ফারহানা আহমেদ লিসা, ক্যালিফোর্নিয়া, যুক্তরাষ্ট্র
একটা রোগীর প্রপার ডায়াগনোসিস করা এবং চিকিৎসা করে সুস্থ করে তোলার মতো মেধা আল্লাহ সবাইকে দেন না। কিছু ক্ষণজন্মা মানুষকে বিধাতা পুরো পৃথিবীতে এমনই মেধা দিয়েছেন। ডা. কাজী দীন মোহাম্মদ এমনই একজন মেধাবী ও মানবিক মানুষ। যাঁর সততা, মানবতা ও চিকিৎসা সেবার প্রতি ডেডিকেশন বিরল।
মেডিকেলে ভর্তি হবো হবো করছি, ৯০ দশকের শুরুর কথা, এমন সময় তাঁর সাথে পরিচয়। তিনি আমার বড় বোনের স্বামী। সেই সুবাদে খুব কাছ থেকে দেখা তাঁকে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে ঢাকা আসা–যাওয়া এবং তাঁর মোনা টাওয়ারের বাসায় থাকা ছিল আমার নিত্যদিনের রুটিন। তখন তিনি আইপিজিএমএ (বর্তমানে শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ছাত্র পড়ান। এনাটমির বোরিং সব ব্লাড সাপ্লাই নার্ভ সাপ্লাই তাঁর নখদর্পনে। প্রায়ই অনেক কিছু জিজ্ঞেস করতেন, পারতাম না।
তিনি বলতেন, আমি মেডিকেলের ছাত্রছাত্রীদেরও পড়াতে চাই। মেডিসিন যে কত আনন্দজনক একটা বিষয়, কত ভালোবেসে শেখানো যায় ছাত্রদের বোঝাতে হবে। পড়ার চাপে কাবু আমি একজন শিক্ষকের ডেডিকেশন দেখতাম, এখন রেসিডেন্টদের পড়াতে গিয়ে বুঝি কী বলেছিলেন তিনি।
ভবিষ্যত চিকিৎসকদের গড়ে তোলা একজন সফল শিক্ষক কাজী দীন মোহাম্মদ এরপর বেশ কয়েক বছর ঢাকা মেডিকেলের প্রিন্সিপাল ছিলেন। নিউরোলজির মতো জটিল একটা বিষয় তিনি পড়িয়েছেন সহজ করে। তাঁর ছাত্রদের মুখ থেকে শোনা, তাঁর ক্লাসে তিল ধারণের জায়গা থাকে না। তারপর তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস। সে প্রসঙ্গে আরেকটু পরে আসছি।
এত বড় শিক্ষক, চিকিৎসক অথচ তাঁর অহংকারের লেশ মাত্র নেই। তাঁর রোগীরা তাঁকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসেন। এত বছরে কত শত রোগী আমি পাঠিয়েছি। চট্টগ্রাম মেডিকেল হলে সবাই তাঁর আপন, ফ্রি, স্যানডিয়াগো হলে আপন আর ফ্রি, ফরিদপুর হলে ফ্রি, পাড়ার লোক, ফেনীর লোক সব ফ্রি। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে তাঁর ফি দেশে সর্বনিম্ন। আমার প্রাক্তন স্বামীর মা এসিড রিফ্লাক্স হয়ে মরে যাচ্ছিলেন। তাঁকে এন্ডোসকপির পর ডায়াগনোসিস করে প্রপার চিকিৎসা এবং পরবর্তীতে তাঁর পারকিনসনস রোগ ডায়াগনসিস এবং চিকিৎসা করানো। প্রাক্তন শ্বশুরের পটস ডিজিজের সার্জারি ও চিকিৎসাসহ যতদিন তাঁরা বেঁচে ছিলেন ততদিন বহুবার ব্যয়বহুল চিকিৎসার খরচ তিনি দিয়েছেন। কত শত রোগী সেই পরিচয়ে তাঁর উপদেশ ও চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন আমি বলতে পারছি না। কঠিন পরিশ্রম করে ভোর থেকে রাত পর্যন্ত তারপর হাসিমুখে বাসায় ফেরা একজন মানুষ আমি বহু বছর দেখেছি। মানব সেবা একটা আর্ট, একটা প্যাশন। ডা. কাজী দীন মোহাম্মদ সেটা আমাকে বুঝিয়েছেন।
তিনি ঢাকা মেডিকেলের একজন ছাত্র, এপসিপিএস এবং নিউরোনেডিসিনে এমডি ডিগ্রিধারী। আমেরিকার উইসকনসিন ইউনিভার্সিটি থেকে নিউরোফিজিওলজিতে ফেলোশিপ করা। তিনি নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের ফান্ড এনে দেশে রিসার্চ শুরু করেছেন। বহু ছাত্রছাত্রী উপকৃত হচ্ছে। এইতো সেদিন আমার মেডিকেলের একজন রিসার্চের অংশ ভুলক্রমে পাবলিশ করে ফেলায় বিপদে পড়েছিলেন। আমার সাথে যোগাযোগ করায় আমি বলেছিলাম। তিনি ঠিকই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে তা দেখেছেন।
উল্লেখযোগ্য্য রিসার্চ প্রজেক্টগুলো
১. ২০১৬ থেকে ইউনিভার্সিটি অব শেফিল্ড ইংল্যান্ডের সাথে মোটর নিউরন ও পারকিনসন ডিজিজের রিসার্চ।
২. ২০১৮ থেকে নেদারল্যান্ডসের ইরেসমাস ইউনিভার্সিটির সাথে মোটর নিউরন ডিজিজ নিয়ে গবেষণা (জি বি এম উদাহরণ)
৩. ২০২০ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অনেকের বায়োফার্মার সাথে পেরিফেরাল নিউরোর্যাথি বিষয়ক গবেষণা এবং ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অ্যাপ্রুভালের অপেক্ষায় আছে মনোক্লোনাল এন্টিবডি জি বি এসের প্রতিকারে। প্রায় ৬০–৭০টি পাবলিকেশন তাঁর আছে।
এই রকম প্রতিভাবান একজন মানুষ সংকল্প করেছিলেন নিউরোলজি বিষয়ক হাসপাতাল গড়বেন। প্ল্যানিং, বিল পাস হলো, ভিত্তিপ্রস্তর হয়েছিল বেগম খালেদা জিয়ার আমলে, প্রথম হাসপাতাল হয়েছিল ১২ বছর আগে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ৫০০ সজ্জাবিশিষ্ট হাসপাতাল হয়েছে আরও একটি, সেটি এপ্রিলে উদ্বোধনের অপেক্ষায়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. ইউনুসসহ সবাই তাঁর রোগী। চিকিৎসা সেবা ছাড়া অন্য কোনো কিছু নিয়ে মাথা ঘামানোর তাঁর সময় নেই। সকাল ৭টা থেকে রাত ১২টা তিনি এভাবেই কাটিয়েছেন। বহু দেশ তাঁকে চেয়েছে নিজেদের চিকিৎসা সেবা উন্নয়নে, তিনি যাননি, যাবেনও না। প্রথিতযশা এই চিকিৎসক যে সরকারি ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস প্রতিষ্ঠা করেছেন সেখানে নামমাত্র মূল্যে রোগী ভর্তি হন, বেড যতগুলো ততগুলোই। ২৫০ টাকা প্রতি রাতের ভাড়া, ২৪ ঘন্টা ডাক্তার থাকেন। গরীব রোগীর জন্য এমআরআইসহ বিভিন্ন সেবা আছে বিনামূল্যে। আছে স্ট্রোকের পর থ্রম্বেকটমি, আইভিআইজি, প্লাজমা এক্সচেঞ্চসহ আধুনিক সব কিছু নামমাত্র মূল্যে। উচ্চমানের খাবার আছে। স্টাফদের বেতনে কেউ ভাগ বসান না। করোনা মহামারিতে তারা সেবা দিয়েছেন। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের বহু ছাত্র মাসব্যাপী চিকিৎসা নিয়েছেন এ হাসপাতালে।
তিনি সরকারি হাসপাতাল করেছেন এবং সফলভাবে পরিচালনা করেছেন ১২ বছর। দ্বিতীয় হাসপাতাল উদ্বোধনের পরেই তাঁর অবসরে যাবার কথা ছিল। তিনি ছিলেনও বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের অনুরোধে উপযুক্ত ডাক্তারের হাতে ওই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে অবসর নেওয়ার অপেক্ষায়। কিন্তু মিথ্যা প্রচারে অভিমান করে তিনি ফ্রেব্রূযারি মাসেই পদত্যাগ করেছেন। এরকম চিকিৎসক কয়েক বছরে জন্ম নেন কি না সন্দেহ। দোয়া রইল তাঁর প্রাণের গড়া প্রতিষ্ঠান মানবসেবা করে যাক একই মানে। এত বড় হাসপাতাল এরকম আন্তর্জাতিক মানের সেবায় নিয়োজিত , পুরো পৃথিবীতে বিরল।
একটা রোগীর প্রপার ডায়াগনোসিস করা এবং চিকিৎসা করে সুস্থ করে তোলার মতো মেধা আল্লাহ সবাইকে দেন না। কিছু ক্ষণজন্মা মানুষকে বিধাতা পুরো পৃথিবীতে এমনই মেধা দিয়েছেন। ডা. কাজী দীন মোহাম্মদ এমনই একজন মেধাবী ও মানবিক মানুষ। যাঁর সততা, মানবতা ও চিকিৎসা সেবার প্রতি ডেডিকেশন বিরল।
মেডিকেলে ভর্তি হবো হবো করছি, ৯০ দশকের শুরুর কথা, এমন সময় তাঁর সাথে পরিচয়। তিনি আমার বড় বোনের স্বামী। সেই সুবাদে খুব কাছ থেকে দেখা তাঁকে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে ঢাকা আসা–যাওয়া এবং তাঁর মোনা টাওয়ারের বাসায় থাকা ছিল আমার নিত্যদিনের রুটিন। তখন তিনি আইপিজিএমএ (বর্তমানে শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ছাত্র পড়ান। এনাটমির বোরিং সব ব্লাড সাপ্লাই নার্ভ সাপ্লাই তাঁর নখদর্পনে। প্রায়ই অনেক কিছু জিজ্ঞেস করতেন, পারতাম না।
তিনি বলতেন, আমি মেডিকেলের ছাত্রছাত্রীদেরও পড়াতে চাই। মেডিসিন যে কত আনন্দজনক একটা বিষয়, কত ভালোবেসে শেখানো যায় ছাত্রদের বোঝাতে হবে। পড়ার চাপে কাবু আমি একজন শিক্ষকের ডেডিকেশন দেখতাম, এখন রেসিডেন্টদের পড়াতে গিয়ে বুঝি কী বলেছিলেন তিনি।
ভবিষ্যত চিকিৎসকদের গড়ে তোলা একজন সফল শিক্ষক কাজী দীন মোহাম্মদ এরপর বেশ কয়েক বছর ঢাকা মেডিকেলের প্রিন্সিপাল ছিলেন। নিউরোলজির মতো জটিল একটা বিষয় তিনি পড়িয়েছেন সহজ করে। তাঁর ছাত্রদের মুখ থেকে শোনা, তাঁর ক্লাসে তিল ধারণের জায়গা থাকে না। তারপর তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস। সে প্রসঙ্গে আরেকটু পরে আসছি।
এত বড় শিক্ষক, চিকিৎসক অথচ তাঁর অহংকারের লেশ মাত্র নেই। তাঁর রোগীরা তাঁকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসেন। এত বছরে কত শত রোগী আমি পাঠিয়েছি। চট্টগ্রাম মেডিকেল হলে সবাই তাঁর আপন, ফ্রি, স্যানডিয়াগো হলে আপন আর ফ্রি, ফরিদপুর হলে ফ্রি, পাড়ার লোক, ফেনীর লোক সব ফ্রি। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে তাঁর ফি দেশে সর্বনিম্ন। আমার প্রাক্তন স্বামীর মা এসিড রিফ্লাক্স হয়ে মরে যাচ্ছিলেন। তাঁকে এন্ডোসকপির পর ডায়াগনোসিস করে প্রপার চিকিৎসা এবং পরবর্তীতে তাঁর পারকিনসনস রোগ ডায়াগনসিস এবং চিকিৎসা করানো। প্রাক্তন শ্বশুরের পটস ডিজিজের সার্জারি ও চিকিৎসাসহ যতদিন তাঁরা বেঁচে ছিলেন ততদিন বহুবার ব্যয়বহুল চিকিৎসার খরচ তিনি দিয়েছেন। কত শত রোগী সেই পরিচয়ে তাঁর উপদেশ ও চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন আমি বলতে পারছি না। কঠিন পরিশ্রম করে ভোর থেকে রাত পর্যন্ত তারপর হাসিমুখে বাসায় ফেরা একজন মানুষ আমি বহু বছর দেখেছি। মানব সেবা একটা আর্ট, একটা প্যাশন। ডা. কাজী দীন মোহাম্মদ সেটা আমাকে বুঝিয়েছেন।
তিনি ঢাকা মেডিকেলের একজন ছাত্র, এপসিপিএস এবং নিউরোনেডিসিনে এমডি ডিগ্রিধারী। আমেরিকার উইসকনসিন ইউনিভার্সিটি থেকে নিউরোফিজিওলজিতে ফেলোশিপ করা। তিনি নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের ফান্ড এনে দেশে রিসার্চ শুরু করেছেন। বহু ছাত্রছাত্রী উপকৃত হচ্ছে। এইতো সেদিন আমার মেডিকেলের একজন রিসার্চের অংশ ভুলক্রমে পাবলিশ করে ফেলায় বিপদে পড়েছিলেন। আমার সাথে যোগাযোগ করায় আমি বলেছিলাম। তিনি ঠিকই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে তা দেখেছেন।
উল্লেখযোগ্য্য রিসার্চ প্রজেক্টগুলো
১. ২০১৬ থেকে ইউনিভার্সিটি অব শেফিল্ড ইংল্যান্ডের সাথে মোটর নিউরন ও পারকিনসন ডিজিজের রিসার্চ।
২. ২০১৮ থেকে নেদারল্যান্ডসের ইরেসমাস ইউনিভার্সিটির সাথে মোটর নিউরন ডিজিজ নিয়ে গবেষণা (জি বি এম উদাহরণ)
৩. ২০২০ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অনেকের বায়োফার্মার সাথে পেরিফেরাল নিউরোর্যাথি বিষয়ক গবেষণা এবং ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অ্যাপ্রুভালের অপেক্ষায় আছে মনোক্লোনাল এন্টিবডি জি বি এসের প্রতিকারে। প্রায় ৬০–৭০টি পাবলিকেশন তাঁর আছে।
এই রকম প্রতিভাবান একজন মানুষ সংকল্প করেছিলেন নিউরোলজি বিষয়ক হাসপাতাল গড়বেন। প্ল্যানিং, বিল পাস হলো, ভিত্তিপ্রস্তর হয়েছিল বেগম খালেদা জিয়ার আমলে, প্রথম হাসপাতাল হয়েছিল ১২ বছর আগে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ৫০০ সজ্জাবিশিষ্ট হাসপাতাল হয়েছে আরও একটি, সেটি এপ্রিলে উদ্বোধনের অপেক্ষায়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. ইউনুসসহ সবাই তাঁর রোগী। চিকিৎসা সেবা ছাড়া অন্য কোনো কিছু নিয়ে মাথা ঘামানোর তাঁর সময় নেই। সকাল ৭টা থেকে রাত ১২টা তিনি এভাবেই কাটিয়েছেন। বহু দেশ তাঁকে চেয়েছে নিজেদের চিকিৎসা সেবা উন্নয়নে, তিনি যাননি, যাবেনও না। প্রথিতযশা এই চিকিৎসক যে সরকারি ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস প্রতিষ্ঠা করেছেন সেখানে নামমাত্র মূল্যে রোগী ভর্তি হন, বেড যতগুলো ততগুলোই। ২৫০ টাকা প্রতি রাতের ভাড়া, ২৪ ঘন্টা ডাক্তার থাকেন। গরীব রোগীর জন্য এমআরআইসহ বিভিন্ন সেবা আছে বিনামূল্যে। আছে স্ট্রোকের পর থ্রম্বেকটমি, আইভিআইজি, প্লাজমা এক্সচেঞ্চসহ আধুনিক সব কিছু নামমাত্র মূল্যে। উচ্চমানের খাবার আছে। স্টাফদের বেতনে কেউ ভাগ বসান না। করোনা মহামারিতে তারা সেবা দিয়েছেন। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের বহু ছাত্র মাসব্যাপী চিকিৎসা নিয়েছেন এ হাসপাতালে।
তিনি সরকারি হাসপাতাল করেছেন এবং সফলভাবে পরিচালনা করেছেন ১২ বছর। দ্বিতীয় হাসপাতাল উদ্বোধনের পরেই তাঁর অবসরে যাবার কথা ছিল। তিনি ছিলেনও বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের অনুরোধে উপযুক্ত ডাক্তারের হাতে ওই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে অবসর নেওয়ার অপেক্ষায়। কিন্তু মিথ্যা প্রচারে অভিমান করে তিনি ফ্রেব্রূযারি মাসেই পদত্যাগ করেছেন। এরকম চিকিৎসক কয়েক বছরে জন্ম নেন কি না সন্দেহ। দোয়া রইল তাঁর প্রাণের গড়া প্রতিষ্ঠান মানবসেবা করে যাক একই মানে। এত বড় হাসপাতাল এরকম আন্তর্জাতিক মানের সেবায় নিয়োজিত , পুরো পৃথিবীতে বিরল।
একটা রোগীর প্রপার ডায়াগনোসিস করা এবং চিকিৎসা করে সুস্থ করে তোলার মতো মেধা আল্লাহ সবাইকে দেন না। কিছু ক্ষণজন্মা মানুষকে বিধাতা পুরো পৃথিবীতে এমনই মেধা দিয়েছেন। ডা. কাজী দীন মোহাম্মদ এমনই একজন মেধাবী ও মানবিক মানুষ।
এই আমেরিকায় আসার পর থেকে সময়ের আর কোনো খোঁজই পাই না। কখন সকাল হয় আর কখন রাত তাও টের পাই না। অন্তরের দুটা অন্তরকথা কাউকে বলব, সেই সময়ও যেন নেই। তার ওপর ডেট এক্সপায়ারি মানুষ, অনেকটা দাবা খেলার ওই ক্ষমতাবান রাজার মতো, মাত্র এক ঘর যেতে পারি।
মাঝে দিয়ে ওর পরিবার পথে বসে গেছে। জায়গা জমি বিক্রি করে ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছিল লেখাপড়া করে শিক্ষিত হতে। ছেলে লেখাপড়া না করে ইমরান হাশমি বা উদিত নারায়নের মতোন ‘চুম্বন দেব’ হতে চেয়েছিল। কী আর করার।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে চিকিৎসকদের যোগ্যতা ও দক্ষতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসাবিজ্ঞান প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে, নতুন রোগের আবির্ভাব হচ্ছে এবং আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি বিশ্বব্যাপী নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলছে।