বিডিজেন ডেস্ক
তিন দশকের তিল তিল করে গড়ে তোলা স্বপ্ন, মাথার ঘাম পায়ে ফেলা পরিশ্রম করে আয় করা টাকা—সবই কেড়ে নিয়েছে এক প্রতারক চক্র। কুয়েতপ্রবাসী আফাজ উদ্দিন মোল্লা (৫৮) নামের এক বাংলাদেশি শ্রমিক কানাডা যাওয়ার প্রলোভনে ২৪ লাখ টাকা খুইয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন।
খবর প্রথম আলোর।
প্রতারণার শিকার হওয়ার পর গত ২২ মে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেছেন আফাজ উদ্দিনের স্ত্রী রোকসানা আক্তার। মামলায় প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে আসাদুল নামের এক ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া, আসাদুলের সহযোগী হিসেবে অজ্ঞাত আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
পুলিশ-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আফাজ উদ্দিন মোল্লার স্ত্রীর দায়ের করা মামলা পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
ভুক্তভোগী আফাজ উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, তাঁর জীবনের ৩০ বছর কেটেছে কুয়েতে প্রচণ্ড গরমে আর কঠোর পরিশ্রমে। একটিই স্বপ্নই লালন করছিলেন তিনি। আর সেটি হচ্ছে পরিবারের জন্য একটি ভালো জীবন, সন্তানদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। সেই স্বপ্নপূরণের অংশ হিসেবেই হয়তো তিনি চেয়েছিলেন উন্নত দেশ কানাডায় গিয়ে আরও বেশি আয় করতে, পরিবারকে আরও ভালোভাবে সাহায্য করতে। কিন্তু সেই স্বপ্নই এখন তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত গত বছরের আগস্টে। ওই মাসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই একদিন তাঁর চোখে পড়ে একটি বিজ্ঞাপন, ‘কম টাকায় কানাডা যাওয়ার সুযোগ’। এই বিজ্ঞাপন দেখে ফাঁদে পা দেন তিনি। এতেই সর্বনাশ হয় তাঁর।
আফাজ উদ্দিন গত বুধবার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফেসবুকের বিজ্ঞাপনে দেওয়া মোবাইল নম্বরে আগস্টের প্রথম সপ্তাহে আমি যোগাযোগ করি। ফোনের অপর প্রান্তে একজন নিজেকে আসাদুল ইসলাম বলে পরিচয় দেন। আসাদুল আমাকে আশ্বস্ত করেন, তিনি কানাডায় অবস্থান করছেন। অল্প সময়ের মধ্যে কুয়েত থেকে তাঁকে কানাডায় নিয়ে যেতে পারবেন। কানাডায় বেতন পাবেন চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা। তখন আমি তাঁর কথা বিশ্বাস করি। বিদেশের মাটিতে বছরের পর বছর খেটে যে সামান্য সঞ্চয়টুকু করেছিলাম, তার পুরোটাই আমি তুলে দিই আসাদুলের হাতে।’
আফাজ উদ্দিন আরও বলেন, নিজের পরিচিত এবং আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকেও ধারদেনা করেন তিনি। এভাবেই তাঁর জীবনের সমস্ত সঞ্চয় এবং ধারদেনা করে মোট ২৪ লাখ টাকা দেন আসাদুলকে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের আগস্টে পরিচয় হওয়ার পর কানাডায় ভিসা করার খরচের কথা বলে ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৪ লাখ টাকা নেন আসাদুল। আসাদুলের দেওয়া বিকাশের কয়েকটি নম্বরে ওই টাকা পাঠানোর পরই শুরু হয় আফাজ উদ্দিনের মানসিক টানাপোড়েন। তিনি বারবার আসাদুলের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। বারবার বলা হয়, খুব শিগগির ভিসা চলে আসবে। পরে আসাদুলের সেই মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
মামলার এজাহারে কথিত আসাদুলের উল্লেখ করা মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে সেটি প্রথমে বন্ধ পাওয়া যায়। পরে ৪ জুন সন্ধ্যায় মুঠোফোন নম্বরটি খোলা পাওয়া যায়। প্রতারণার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মুঠোফোনের অপর প্রান্ত থেকে বলা হয়, তিনি আসাদুল নন। তাঁর নাম হানিফ। পরে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
এ ব্যাপারে বাদী রোকসানা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, মামলার অভিযুক্ত নিজেকে আসাদুল হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। বহুবার তিনি আসাদুলের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলতে চেয়েছিলেন; কিন্তু আসাদুল রাজি হননি।
রাজধানীর রায়েরবাগে দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে থাকেন রোকসানা আক্তার। স্বামীর পাঠানো টাকাতেই চলত তাঁদের সংসার। এই ২৪ লাখ টাকা জোগাড় করতে গিয়ে তাঁরা এখন প্রায় নিঃস্ব।
রোকসানা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘চার বছর আগে আমার বড় মেয়ে রাবেয়া অসুস্থ হয়ে মারা গেছে। মেয়েকে চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমাদের তখন আট লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আবার ২৪ লাখ টাকা স্বামীর জন্য খরচ হয়েছে। যাঁদের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিলাম, সেই টাকার সুদও দিতে হচ্ছে।’
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী প্রথম আলোকে বলেন, আফাজ উদ্দিনের মামলায় উল্লেখ করা বিকাশ নম্বরের সূত্র ধরে প্রতারক চক্রের প্রত্যেক সদস্যকে চিহ্নিত করে সিআইডির উচিত গ্রেপ্তার করা। এ চক্রের সঙ্গে একাধিক ব্যক্তি জড়িত।
এ ধরনের সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের প্রত্যেক সদস্যকে বিচারের আওতায় আনা উচিত বলে মন্তব্য করেন পিপি ওমর ফারুক ফারুকী।
ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে কারও উচিত নয় কোনো টাকা বিনিয়োগ করা। যেসব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স রয়েছে, যারা নিয়মিত বিদেশে লোক পাঠায়, সেসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিদেশে যাওয়া উচিত। তাহলে প্রতারিত হওয়ার সুযোগ কম থাকে।
সূত্র: প্রথম আলো
তিন দশকের তিল তিল করে গড়ে তোলা স্বপ্ন, মাথার ঘাম পায়ে ফেলা পরিশ্রম করে আয় করা টাকা—সবই কেড়ে নিয়েছে এক প্রতারক চক্র। কুয়েতপ্রবাসী আফাজ উদ্দিন মোল্লা (৫৮) নামের এক বাংলাদেশি শ্রমিক কানাডা যাওয়ার প্রলোভনে ২৪ লাখ টাকা খুইয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন।
খবর প্রথম আলোর।
প্রতারণার শিকার হওয়ার পর গত ২২ মে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেছেন আফাজ উদ্দিনের স্ত্রী রোকসানা আক্তার। মামলায় প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে আসাদুল নামের এক ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া, আসাদুলের সহযোগী হিসেবে অজ্ঞাত আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
পুলিশ-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আফাজ উদ্দিন মোল্লার স্ত্রীর দায়ের করা মামলা পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
ভুক্তভোগী আফাজ উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, তাঁর জীবনের ৩০ বছর কেটেছে কুয়েতে প্রচণ্ড গরমে আর কঠোর পরিশ্রমে। একটিই স্বপ্নই লালন করছিলেন তিনি। আর সেটি হচ্ছে পরিবারের জন্য একটি ভালো জীবন, সন্তানদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। সেই স্বপ্নপূরণের অংশ হিসেবেই হয়তো তিনি চেয়েছিলেন উন্নত দেশ কানাডায় গিয়ে আরও বেশি আয় করতে, পরিবারকে আরও ভালোভাবে সাহায্য করতে। কিন্তু সেই স্বপ্নই এখন তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত গত বছরের আগস্টে। ওই মাসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই একদিন তাঁর চোখে পড়ে একটি বিজ্ঞাপন, ‘কম টাকায় কানাডা যাওয়ার সুযোগ’। এই বিজ্ঞাপন দেখে ফাঁদে পা দেন তিনি। এতেই সর্বনাশ হয় তাঁর।
আফাজ উদ্দিন গত বুধবার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফেসবুকের বিজ্ঞাপনে দেওয়া মোবাইল নম্বরে আগস্টের প্রথম সপ্তাহে আমি যোগাযোগ করি। ফোনের অপর প্রান্তে একজন নিজেকে আসাদুল ইসলাম বলে পরিচয় দেন। আসাদুল আমাকে আশ্বস্ত করেন, তিনি কানাডায় অবস্থান করছেন। অল্প সময়ের মধ্যে কুয়েত থেকে তাঁকে কানাডায় নিয়ে যেতে পারবেন। কানাডায় বেতন পাবেন চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা। তখন আমি তাঁর কথা বিশ্বাস করি। বিদেশের মাটিতে বছরের পর বছর খেটে যে সামান্য সঞ্চয়টুকু করেছিলাম, তার পুরোটাই আমি তুলে দিই আসাদুলের হাতে।’
আফাজ উদ্দিন আরও বলেন, নিজের পরিচিত এবং আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকেও ধারদেনা করেন তিনি। এভাবেই তাঁর জীবনের সমস্ত সঞ্চয় এবং ধারদেনা করে মোট ২৪ লাখ টাকা দেন আসাদুলকে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের আগস্টে পরিচয় হওয়ার পর কানাডায় ভিসা করার খরচের কথা বলে ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৪ লাখ টাকা নেন আসাদুল। আসাদুলের দেওয়া বিকাশের কয়েকটি নম্বরে ওই টাকা পাঠানোর পরই শুরু হয় আফাজ উদ্দিনের মানসিক টানাপোড়েন। তিনি বারবার আসাদুলের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। বারবার বলা হয়, খুব শিগগির ভিসা চলে আসবে। পরে আসাদুলের সেই মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
মামলার এজাহারে কথিত আসাদুলের উল্লেখ করা মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে সেটি প্রথমে বন্ধ পাওয়া যায়। পরে ৪ জুন সন্ধ্যায় মুঠোফোন নম্বরটি খোলা পাওয়া যায়। প্রতারণার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মুঠোফোনের অপর প্রান্ত থেকে বলা হয়, তিনি আসাদুল নন। তাঁর নাম হানিফ। পরে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
এ ব্যাপারে বাদী রোকসানা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, মামলার অভিযুক্ত নিজেকে আসাদুল হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। বহুবার তিনি আসাদুলের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলতে চেয়েছিলেন; কিন্তু আসাদুল রাজি হননি।
রাজধানীর রায়েরবাগে দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে থাকেন রোকসানা আক্তার। স্বামীর পাঠানো টাকাতেই চলত তাঁদের সংসার। এই ২৪ লাখ টাকা জোগাড় করতে গিয়ে তাঁরা এখন প্রায় নিঃস্ব।
রোকসানা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘চার বছর আগে আমার বড় মেয়ে রাবেয়া অসুস্থ হয়ে মারা গেছে। মেয়েকে চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমাদের তখন আট লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আবার ২৪ লাখ টাকা স্বামীর জন্য খরচ হয়েছে। যাঁদের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিলাম, সেই টাকার সুদও দিতে হচ্ছে।’
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী প্রথম আলোকে বলেন, আফাজ উদ্দিনের মামলায় উল্লেখ করা বিকাশ নম্বরের সূত্র ধরে প্রতারক চক্রের প্রত্যেক সদস্যকে চিহ্নিত করে সিআইডির উচিত গ্রেপ্তার করা। এ চক্রের সঙ্গে একাধিক ব্যক্তি জড়িত।
এ ধরনের সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের প্রত্যেক সদস্যকে বিচারের আওতায় আনা উচিত বলে মন্তব্য করেন পিপি ওমর ফারুক ফারুকী।
ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে কারও উচিত নয় কোনো টাকা বিনিয়োগ করা। যেসব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স রয়েছে, যারা নিয়মিত বিদেশে লোক পাঠায়, সেসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিদেশে যাওয়া উচিত। তাহলে প্রতারিত হওয়ার সুযোগ কম থাকে।
সূত্র: প্রথম আলো
গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ জনের দেহে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তবে এই সময়ে করোনায় কারও প্রাণহানি হয়নি।
ঈদুল আজহার পর ট্রেনের ফিরতি যাত্রায় মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে যাত্রীদের অনুরোধ জানিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের সাবেক ‘সিটি মিনিস্টার’ টিউলিপ সিদ্দিকের কোনো চিঠি তারা পাননি।
ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে জনমনে সন্দেহের উদ্রেক হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।