logo
সুপ্রবাস

মালয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ২৫ বছর পূর্তি উদ্‌যাপন

রফিক আহমদ খান, মালয়েশিয়া২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
Copied!
মালয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ২৫ বছর পূর্তি উদ্‌যাপন

মালয়েশিয়ায় যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী নানা বর্ণিল আয়োজনে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্‌যাপিত হয়েছে।

২১ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) বিকেলে কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে বাংলাদেশের শহীদ দিবসকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ইউনেসকো কর্তৃক স্বীকৃতির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে কুয়ালালামপুর অ্যান্ড সেলেনগর চাইনিজ অ্যাসেম্বলি হলে আলোচনা, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী এবং বাংলাদেশসহ ১৩টি দেশের শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়েছে।

এতে বিভিন্ন দেশের উল্লেখ্যযোগ্যসংখ্যক রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক, জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ, কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান।

ভাষা শহীদ এবং জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে শামীম আহসান তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এখন সারা বিশ্বে ভাষাগত বৈচিত্র্য উদ্‌যাপনের দিনে পরিণত হয়েছে। ভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছে এবং স্বাধীনতার পথ দেখিয়েছে।’

FB_IMG_1740156726144

তিনি আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের গুরুত্ব তুলে ধরেন।

উপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশি এবং আগত বিদেশি অতিথিদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করে শামীম আহসান বলেন, ‘নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গুরুত্বপূর্ণ খাতে পরিবর্তনমূলক সংস্কার আনার মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করে বাংলাদেশ পুনর্গঠনের জন্য দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি রাষ্ট্রদূত কেনেডি মেয়ং অনন।

তিনি তাঁর বক্তৃব্যে ভাষাগত বৈচিত্র্যের গুরুত্ব এবং বাংলাদেশ-মালয়েশিয়ার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

এ পর্বে জাকার্তার ইউনেসকোর আঞ্চলিক অফিসের কান্ট্রি ডিরেক্টর মাকি কাতসুনো-হায়াশিকাওয়ার ধারণকৃত বক্তব্য প্রচারিত হয়। মাকি কাতসুনো-হায়াশিকাওয়া তাঁর ধারণকৃত বক্তব্যে বহুভাষিকতা রক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি শিক্ষায় মাতৃভাষার ব্যবহার ও ভাষা সংরক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোকপাত করেন।

এরপর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ওপর একটি প্রামণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

FB_IMG_1740156729236

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশের সেন্টার ফর অল্টারনেটিভসের পরিচালক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ, ইউএনএইচসিআরের মালয়েশিয়ার ডেপুটি কান্ট্রি রিপ্রেসেন্টিটিভ লেইলা নাগমানোভা ও মালয়েশিয়ার সিটি ইউনিভার্সিটির সিনিয়র লেকচারার ড. রামিন হাজিনাফার্ড।

আলোচকেরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে সকল ভাষাভাষীর ঐক্যের চেতনার কথা বলেন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে তারা ঐক্যের একটি শক্তিশালী ও অনুপ্রেরণামূলক বহিঃপ্রকাশ হিসেবে বর্ণনা করেন। তারা বহুভাষিকতার প্রসারে মাতৃভাষা ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

প্যানেল আলোচনার মডারেটর ছিলেন ডেপুটি হাইকমিশনার মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাস্তগীর।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে ১৩টি দেশের শিল্পীদের সমন্বয়ে একটি বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, নাইজেরিয়া, রাশিয়ান ফেডারেশন, সুদান, তানজানিয়া, নেপাল, জাম্বিয়া, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, কিরগিজিস্তান, মেক্সিকো, বাংলাদেশ হাইকমিশন পরিবারের শিল্পীদের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা দর্শকদের বিমোহিত করে। একই মঞ্চে বিভিন্ন দেশের শিল্পীদের বর্ণিল পরিবেশনা এক অনন্য সাংস্কৃতিক সম্প্রীতির বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।

FB_IMG_1740156708872

অনুষ্ঠানে হাইকমিশনারের সহধর্মিণী পেন্ডোরা চৌধুরী, কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারবর্গ, বিভিন্ন দূতাবাসের কূটনীতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, সাংবাদিক এবং বিপুলসংখ্যক প্রবাসী তাদের পরিবারসহ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন হাইকমিশনের মিনিস্টার (রাজনৈতিক) ফারহানা আহমেদ চৌধুরী। তাঁর উপস্থাপনা অতিথিদের বিমোহিত করে রাখে।

এর আগে অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে হাইকমিশন প্রাঙ্গণে হাইকমিশনার মো. শামীম আহসানের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মাধ্যমে দিনব্যাপী কর্মসূচির সূচনা হয়। এরপর প্রভাতফেরির মাধ্যমে হাইকমিশনের অস্থায়ী শহীদ মিনারের বেদিতে হাইকমিশনারের নেতৃত্বে হাইকমিশন পরিবারের সদস্যরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে মালয়েশিয়ায় স্থানীয় কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ এবং সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংস্থার সদস্যবৃন্দ পর্যায়ক্রমে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। মূল আলোচনার শুরুতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত এবং এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

FB_IMG_1740156731828

দিবসটিকে কেন্দ্র করে প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ এবং এ দিবস উপলক্ষে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

আলোচনা সভায় মূল বক্তব্যে হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরেন।

তিনি উন্নত দেশ গঠনে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের একযোগে কাজ করার উদাত্ত আহবান জানান। তিনি মালয়েশিয়ায় একটি বাংলা স্কুল ও শহীদ মিনার স্থাপনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

আরও পড়ুন

ওমানে বাংলাদেশ সোশ্যাল ক্লাবের বৃহত্তর কুমিল্লা উইংয়ের ইফতার

ওমানে বাংলাদেশ সোশ্যাল ক্লাবের বৃহত্তর কুমিল্লা উইংয়ের ইফতার

ওমানে বাংলাদেশ সোশ্যাল ক্লাবের বৃহত্তর কুমিল্লা উইংয়ের আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২২ মার্চ) রাজধানী মাস্কাটের আল-ফালাজ ৪ স্টার হোটেলে সম্প্রতি আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে কয়েক শ প্রবাসী বাংলাদেশি অংশগ্রহণ করেন।

২ দিন আগে

কুয়ালালামপুরে চট্টগ্রাম সমিতি, মালয়েশিয়ার ইফতার

কুয়ালালামপুরে চট্টগ্রাম সমিতি, মালয়েশিয়ার ইফতার

চট্টগ্রাম সমিতি, মালয়েশিয়া দেশটির রাজধানী কুয়ালালামপুর ইফতার ও দোয়া মাহফিল করেছে। রোববার (২৩ মার্চ) কুয়ালালামপুরের হাংতুয়ায় চকোলেট রেস্টুরেন্টে এই ইফতার মাহফিল আয়োজন করা হয়।

৩ দিন আগে

দুবাইয়ে প্রবাসী সাংবাদিক সমিতির ইফতার

দুবাইয়ে প্রবাসী সাংবাদিক সমিতির ইফতার

সংযুক্ত আরব আমিরাতপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিকদের প্রথম ও পুরনো সংগঠন প্রবাসী সাংবাদিক সমিতির (প্রসাস) উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৪ মার্চ (সোমবার) দুবাইয়ের পিংক সেলসি হোটেলে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

৩ দিন আগে

আবুধাবির বাংলাদেশ দূতাবাসে গণহত্যা দিবস পালন

আবুধাবির বাংলাদেশ দূতাবাসে গণহত্যা দিবস পালন

সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালিত হয়েছে।

৩ দিন আগে