আল-কায়েদা ইরাকে পুনর্জন্ম লাভ করে এবং শেষ পর্যন্ত সিরিয়া ও ইরাকে ইসলামিক স্টেটে পরিণত হয়।
আমি যখন এটি লিখছি, তখন বৈরুতের বিধ্বস্ত দক্ষিণ শহরতলির ওপর থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখতে পাচ্ছি। আর সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিৎসা রাইসের কথা মনে পড়ছে। তিনি ২০০৬ সালে ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধের সময় বলেছিলেন, সমস্ত রক্তপাত ও ধ্বংস আমরা তখন প্রত্যক্ষ করছিলাম ‘নতুন মধ্যপ্রাচ্যের জন্ম যন্ত্রণা’র মধ্যে।
যারা একটি নতুন ভোর, একটি নতুন মধ্যপ্রাচ্যের জন্ম, এই অঞ্চলে ক্ষমতার একটি নতুন ভারসাম্য–এসব প্রতিশ্রুতি দেয় তাদের থেকে সাবধান। লেবানন গোটা মধ্যপ্রাচ্যের মাইক্রোজম হিসেবে সবাইকে ভুল পথে চালিত করতে পারে। মনে রাখতে হবে, লেবানন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিণতির একটি দেশ।
(সিএনএন-এর সৌজন্যে প্রকাশিত। ইংরেজি থেকে অনূদিত।)
বেন ওয়েডম্যান
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু গত ২৮ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করেছেন, হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহকে হত্যা করা ‘আগামী কয়েক বছর ধরে এই অঞ্চলে ক্ষমতার ভারসাম্য পরিবর্তনের দিকে একটি পদক্ষেপ’।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী একে মধ্যপ্রাচ্যে ক্ষমতার মৌলিক পুনর্গঠনের জন্য একটি সুযোগ হিসেবে দেখেছেন। তার ধারনা, হিজবুল্লাহ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারপরেও পূর্ণ বিজয় এখনো অধরা। বিষয়টি এমন, যারা যা চায় তা না পেয়ে প্রায়শই অনুশোচনা নিয়ে বেঁচে থাকে।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ইসরায়েল লেবাননে ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহকে একের পর এক আঘাত করে চলেছে। এই আঘাত সরাসরি শারীরিক। প্রথমে পেজার ও ওয়াকিটকি বিস্ফোরণ, তারপর দক্ষিণ বৈরুতে বিশাল বিমান হামলা, যাতে সিনিয়র কমান্ডার ইব্রাহিম আকিলসহ কমপক্ষে দুই ডজন নেতা-কর্মী নিহত হন। তিন দিন পরে শুরু হয় নৃশংস বোমা হামলা। গত ২৭ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ নাসরাল্লাহ বোমা হামলায় নিহত হন। এই হামলায় একাধিক ভবন গুড়িয়ে গেছে। হিজবুল্লাহর জ্যেষ্ঠ নেতৃত্ব প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
তবুও সাম্প্রতিক ইতিহাস শুধুমাত্র ইসরায়েলি নেতাদের জন্য তিক্ত শিক্ষাই দেয়, বিশেষ করে যারা লেবানন ও সাধারণভাবে মধ্যপ্রাচ্যে বড়মাপের পরিবর্তনের আশায় মজে আছেন।
ইসরায়েল পিএলও বা প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনকে নির্মুল করার জন্য ১৯৮২ সালের জুন মাসে লেবাননে আক্রমণ করে। এর বাইরে তারা বৈরুতে একটি নমনীয় খ্রিস্টান-প্রধান সরকার প্রতিষ্ঠা এবং সিরিয়ার বাহিনীকে তাড়িয়ে দেওয়ার আশা করেছিল।
এই তিনটিতেই তারা ব্যর্থ হয়েছে। হ্যাঁ, লেবাননে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলিকে আমেরিকা-মধ্যস্ততায় স্বাক্ষরিত চুক্তির অধীনে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। তাদের তিউনিসিয়া, ইয়েমেন ও অন্যত্র নির্বাসনে পাঠান হয়। কিন্তু পিএলওর পাশাপাশি ফিলিস্তিনি জাতীয় আকাঙ্খাকে ঝেড়ে ফেলার লক্ষ্য ব্যর্থ হয়। পাঁচ বছর পর প্রথম ফিলিস্তিনি ইন্তিফাদা বা বিদ্রোহ গাজায় শুরু হয় এবং পশ্চিম তীরে ছড়িয়ে পড়ে। আজ ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলি দখলদারিত্ব প্রত্যাখ্যানের ক্ষেত্রে একই রকম অটল ও অস্থির।
লেবাননে হামলার সময় ইসরায়েলের প্রধান মিত্র ছিলেন বশির আল-গেমায়েল, একজন ম্যারোনাইট খ্রিষ্টান মিলিশিয়া নেতা, যিনি আইনসভায়ও নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি দায়িত্ব নেওয়ার আগে পূর্ব বৈরুতে এক বিস্ফোরণে নিহত হন। তার স্থলাভিষিক্ত হন নিজের ভাই আমিন। আমিনের নেতৃত্বে এবং সক্রিয় আমেরিকান সম্পৃক্ততা ও উৎসাহে ১৯৮৩ সালের মে মাসে লেবানন ও ইসরায়েল স্বাভাবিক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার জন্য চুক্তি সই করে। তীব্র বিরোধিতার মুখে পরের ফেব্রুয়ারিতে সরকারের পতন ঘটে এবং দ্রুত চুক্তিটি বাতিল করা হয়।
আমেরিকা ১৯৮২ সালের সেপ্টেম্বরের সাবরা-শাতিলা গণহত্যার পরে বৈরুতে সৈন্য মোতায়েন করেছিল। ১৯৮৩ সালের অক্টোবরে মার্কিন মেরিন ও ফরাসি সেনা থাকার পরেও তাদের দূতাবাস দুবার বোমা হামলা হয়। এরপর সেনা প্রত্যাহারের ঘটনা ঘটে।
এদিকে লেবাননের গৃহযুদ্ধ পুনরায় শুরু হয় এবং ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে তা চলে।
সিরিয়ার বাহিনী, যারা ১৯৭৬ সালে আরব লীগের ম্যান্ডেটের অধীনে একটি ‘প্রতিরোধ বাহিনী’ হিসেবে লেবাননে প্রবেশ করে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রফিক আল-হারিরির হত্যাকাণ্ডের পর ২০০৫ সালে তারা লেবানন ছেড়ে চলে যায়।
সম্ভবত ১৯৮২ সালে লেবাননে ইসরায়েলি আগ্রাসনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ফলাফল ছিল হিজবুল্লাহর জন্ম। যারা নিরলসভাবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ পরিচালনা করে চলেছে। আর তাদের কারণে ইসরায়েল একতরফাভাবে দক্ষিণ লেবানন থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছিল। উল্লেখ্য হিজবুল্লাহই প্রথম এবং একমাত্র একটি আরব সামরিক বাহিনী যারা ইসরায়েলকে আরব ভূমি থেকে সফলভাবে পিছু হটতে বাধ্য করে। ইরানের সহায়তায় এই নতুন দলটি প্রমাণ করে ফিলিস্তিনি জঙ্গিদের লেবানন থেকে সফলভাবে বিতাড়িত করার চেয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তারা অনেক বেশি প্রাণঘাতী ও কার্যকর।
হিজবুল্লাহ ২০০৬ সালের যুদ্ধেও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে গিয়েছিল এবং পরবর্তী বছরগুলোতে ইরানের উল্লেখযোগ্য সাহায্যে শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
আজ হিজবুল্লাহ পঙ্গু ও বিশৃঙ্খল অবস্থায় রয়েছে। স্পষ্টতই ইসরায়েলি গোয়েন্দারা তাদের অন্দরে ঢুকে পড়ার কারণে। তবুও তাদের নিঃশেষ হওয়ার বয়ান লেখার সময় এখনো আসেনি।
লেবানন ও ইসরায়েলের বাইরেও ২০০৩ সালে মার্কিন নেতৃত্বে ইরাক আক্রমণের উদাহরণ রয়েছে, যা নির্মম অমানবিকতার এক বিরাট পাঠ। যখন সাদ্দামের সেনাবাহিনী ভেঙে পড়ে এবং মার্কিন সৈন্যরা বাগদাদে ছুটে যায়, তখন জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রশাসন কল্পনা করেছিল যে, সাদ্দাম হোসেনের পতন তেহরান ও দামেস্কের শাসকদের পতন ঘটাবে এবং সমগ্র অঞ্চল জুড়ে উদার গণতন্ত্রের ফুল ফোটাবে।
পরিবর্তে ইরাকের মার্কিন দখলদারিত্ব সাম্প্রদায়িক সহিংসতার রক্তস্নানে পরিণত হয়। সেখানে আমেরিকাকে রক্ত ও অর্থ দিয়ে এর মূল্য চোকাতে হয়েছে। তবে ইরাকের জনগণ মূল্য দিতে হয়েছে আরও বেশি। সাদ্দাম হোসেনের হত্যাকাণ্ড ইরানকে বাগদাদের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের কেন্দ্রস্থলে প্রভাব বিস্তারের সুযোগ করে দেয়। আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনের ফলে ভেঙে পড়া আল-কায়েদা ইরাকে পুনর্জন্ম লাভ করে এবং শেষ পর্যন্ত সিরিয়া ও ইরাকে ইসলামিক স্টেটে পরিণত হয়।
আমি যখন এটি লিখছি, তখন বৈরুতের বিধ্বস্ত দক্ষিণ শহরতলির ওপর থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখতে পাচ্ছি। আর সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিৎসা রাইসের কথা মনে পড়ছে। তিনি ২০০৬ সালে ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধের সময় বলেছিলেন, সমস্ত রক্তপাত ও ধ্বংস আমরা তখন প্রত্যক্ষ করছিলাম ‘নতুন মধ্যপ্রাচ্যের জন্ম যন্ত্রণা’র মধ্যে।
যারা একটি নতুন ভোর, একটি নতুন মধ্যপ্রাচ্যের জন্ম, এই অঞ্চলে ক্ষমতার একটি নতুন ভারসাম্য–এসব প্রতিশ্রুতি দেয় তাদের থেকে সাবধান। লেবানন গোটা মধ্যপ্রাচ্যের মাইক্রোজম হিসেবে সবাইকে ভুল পথে চালিত করতে পারে। মনে রাখতে হবে, লেবানন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিণতির একটি দেশ।
(সিএনএন-এর সৌজন্যে প্রকাশিত। ইংরেজি থেকে অনূদিত।)
এসব দেশের কোনো নাগরিককে বিয়ে করলেই দ্রুত আপনি পেয়ে যেতে পারেন সেই দেশের নাগরিকত্ব।
সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, আবাসন, শ্রম ও সীমান্ত নিরাপত্তা আইন মেনে চলা নিশ্চিত করতে এ অভিযান চালানো হয়েছে।
কুয়েতের একটি তদন্ত কমিটি ২ হাজার ৮৯৯ কুয়েতির নাগরিকত্ব বাতিল করেছে। এ সিদ্ধান্তটি এখন অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিপরিষদের কাছে পাঠানো হবে।
কুয়েতে ১০ হাজার নার্স নিয়োগে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ থেকে তালিকা পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেন।