
সৈয়দ ইজাজ আহসান

উন্নয়নশীল দেশগুলোতে গবেষণাকে অনেক সময় বিলাসিতা বলে মনে করা হয়। এর প্রধান কারণ হলো আর্থিক সীমাবদ্ধতা। অথচ উন্নত দেশগুলো প্রতিবছর গবেষণায় ব্যয় করে বিপুল অঙ্কের অর্থ—যা আমাদের কল্পনাকেও বিস্মিত করে।
কেন এই বিপুল বিনিয়োগ? কারণ গবেষণাই আধুনিক সভ্যতার অগ্রগতির মূল চালিকাশক্তি। নিত্যদিনের গৃহস্থালি সামগ্রী থেকে মহাকাশযান ও কৃত্রিম উপগ্রহ—সব ক্ষেত্রেই গবেষণার অবদান অপরিসীম। বর্তমান বিশ্বের অন্যতম বড় অর্থনৈতিক শক্তি চীনের উত্থানের পেছনেও রয়েছে দীর্ঘমেয়াদি গবেষণা ও উদ্ভাবন। গবেষণার মাধ্যমে কিছু ক্ষেত্রে চীন আজ আমেরিকাকেও পেছনে ফেলছে। বিশ্বের যে দেশ যত উন্নত, সে দেশের গবেষণায় বিনিয়োগও তত বেশি—এটাই বাস্তবতা।
গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হলো জ্ঞান বৃদ্ধি ও নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করা। আর এই নতুন জ্ঞান প্রয়োগের মাধ্যমেই সমাজ, অর্থনীতি ও দেশ উন্নততর অবস্থানে পৌঁছে যায়। কৃষি, চিকিৎসা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, যোগাযোগ—সবক্ষেত্রে গবেষণা ইতিমধ্যেই যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছে।
তবে এ প্রশ্নও উঠে আসে—গবেষণার ফল কার জন্য? এবং গবেষণা কি কখনো মানবসভ্যতার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে? উদাহরণ হিসেবে পরমাণু গবেষণাকে নেওয়া যায়। এই গবেষণার মাধ্যমে শক্তি, কৃষি, চিকিৎসা ও শিল্পে বিশাল অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এ শক্তি দিয়েই তৈরি হয়েছে পরমাণু বোমা, যার ভয়াবহতা হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে মানবজাতি প্রত্যক্ষ করেছে। আবার ইতিহাসে দেখা যায়, অনেক যুগে গবেষণার সুফল উপভোগ করত শুধু রাজা-বাদশাহ ও তাদের অনুচরেরা; সাধারণ মানুষের জীবনে তার ছোঁয়া লাগেনি। মিসরের পিরামিড, ফেরাউনের মমি কিংবা আগ্রার তাজমহল—এসব স্থাপত্যের পেছনে বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ব্যবহূত হলেও তা ছিল শাসকশ্রেণির জন্য, জনকল্যাণের জন্য নয়। আর তাই এইসব জ্ঞান ও দক্ষতা সময়ের করালগ্রাসে হারিয়ে গেছে।
সময়ের প্রবাহে পরিস্থিতি বদলে গেছে। এখন গবেষণার ফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে যায়। আর বিশ্বায়নের কল্যাণে গবেষণাকে বাণিজ্যিকভাবে কাজে লাগানোর সুযোগও বেড়েছে বহুগুণে। ফলে গবেষণায় বড় বিনিয়োগকারী দেশগুলোই দ্রুত উন্নত হয়ে উঠেছে। এ থেকেই বোঝা যায়—কোনো দেশকে উন্নতি করতে হলে গবেষণায় বিনিয়োগ অপরিহার্য।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে গেলেও গবেষণায় বিনিয়োগ এখনো সন্তোষজনক নয়। তবে কৃষিক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম লক্ষ করা যায়। কৃষিতে অভাবনীয় গবেষণা সাফল্যের কারণেই ৫৫ হাজার বর্গমাইলের ঘনবসতিপূর্ণ বাংলাদেশ আজ খাদ্য ঘাটতিমুক্ত। পাশাপাশি মৎস্য, পশুপালন, ফলমূল ও সবজি উৎপাদনেও হয়েছে বহু উন্নতি। কৃষিবিজ্ঞানীদের অক্লান্ত পরিশ্রম বাংলাদেশের খাদ্যনিরাপত্তার ভিত্তি গড়ে দিয়েছে—যা আফ্রিকার বহু উর্বর জমির দেশও অর্জন করতে পারেনি।
অন্য ক্ষেত্রে বিচ্ছিন্ন গবেষণা থাকলেও তা পর্যাপ্ত নয়। প্রযুক্তি, চিকিৎসা, সামুদ্রিক সম্পদ আহরণ, খনিজ সম্পদ ব্যবস্থাপনা, উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থাপনায় এখনো বড় ঘাটতি আছে। এসব ক্ষেত্রে লক্ষ্যভিত্তিক গবেষণায় বিনিয়োগ করলে বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে এগিয়ে যেতে পারবে।
গবেষকের অভাব আছে কি?
বাংলাদেশে মেধাবী গবেষকের অভাব নেই। পাটের জিনম কোড উন্মোচনে বাংলাদেশি বিজ্ঞানীরা বিশ্বব্যাপী সম্মান অর্জন করেছেন। আরও অনেক বাংলাদেশি গবেষক দেশে-বিদেশে সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন। তাই মূল চ্যালেঞ্জ প্রতিভা নয়; চ্যালেঞ্জ হলো গবেষণা–বান্ধব নীতি, পর্যাপ্ত অর্থায়ন ও গবেষণার উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করা।
বিশ্ববাজার, প্রতিযোগিতা ও গবেষণার গুরুত্ব
আজকের বিশ্ববাজার ভয়াবহ প্রতিযোগিতামূলক, কিন্তু তাতে সম্ভাবনাও অসীম। অভ্যন্তরীণ বাজারের সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে বিশ্ববাজারই পারে কোনো দেশের অর্থনীতিকে প্রসারিত করতে। চীন এ সুযোগ সবচেয়ে বেশি কাজে লাগিয়েছে—এ কারণে তারা আজ বৈশ্বিক অর্থনৈতিক শক্তি।
বিশ্ববাজারে টিকে থাকতে হলে প্রয়োজন—
*পণ্য বহুমুখীকরণ
*প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা
*বাজার সম্প্রসারণ
এ সবই নির্ভর করে গবেষণার ওপর।
বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার এখনো সীমিত—মূলত আমেরিকা ও পশ্চিম ইউরোপে কেন্দ্রীভূত, এবং প্রধান পণ্য গার্মেন্টস। কোভিড-১৯ দেখিয়ে দিয়েছে, এই নির্ভরতা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ।
আফ্রিকা, মধ্য এশিয়া ও ল্যাতিন আমেরিকায় বাংলাদেশের পণ্যের বিরাট সম্ভাবনা আছে। কিন্তু এসব বাজারে প্রবেশের উপযোগী গবেষণা এখনো যথেষ্ট নয়। নীতি–নির্ধারকদের তাই সক্রিয়ভাবে গবেষণাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় ও বেসরকারি খাতের ভূমিকা
বিশ্বের উন্নত দেশে গবেষণার কেন্দ্র হলো বিশ্ববিদ্যালয়। আমাদের দেশে পরিস্থিতি উল্টো—পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও গবেষণার সুযোগ সীমিত, বাজেটও খুব কম।
বেসরকারি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর করপোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি (সিএসআর) তহবিল যদি গবেষণায় বরাদ্দের বাধ্যবাধকতা দেওয়া যায়, তবে বড় একটি অর্থনৈতিক উৎস তৈরি হবে। আমেরিকা ও ইউরোপের বহু গবেষণা তহবিল এভাবেই গড়ে উঠেছে। ব্যবসায়ীরা নিজস্ব পণ্য উন্নয়নেও এই গবেষণার ফল কাজে লাগাতে পারবেন।
শেষ কথা
বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনার দেশ—কৃষি, শিল্প, পর্যটন, সমুদ্র ও খনিজ সম্পদসহ প্রায় সব ক্ষেত্রেই বিশাল সুযোগ রয়েছে। বিপুল কর্মক্ষম জনশক্তিও রয়েছে। এখন প্রয়োজন লক্ষ্যভিত্তিক, মানসম্মত ও প্রয়োগযোগ্য গবেষণায় বিনিয়োগ।
গবেষণায় সঠিক বিনিয়োগ ও প্রয়োগ নিশ্চিত করতে পারলে বাংলাদেশ খুব দ্রুতই উন্নত দেশের সারিতে পৌঁছে যেতে পারবে—এটাই প্রত্যাশা।
সৈয়দ ইজাজ আহসান: ইমেইল: [email protected]

উন্নয়নশীল দেশগুলোতে গবেষণাকে অনেক সময় বিলাসিতা বলে মনে করা হয়। এর প্রধান কারণ হলো আর্থিক সীমাবদ্ধতা। অথচ উন্নত দেশগুলো প্রতিবছর গবেষণায় ব্যয় করে বিপুল অঙ্কের অর্থ—যা আমাদের কল্পনাকেও বিস্মিত করে।
কেন এই বিপুল বিনিয়োগ? কারণ গবেষণাই আধুনিক সভ্যতার অগ্রগতির মূল চালিকাশক্তি। নিত্যদিনের গৃহস্থালি সামগ্রী থেকে মহাকাশযান ও কৃত্রিম উপগ্রহ—সব ক্ষেত্রেই গবেষণার অবদান অপরিসীম। বর্তমান বিশ্বের অন্যতম বড় অর্থনৈতিক শক্তি চীনের উত্থানের পেছনেও রয়েছে দীর্ঘমেয়াদি গবেষণা ও উদ্ভাবন। গবেষণার মাধ্যমে কিছু ক্ষেত্রে চীন আজ আমেরিকাকেও পেছনে ফেলছে। বিশ্বের যে দেশ যত উন্নত, সে দেশের গবেষণায় বিনিয়োগও তত বেশি—এটাই বাস্তবতা।
গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হলো জ্ঞান বৃদ্ধি ও নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করা। আর এই নতুন জ্ঞান প্রয়োগের মাধ্যমেই সমাজ, অর্থনীতি ও দেশ উন্নততর অবস্থানে পৌঁছে যায়। কৃষি, চিকিৎসা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, যোগাযোগ—সবক্ষেত্রে গবেষণা ইতিমধ্যেই যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছে।
তবে এ প্রশ্নও উঠে আসে—গবেষণার ফল কার জন্য? এবং গবেষণা কি কখনো মানবসভ্যতার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে? উদাহরণ হিসেবে পরমাণু গবেষণাকে নেওয়া যায়। এই গবেষণার মাধ্যমে শক্তি, কৃষি, চিকিৎসা ও শিল্পে বিশাল অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এ শক্তি দিয়েই তৈরি হয়েছে পরমাণু বোমা, যার ভয়াবহতা হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে মানবজাতি প্রত্যক্ষ করেছে। আবার ইতিহাসে দেখা যায়, অনেক যুগে গবেষণার সুফল উপভোগ করত শুধু রাজা-বাদশাহ ও তাদের অনুচরেরা; সাধারণ মানুষের জীবনে তার ছোঁয়া লাগেনি। মিসরের পিরামিড, ফেরাউনের মমি কিংবা আগ্রার তাজমহল—এসব স্থাপত্যের পেছনে বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ব্যবহূত হলেও তা ছিল শাসকশ্রেণির জন্য, জনকল্যাণের জন্য নয়। আর তাই এইসব জ্ঞান ও দক্ষতা সময়ের করালগ্রাসে হারিয়ে গেছে।
সময়ের প্রবাহে পরিস্থিতি বদলে গেছে। এখন গবেষণার ফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে যায়। আর বিশ্বায়নের কল্যাণে গবেষণাকে বাণিজ্যিকভাবে কাজে লাগানোর সুযোগও বেড়েছে বহুগুণে। ফলে গবেষণায় বড় বিনিয়োগকারী দেশগুলোই দ্রুত উন্নত হয়ে উঠেছে। এ থেকেই বোঝা যায়—কোনো দেশকে উন্নতি করতে হলে গবেষণায় বিনিয়োগ অপরিহার্য।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে গেলেও গবেষণায় বিনিয়োগ এখনো সন্তোষজনক নয়। তবে কৃষিক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম লক্ষ করা যায়। কৃষিতে অভাবনীয় গবেষণা সাফল্যের কারণেই ৫৫ হাজার বর্গমাইলের ঘনবসতিপূর্ণ বাংলাদেশ আজ খাদ্য ঘাটতিমুক্ত। পাশাপাশি মৎস্য, পশুপালন, ফলমূল ও সবজি উৎপাদনেও হয়েছে বহু উন্নতি। কৃষিবিজ্ঞানীদের অক্লান্ত পরিশ্রম বাংলাদেশের খাদ্যনিরাপত্তার ভিত্তি গড়ে দিয়েছে—যা আফ্রিকার বহু উর্বর জমির দেশও অর্জন করতে পারেনি।
অন্য ক্ষেত্রে বিচ্ছিন্ন গবেষণা থাকলেও তা পর্যাপ্ত নয়। প্রযুক্তি, চিকিৎসা, সামুদ্রিক সম্পদ আহরণ, খনিজ সম্পদ ব্যবস্থাপনা, উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থাপনায় এখনো বড় ঘাটতি আছে। এসব ক্ষেত্রে লক্ষ্যভিত্তিক গবেষণায় বিনিয়োগ করলে বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে এগিয়ে যেতে পারবে।
গবেষকের অভাব আছে কি?
বাংলাদেশে মেধাবী গবেষকের অভাব নেই। পাটের জিনম কোড উন্মোচনে বাংলাদেশি বিজ্ঞানীরা বিশ্বব্যাপী সম্মান অর্জন করেছেন। আরও অনেক বাংলাদেশি গবেষক দেশে-বিদেশে সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন। তাই মূল চ্যালেঞ্জ প্রতিভা নয়; চ্যালেঞ্জ হলো গবেষণা–বান্ধব নীতি, পর্যাপ্ত অর্থায়ন ও গবেষণার উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করা।
বিশ্ববাজার, প্রতিযোগিতা ও গবেষণার গুরুত্ব
আজকের বিশ্ববাজার ভয়াবহ প্রতিযোগিতামূলক, কিন্তু তাতে সম্ভাবনাও অসীম। অভ্যন্তরীণ বাজারের সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে বিশ্ববাজারই পারে কোনো দেশের অর্থনীতিকে প্রসারিত করতে। চীন এ সুযোগ সবচেয়ে বেশি কাজে লাগিয়েছে—এ কারণে তারা আজ বৈশ্বিক অর্থনৈতিক শক্তি।
বিশ্ববাজারে টিকে থাকতে হলে প্রয়োজন—
*পণ্য বহুমুখীকরণ
*প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা
*বাজার সম্প্রসারণ
এ সবই নির্ভর করে গবেষণার ওপর।
বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার এখনো সীমিত—মূলত আমেরিকা ও পশ্চিম ইউরোপে কেন্দ্রীভূত, এবং প্রধান পণ্য গার্মেন্টস। কোভিড-১৯ দেখিয়ে দিয়েছে, এই নির্ভরতা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ।
আফ্রিকা, মধ্য এশিয়া ও ল্যাতিন আমেরিকায় বাংলাদেশের পণ্যের বিরাট সম্ভাবনা আছে। কিন্তু এসব বাজারে প্রবেশের উপযোগী গবেষণা এখনো যথেষ্ট নয়। নীতি–নির্ধারকদের তাই সক্রিয়ভাবে গবেষণাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় ও বেসরকারি খাতের ভূমিকা
বিশ্বের উন্নত দেশে গবেষণার কেন্দ্র হলো বিশ্ববিদ্যালয়। আমাদের দেশে পরিস্থিতি উল্টো—পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও গবেষণার সুযোগ সীমিত, বাজেটও খুব কম।
বেসরকারি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর করপোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি (সিএসআর) তহবিল যদি গবেষণায় বরাদ্দের বাধ্যবাধকতা দেওয়া যায়, তবে বড় একটি অর্থনৈতিক উৎস তৈরি হবে। আমেরিকা ও ইউরোপের বহু গবেষণা তহবিল এভাবেই গড়ে উঠেছে। ব্যবসায়ীরা নিজস্ব পণ্য উন্নয়নেও এই গবেষণার ফল কাজে লাগাতে পারবেন।
শেষ কথা
বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনার দেশ—কৃষি, শিল্প, পর্যটন, সমুদ্র ও খনিজ সম্পদসহ প্রায় সব ক্ষেত্রেই বিশাল সুযোগ রয়েছে। বিপুল কর্মক্ষম জনশক্তিও রয়েছে। এখন প্রয়োজন লক্ষ্যভিত্তিক, মানসম্মত ও প্রয়োগযোগ্য গবেষণায় বিনিয়োগ।
গবেষণায় সঠিক বিনিয়োগ ও প্রয়োগ নিশ্চিত করতে পারলে বাংলাদেশ খুব দ্রুতই উন্নত দেশের সারিতে পৌঁছে যেতে পারবে—এটাই প্রত্যাশা।
সৈয়দ ইজাজ আহসান: ইমেইল: [email protected]
বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে গেলেও গবেষণায় বিনিয়োগ এখনো সন্তোষজনক নয়। তবে কৃষিক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম লক্ষ করা যায়। অন্য ক্ষেত্রে বিচ্ছিন্ন গবেষণা থাকলেও তা পর্যাপ্ত নয়। প্রযুক্তি, চিকিৎসা, সামুদ্রিক সম্পদ আহরণ, খনিজ সম্পদ ব্যবস্থাপনা, উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থাপনায় এখনো বড় ঘাটতি আছে।
বসার ঘরে ঢুকতেই দেখি, বেগম খালেদা জিয়া বসে আছেন। সাদামাটা কিন্তু দীপ্তিময় পোশাকে। তার ভেতর একটা রাজকীয় নীরবতা, আবার এক মায়ের কোমলতা। তিনি আমার দিকে তাকিয়ে হালকা মাথা নেড়ে বললেন, “এসো, বসো।”
মেঠো পথ ধরে সাইকেল চালিয়ে যায় বেনু। তার কানে বাজে আত্মহত্যা করার আগে মুকিতের লেখা শেষ চিঠির কথাগুলো, "তুমি বলেছিলে, আমার জন্য তুমি জীবন দেবেও না, নেবেও না। আমি রাখলাম কথা। শুধু চলে যাচ্ছি, চিরতরে...ভালো থেকো, শিউলি।"
জবাবদিহিতা ছাড়া কোনো সংস্কার সফল হবে না। যেকোনো অনিয়ম প্রকাশ পেলে দ্রুত তদন্ত, দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি এবং বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এগুলো শুধু আইন প্রয়োগ নয়, বরং এক ধরনের মানসিক বার্তাও তৈরি করে যে অপরাধী রেহাই পায় না। বাংলাদেশে ব্যাংক খাতে লুটপাটের প্রধান শক্তি ছিল বিচারহীনতা।