রাশেদুর রহমান
চূড়ান্ত যুদ্ধে যৌথ বাহিনীর অগ্রযাত্রা
মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর সমন্বয়ে গড়া যৌথ বাহিনী এদিন পাকিস্তানি বাহিনীর কাছ থেকে নোয়াখালী শহর দখল করে চট্টগ্রামের দিকে এগোতে থাকে। যৌথ বাহিনীর অন্য দল খুলনার ১৬ মাইল দূরে পৌঁছালে পাকিস্তানি বাহিনীর পালানোর পথ রুদ্ধ হয়ে পড়ে। কুষ্টিয়া ও দিনাজপুর শহর পতনের মুখে।
ময়মনসিংহে যৌথ বাহিনী পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর আঘাত হানে। পাকিস্তানি সেনারা দিনের বেলা কিছুটা প্রতিরোধ করলেও রাত থেকে টাঙ্গাইলের ভেতর দিয়ে ঢাকার দিকে পালিয়ে যেতে শুরু করে। জামালপুরে বিকেল ৪টার দিকে যৌথ বাহিনীর পক্ষ থেকে পাকিস্তানি বাহিনীর ৩১ বালুচ রেজিমেন্টকে আত্মসমর্পণ করার আহ্বান জানিয়ে একটি পত্র পাঠানো হয়। পাকিস্তানি অধিনায়ক একটি বুলেট কাগজে মুড়ে পাঠিয়ে উত্তর দেয়, অর্থাৎ তারা যুদ্ধ চালাবে। ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিমানগুলো বোমাবর্ষণ করে তাদের অবস্থা শোচনীয় করে তোলে। সন্ধ্যা থেকেই মুক্তিবাহিনী চারদিক থেকে জামালপুর শহরে ঢুকতে থাকে। তবে পাকিস্তানি সেনারা ১০ ডিসেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে যৌথ বাহিনীর ১৮ রাজপুত রেজিমেন্ট ভোরের দিকে পাকিস্তানি বাহিনীর প্রতিরক্ষাব্যূহে আক্রমণের চেষ্টাকালে পাকিস্তানি বাহিনীর অ্যামবুশে পড়ে। ভারতের ১০ বিহার রেজিমেন্ট এবং মুক্তিবাহিনীর এস ফোর্সের ১১ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের দুটি কোম্পানি ১৮ রাজপুত রেজিমেন্টকে অ্যামবুশ থেকে মুক্ত করার জন্য দুর্গাপুরের দিক থেকে আক্রমণ করে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক স্কোয়াড্রন ট্যাংকও দুর্গাপুরের দিক থেকে এ আক্রমণে অংশ নেয়। এ সময় কয়েকটি ট্যাংক পাকিস্তানি ট্যাংকবিধ্বংসী মাইনফিল্ডের অ্যামবুশে পড়ে। যুদ্ধে দুই পক্ষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। আশুগঞ্জে থাকা পাকিস্তানি সেনারা রাতের আঁধারে ভৈরব চলে যায়। আশুগঞ্জ মুক্ত হয়। পাকিস্তানি সেনারা ভৈরব সেতুর আশুগঞ্জসংলগ্ন অংশ ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দিলে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর সেনারা নৌকাসহ বিভিন্ন ধরনের জলযানে মেঘনা নদী পেরিয়ে ভৈরব বাজারের কাছে ঘাঁটি করেন।
ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলো এদিন বারবার ঢাকার চারদিকে পাকিস্তানি সামরিক ঘাঁটি এবং সাভার ও নয়ারহাটে রেডিওর ট্রান্সমিটারের ওপর হামলা চালায়। রেডিও পাকিস্তানের ঢাকা কেন্দ্রের প্রচার বন্ধ হয়ে যায়।
মুক্তিবাহিনীর নৌ ইউনিট ও ভারতীয় নৌবাহিনী এদিন যৌথভাবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর চালনা মুক্ত করে। এর আগে ভারতীয় বাহিনীর বিমান আক্রমণে চট্টগ্রাম ও চালনা বন্দর অচল হয়ে পড়ে। কয়েকটি পাকিস্তানি জাহাজ বঙ্গোপসাগরে পালাতে গিয়ে ধরা পড়ে।
ভারতকে চীনের প্রচ্ছন্ন হুমকি
চীন ১০ ডিসেম্বর ভারতকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের যুদ্ধবিরতির আবেদন মেনে নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলে, তা না হলে ভারতকে লজ্জাজনক পরাজয় বরণ করতে হবে। পিকিং (বর্তমানে বেইজিং) বেতার থেকে খবরটি প্রচার করা হয়। চীনের সরকারি মুখপত্র পিপলস ডেইলিতেও এক সংবাদভাষ্যে বলা হয়, সোভিয়েত ইউনিয়নের সমর্থনপুষ্ট হয়ে বিশ্বের মতামত উপেক্ষা করে ভারত সামরিক অভিযান চালিয়ে যেতে থাকলে তার পরিণতি লজ্জাকর পরাজয়। পত্রিকাটি বলে, চীন পাকিস্তানের সংগ্রাম দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে।
সোভিয়েত বার্তা সংস্থা তাস-এর এক প্রতিবেদনে ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিকে একপেশে বলে ভারতবিরোধী বলে উল্লেখ করা হয়।
শহীদ হলেন রুহুল আমিন
বেলা ১১টার দিকে যৌথ বাহিনীর গানবোটগুলো মংলা শিপইয়ার্ডের কাছে পৌঁছায়। এ সময় আকাশে দেখা যায় ৩টি জঙ্গি বিমান। শত্রুবিমান ভেবে মো. রুহুল আমিন সহযোদ্ধাদের সেগুলো প্রতিরোধের নির্দেশ দেন। তাঁদের বহরে থাকা একটি ভারতীয় গানবোট থেকে জানানো হয়, ওগুলো ভারতীয় বিমান।
বিমানগুলো কিছুটা নিচে নেমে দক্ষিণ-পশ্চিমের দিকে গিয়ে হঠাৎ ঘুরে এসে মুক্তিবাহিনীর গানবোটে বোমাবর্ষণ করে। এতে গানবোটে আগুন ধরে যায়। এর আগেই পানিতে ঝাঁপ দিয়ে কেউ কেউ অক্ষত থাকেন। রুহুল আমিনসহ অনেকে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত গানবোটেই ছিলেন। বোমার স্প্লিন্টার লেগে রুহুল আমিনের বাঁ হাত ভেঙে যায়। প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকে। এক সহযোদ্ধা তাঁকে নিয়ে পানিতে ঝাঁপ দেন।
আহত রুহুল আমিন কোনোমতে সাঁতার কেটে নদীর পুব পারে পৌঁছান। সেখানে ছিল কয়েকজন পাকিস্তানি সেনা ও অনেক রাজাকার। তারা তাঁকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। নদীর তীরে পড়ে থাকে তাঁর বিক্ষত মরদেহ। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা নদীর তীরের একটি স্থানে তাঁকে সমাহিত করেন। স্বাধীনতার বাংলাদেশ সরকার তাঁকে বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করে।
ঢাকায় পাকিস্তানি অনুগতদের তৎপরতা
অধিকৃত বাংলাদেশে পাকিস্তানের অনুগত গভর্নর ডা. আবদুল মোত্তালিব মালিকের একটি প্রস্তাব তাঁর সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী খানের মাধ্যমে ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় নিয়োজিত জাতিসংঘের প্রতিনিধির কাছে পেশ করা হয়।
প্রস্তাবে কয়েকটি শর্ত ছিল এ রকম: ১. পূর্বাঞ্চলে নিয়োজিত পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করবে; ২. বাংলাদেশের গেরিলাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে সরকারিভাবে যোগাযোগ করা হবে না; ৩. প্রায় ১ লাখ বেসামরিক পশ্চিম পাকিস্তানি নাগরিককে পশ্চিম পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে; ৪. পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে পর্যায়ক্রমে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে; এবং ৫. জাতীয় পরিষদের আওয়ামী লীগ দলভুক্ত সদস্যদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীর নির্দেশে অধিকৃত বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় এদিন থেকে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের একটি পরিকল্পনার সূচনা হয়।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা, কলকাতা, ভারত, ১১ ও ১২ ডিসেম্বর ১৯৭১; দ্য সানডে টেলিগ্রাফ, ১২ ডিসেম্বর ১৯৭১; স্বাধীনতাসংগ্রামে প্রবাসী বাঙালি, আবদুল মতিন, র্যাডিক্যাল পাবলিকেশনস, লন্ডন, যুক্তরাজ্য
চূড়ান্ত যুদ্ধে যৌথ বাহিনীর অগ্রযাত্রা
মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর সমন্বয়ে গড়া যৌথ বাহিনী এদিন পাকিস্তানি বাহিনীর কাছ থেকে নোয়াখালী শহর দখল করে চট্টগ্রামের দিকে এগোতে থাকে। যৌথ বাহিনীর অন্য দল খুলনার ১৬ মাইল দূরে পৌঁছালে পাকিস্তানি বাহিনীর পালানোর পথ রুদ্ধ হয়ে পড়ে। কুষ্টিয়া ও দিনাজপুর শহর পতনের মুখে।
ময়মনসিংহে যৌথ বাহিনী পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর আঘাত হানে। পাকিস্তানি সেনারা দিনের বেলা কিছুটা প্রতিরোধ করলেও রাত থেকে টাঙ্গাইলের ভেতর দিয়ে ঢাকার দিকে পালিয়ে যেতে শুরু করে। জামালপুরে বিকেল ৪টার দিকে যৌথ বাহিনীর পক্ষ থেকে পাকিস্তানি বাহিনীর ৩১ বালুচ রেজিমেন্টকে আত্মসমর্পণ করার আহ্বান জানিয়ে একটি পত্র পাঠানো হয়। পাকিস্তানি অধিনায়ক একটি বুলেট কাগজে মুড়ে পাঠিয়ে উত্তর দেয়, অর্থাৎ তারা যুদ্ধ চালাবে। ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিমানগুলো বোমাবর্ষণ করে তাদের অবস্থা শোচনীয় করে তোলে। সন্ধ্যা থেকেই মুক্তিবাহিনী চারদিক থেকে জামালপুর শহরে ঢুকতে থাকে। তবে পাকিস্তানি সেনারা ১০ ডিসেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে যৌথ বাহিনীর ১৮ রাজপুত রেজিমেন্ট ভোরের দিকে পাকিস্তানি বাহিনীর প্রতিরক্ষাব্যূহে আক্রমণের চেষ্টাকালে পাকিস্তানি বাহিনীর অ্যামবুশে পড়ে। ভারতের ১০ বিহার রেজিমেন্ট এবং মুক্তিবাহিনীর এস ফোর্সের ১১ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের দুটি কোম্পানি ১৮ রাজপুত রেজিমেন্টকে অ্যামবুশ থেকে মুক্ত করার জন্য দুর্গাপুরের দিক থেকে আক্রমণ করে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক স্কোয়াড্রন ট্যাংকও দুর্গাপুরের দিক থেকে এ আক্রমণে অংশ নেয়। এ সময় কয়েকটি ট্যাংক পাকিস্তানি ট্যাংকবিধ্বংসী মাইনফিল্ডের অ্যামবুশে পড়ে। যুদ্ধে দুই পক্ষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। আশুগঞ্জে থাকা পাকিস্তানি সেনারা রাতের আঁধারে ভৈরব চলে যায়। আশুগঞ্জ মুক্ত হয়। পাকিস্তানি সেনারা ভৈরব সেতুর আশুগঞ্জসংলগ্ন অংশ ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দিলে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর সেনারা নৌকাসহ বিভিন্ন ধরনের জলযানে মেঘনা নদী পেরিয়ে ভৈরব বাজারের কাছে ঘাঁটি করেন।
ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলো এদিন বারবার ঢাকার চারদিকে পাকিস্তানি সামরিক ঘাঁটি এবং সাভার ও নয়ারহাটে রেডিওর ট্রান্সমিটারের ওপর হামলা চালায়। রেডিও পাকিস্তানের ঢাকা কেন্দ্রের প্রচার বন্ধ হয়ে যায়।
মুক্তিবাহিনীর নৌ ইউনিট ও ভারতীয় নৌবাহিনী এদিন যৌথভাবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর চালনা মুক্ত করে। এর আগে ভারতীয় বাহিনীর বিমান আক্রমণে চট্টগ্রাম ও চালনা বন্দর অচল হয়ে পড়ে। কয়েকটি পাকিস্তানি জাহাজ বঙ্গোপসাগরে পালাতে গিয়ে ধরা পড়ে।
ভারতকে চীনের প্রচ্ছন্ন হুমকি
চীন ১০ ডিসেম্বর ভারতকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের যুদ্ধবিরতির আবেদন মেনে নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলে, তা না হলে ভারতকে লজ্জাজনক পরাজয় বরণ করতে হবে। পিকিং (বর্তমানে বেইজিং) বেতার থেকে খবরটি প্রচার করা হয়। চীনের সরকারি মুখপত্র পিপলস ডেইলিতেও এক সংবাদভাষ্যে বলা হয়, সোভিয়েত ইউনিয়নের সমর্থনপুষ্ট হয়ে বিশ্বের মতামত উপেক্ষা করে ভারত সামরিক অভিযান চালিয়ে যেতে থাকলে তার পরিণতি লজ্জাকর পরাজয়। পত্রিকাটি বলে, চীন পাকিস্তানের সংগ্রাম দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে।
সোভিয়েত বার্তা সংস্থা তাস-এর এক প্রতিবেদনে ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিকে একপেশে বলে ভারতবিরোধী বলে উল্লেখ করা হয়।
শহীদ হলেন রুহুল আমিন
বেলা ১১টার দিকে যৌথ বাহিনীর গানবোটগুলো মংলা শিপইয়ার্ডের কাছে পৌঁছায়। এ সময় আকাশে দেখা যায় ৩টি জঙ্গি বিমান। শত্রুবিমান ভেবে মো. রুহুল আমিন সহযোদ্ধাদের সেগুলো প্রতিরোধের নির্দেশ দেন। তাঁদের বহরে থাকা একটি ভারতীয় গানবোট থেকে জানানো হয়, ওগুলো ভারতীয় বিমান।
বিমানগুলো কিছুটা নিচে নেমে দক্ষিণ-পশ্চিমের দিকে গিয়ে হঠাৎ ঘুরে এসে মুক্তিবাহিনীর গানবোটে বোমাবর্ষণ করে। এতে গানবোটে আগুন ধরে যায়। এর আগেই পানিতে ঝাঁপ দিয়ে কেউ কেউ অক্ষত থাকেন। রুহুল আমিনসহ অনেকে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত গানবোটেই ছিলেন। বোমার স্প্লিন্টার লেগে রুহুল আমিনের বাঁ হাত ভেঙে যায়। প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকে। এক সহযোদ্ধা তাঁকে নিয়ে পানিতে ঝাঁপ দেন।
আহত রুহুল আমিন কোনোমতে সাঁতার কেটে নদীর পুব পারে পৌঁছান। সেখানে ছিল কয়েকজন পাকিস্তানি সেনা ও অনেক রাজাকার। তারা তাঁকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। নদীর তীরে পড়ে থাকে তাঁর বিক্ষত মরদেহ। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা নদীর তীরের একটি স্থানে তাঁকে সমাহিত করেন। স্বাধীনতার বাংলাদেশ সরকার তাঁকে বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করে।
ঢাকায় পাকিস্তানি অনুগতদের তৎপরতা
অধিকৃত বাংলাদেশে পাকিস্তানের অনুগত গভর্নর ডা. আবদুল মোত্তালিব মালিকের একটি প্রস্তাব তাঁর সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী খানের মাধ্যমে ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় নিয়োজিত জাতিসংঘের প্রতিনিধির কাছে পেশ করা হয়।
প্রস্তাবে কয়েকটি শর্ত ছিল এ রকম: ১. পূর্বাঞ্চলে নিয়োজিত পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করবে; ২. বাংলাদেশের গেরিলাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে সরকারিভাবে যোগাযোগ করা হবে না; ৩. প্রায় ১ লাখ বেসামরিক পশ্চিম পাকিস্তানি নাগরিককে পশ্চিম পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে; ৪. পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে পর্যায়ক্রমে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে; এবং ৫. জাতীয় পরিষদের আওয়ামী লীগ দলভুক্ত সদস্যদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীর নির্দেশে অধিকৃত বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় এদিন থেকে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের একটি পরিকল্পনার সূচনা হয়।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা, কলকাতা, ভারত, ১১ ও ১২ ডিসেম্বর ১৯৭১; দ্য সানডে টেলিগ্রাফ, ১২ ডিসেম্বর ১৯৭১; স্বাধীনতাসংগ্রামে প্রবাসী বাঙালি, আবদুল মতিন, র্যাডিক্যাল পাবলিকেশনস, লন্ডন, যুক্তরাজ্য
বন্ধ ঘোষণা করা ২টি কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ী এলাকায় বিক্ষোভ এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেছেন শ্রমিকেরা।
যোগ্যতার চাইতে প্রাপ্তি বেশি হয়ে গেলে তখন সে লাগামহীন হয়ে ওঠে। এ অনেকটা মাটি ও খুঁটির মতো অবস্থা। খুঁটি শক্ত না হলে ঘর নড়বড়ে হবে আবার মাটি উর্বর না হলে খাওয়াপড়া জুটবে না। মানুষের চিন্তার সমৃদ্ধির জন্য পড়াশোনা কিংবা জ্ঞানের কোনো বিকল্প নেই।
পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগরে থাকা সুস্পষ্ট লঘুচাপ নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নিম্নচাপটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৩৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল।
কথাসাহিত্যিক ও গবেষক সিরাজুল ইসলাম মুনির সমকালীন বাংলা সাহিত্যাঙ্গনে সুপরিচিত নাম। তাঁর সাহিত্য সৃষ্টির সমৃদ্ধ বহুমাত্রিকতা সৃষ্টি করেছে শক্তিশালী স্বতন্ত্র অবস্থান। সাবলীল শব্দ ব্যঞ্জনার প্রকাশে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন জীবন, দেশাত্মবোধ বাংলাদেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন মাত্রাকে।