
মঞ্জুর চৌধুরী

অ্যাপার্টমেন্টে নতুন ভাড়াটে এসেছে। তরুণ–তরুণী। আমরা অ্যাপার্টমেন্টের সামনে যেখানে গাড়ি পার্ক করি, সেটা এবটা ট্রাক দিয়ে ব্লক করে মালপত্র আনলোড করছে।
আমার বউ তাদের জিজ্ঞেস করল, ওটা সরবে কতক্ষণে।
তরুণ–তরুণী বলল, পাঁচ মিনিটেই।
আমরা ‘কোনো অসুবিধা নেই’ বলে হাসিমুখে অন্য পার্কিংয়ে গাড়ি পার্ক করলাম।
আমরা বাজার নিয়ে ফিরেছিলাম। বউ কিছু ব্যাগ হাতে নিয়ে আগে আগে ঘরে চলে গেল।
আমি গাড়ি পার্ক করে বাজারের অবশিষ্ট ব্যাগ নিয়ে আস্তে ধীরে ঘরে ফিরছি।
দেখি ট্রাক থেকে বিরাট গাবদা সাইজের একটা সোফা নামল। ওটা ঠিকমতোন ধরতেই পারছে না মেয়েটা। আমার দিকে করুণ চোখে তাকাল।
জিজ্ঞেস করলাম, ‘সাহায্য লাগবে?’
মেয়েটা বলল, ‘অনেক উপকার হবে তাহলে!’
বললাম, ‘আসছি।’
কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই নিজের বাজারের ব্যাগ বাসায় রেখে উপস্থিত হলাম। ওরা তখনো ঠিকমতোন সোফা ধরতে পারেনি।
মেয়েটি বলল, ‘হ্যালো, আমি গ্যাবি!’
গ্যাবি মানে গ্যাব্রিয়েল বা এই জাতীয় কোনো নাম হবে। আমেরিকানরা নামকে ছোট করে ফেলে।
আমি নিজের নাম বললাম। তারপর ‘কবে মুভ করলে? সাধারণ ভদ্রতা করে জানতে চাইলাম।
‘আজকেই।’ মেয়েটা উচ্ছসিত উত্তর দিল।
‘ভালো। আমরা খুব শিগগিরই ছেড়ে যাচ্ছি।’
‘তাই! ওয়াও, গ্রেট!’

আমি বললাম, ‘আগের বাড়ি ভাড়া দিয়ে এখানে উঠেছিলাম, এখন বাড়ি কিনে চলে যাচ্ছি।’
মেয়েটার সাথের ছেলেটা গম্ভীর মুখে সোফার প্যাকেট ছেঁড়ায় ব্যস্ত। নিজের নাম, হাই, হ্যালো কিছুই বলছে না। ওকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে, সে মনে মনে ভাবছে যে, আমি সুযোগ পেলেই ওর বউ/গার্লফ্রেন্ড নিয়ে পালাব।
ছেলেটার গম্ভীর মুখ দেখে আমার মেজাজ খারাপ হলো। মনে মনে বললাম, আমার চেহারা দেখে কি আমাকে খুব খারাপ লোক বলে মনে হয়?
এর মধ্যে ছেলেটা প্যাকেট ছিঁড়ে মেয়েটাকে বলল, ‘এখন ধরতে পারবে?’
মেয়েটা ‘হ্যাঁ’ বলে দুই হাত দিয়ে সোফার একদিক তুলল।
ছেলেটা বলল, ‘গ্রেট!’
আমি বললাম, ‘অ্যাপার্টমেন্টের দরজা দিয়ে এই জিনিস ঢুকাতে পারবে তো?’
ছেলেটা বলল, ‘ওটা আমরা ম্যানেজ করে নেব।
ছেলেটার বলার ভঙ্গি হচ্ছে, ‘এখন বিদায় হ ব্যাটা!’
আমি মনে মনে ভাবলাম, ওরা সোফা ঢোকাতে পারলে বা না পারলে আমার কী? অফিসের কাজ জমে আছে। চলে এলাম।
নিজের অ্যাপার্টমেন্টে ঢুকতে যাব, এমন সময়ে দেখি এক বাচ্চাসহ হাঁটতে বের হওয়া সাউথ ইন্ডিয়ান মধ্যবয়স্ক ভদ্রলোক ওদের পাশ দিয়ে যাবার সময়ে জিজ্ঞেস করছেন, ‘তোমাদের সাহায্য লাগবে?’
এটা এই দেশের সাধারণ ভদ্রতা।
এবার দেখি ছেলেটা বলছে, ‘শিওর!’
কয়েক সেকেন্ডও যায়নি, এরই মাঝে ‘আমরা ম্যানেজ করে নেব’ গায়েব হয়ে গেল?
আমি মনে মনে ছেলেটাকে একটা খারাপ গালি দিলাম।
দুপুরে ছেলেকে স্কুল থেকে নিয়ে বাসায় ফিরছি। দেখি আরেকটা ট্রাক থেকে ওয়াশিং মেশিন নামাচ্ছে। বিরাট গাবদা সাইজ। দুই/তিনতলা সিঁড়ি বেয়ে ওঠাতে হবে। বেচারার গার্লফ্রেন্ড নেই পাশে। এবার দেখি ছেলেলা আমার দিকে তাকায়, ‘হাই’ দেয়।
আমিও ‘হ্যালো’ বলে বাসায় চলে এলাম। জিজ্ঞেস করলাম না, ‘সাহায্য লাগবে?’ কী দরকার?
তারপর বিকেল হয়ে গেল। সন্ধ্যার পরও দেখি ওয়াশিং মেশিনসহ ট্রাক সেখানেই পড়ে আছে।
তারপরে আরও দুই দিন গেল। দেখি মুভিং ট্রাকটা বাড়ির সামনে পার্ক করে রাখা। এখনো নিশ্চয় ভেতরে ওয়াশিং মেশিনটা পড়ে আছে। মনে মনে থাকুক বলে বললাম,তুই নিজে ম্যানেজ কর!
*মঞ্জুর চৌধুরী: ডালাস, টেক্সাস, যুক্তরাষ্ট্র

অ্যাপার্টমেন্টে নতুন ভাড়াটে এসেছে। তরুণ–তরুণী। আমরা অ্যাপার্টমেন্টের সামনে যেখানে গাড়ি পার্ক করি, সেটা এবটা ট্রাক দিয়ে ব্লক করে মালপত্র আনলোড করছে।
আমার বউ তাদের জিজ্ঞেস করল, ওটা সরবে কতক্ষণে।
তরুণ–তরুণী বলল, পাঁচ মিনিটেই।
আমরা ‘কোনো অসুবিধা নেই’ বলে হাসিমুখে অন্য পার্কিংয়ে গাড়ি পার্ক করলাম।
আমরা বাজার নিয়ে ফিরেছিলাম। বউ কিছু ব্যাগ হাতে নিয়ে আগে আগে ঘরে চলে গেল।
আমি গাড়ি পার্ক করে বাজারের অবশিষ্ট ব্যাগ নিয়ে আস্তে ধীরে ঘরে ফিরছি।
দেখি ট্রাক থেকে বিরাট গাবদা সাইজের একটা সোফা নামল। ওটা ঠিকমতোন ধরতেই পারছে না মেয়েটা। আমার দিকে করুণ চোখে তাকাল।
জিজ্ঞেস করলাম, ‘সাহায্য লাগবে?’
মেয়েটা বলল, ‘অনেক উপকার হবে তাহলে!’
বললাম, ‘আসছি।’
কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই নিজের বাজারের ব্যাগ বাসায় রেখে উপস্থিত হলাম। ওরা তখনো ঠিকমতোন সোফা ধরতে পারেনি।
মেয়েটি বলল, ‘হ্যালো, আমি গ্যাবি!’
গ্যাবি মানে গ্যাব্রিয়েল বা এই জাতীয় কোনো নাম হবে। আমেরিকানরা নামকে ছোট করে ফেলে।
আমি নিজের নাম বললাম। তারপর ‘কবে মুভ করলে? সাধারণ ভদ্রতা করে জানতে চাইলাম।
‘আজকেই।’ মেয়েটা উচ্ছসিত উত্তর দিল।
‘ভালো। আমরা খুব শিগগিরই ছেড়ে যাচ্ছি।’
‘তাই! ওয়াও, গ্রেট!’

আমি বললাম, ‘আগের বাড়ি ভাড়া দিয়ে এখানে উঠেছিলাম, এখন বাড়ি কিনে চলে যাচ্ছি।’
মেয়েটার সাথের ছেলেটা গম্ভীর মুখে সোফার প্যাকেট ছেঁড়ায় ব্যস্ত। নিজের নাম, হাই, হ্যালো কিছুই বলছে না। ওকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে, সে মনে মনে ভাবছে যে, আমি সুযোগ পেলেই ওর বউ/গার্লফ্রেন্ড নিয়ে পালাব।
ছেলেটার গম্ভীর মুখ দেখে আমার মেজাজ খারাপ হলো। মনে মনে বললাম, আমার চেহারা দেখে কি আমাকে খুব খারাপ লোক বলে মনে হয়?
এর মধ্যে ছেলেটা প্যাকেট ছিঁড়ে মেয়েটাকে বলল, ‘এখন ধরতে পারবে?’
মেয়েটা ‘হ্যাঁ’ বলে দুই হাত দিয়ে সোফার একদিক তুলল।
ছেলেটা বলল, ‘গ্রেট!’
আমি বললাম, ‘অ্যাপার্টমেন্টের দরজা দিয়ে এই জিনিস ঢুকাতে পারবে তো?’
ছেলেটা বলল, ‘ওটা আমরা ম্যানেজ করে নেব।
ছেলেটার বলার ভঙ্গি হচ্ছে, ‘এখন বিদায় হ ব্যাটা!’
আমি মনে মনে ভাবলাম, ওরা সোফা ঢোকাতে পারলে বা না পারলে আমার কী? অফিসের কাজ জমে আছে। চলে এলাম।
নিজের অ্যাপার্টমেন্টে ঢুকতে যাব, এমন সময়ে দেখি এক বাচ্চাসহ হাঁটতে বের হওয়া সাউথ ইন্ডিয়ান মধ্যবয়স্ক ভদ্রলোক ওদের পাশ দিয়ে যাবার সময়ে জিজ্ঞেস করছেন, ‘তোমাদের সাহায্য লাগবে?’
এটা এই দেশের সাধারণ ভদ্রতা।
এবার দেখি ছেলেটা বলছে, ‘শিওর!’
কয়েক সেকেন্ডও যায়নি, এরই মাঝে ‘আমরা ম্যানেজ করে নেব’ গায়েব হয়ে গেল?
আমি মনে মনে ছেলেটাকে একটা খারাপ গালি দিলাম।
দুপুরে ছেলেকে স্কুল থেকে নিয়ে বাসায় ফিরছি। দেখি আরেকটা ট্রাক থেকে ওয়াশিং মেশিন নামাচ্ছে। বিরাট গাবদা সাইজ। দুই/তিনতলা সিঁড়ি বেয়ে ওঠাতে হবে। বেচারার গার্লফ্রেন্ড নেই পাশে। এবার দেখি ছেলেলা আমার দিকে তাকায়, ‘হাই’ দেয়।
আমিও ‘হ্যালো’ বলে বাসায় চলে এলাম। জিজ্ঞেস করলাম না, ‘সাহায্য লাগবে?’ কী দরকার?
তারপর বিকেল হয়ে গেল। সন্ধ্যার পরও দেখি ওয়াশিং মেশিনসহ ট্রাক সেখানেই পড়ে আছে।
তারপরে আরও দুই দিন গেল। দেখি মুভিং ট্রাকটা বাড়ির সামনে পার্ক করে রাখা। এখনো নিশ্চয় ভেতরে ওয়াশিং মেশিনটা পড়ে আছে। মনে মনে থাকুক বলে বললাম,তুই নিজে ম্যানেজ কর!
*মঞ্জুর চৌধুরী: ডালাস, টেক্সাস, যুক্তরাষ্ট্র
দুপুরে ছেলেকে স্কুল থেকে নিয়ে বাসায় ফিরছি। দেখি আরেকটা ট্রাক থেকে ওয়াশিং মেশিন নামাচ্ছে। বিরাট গাবদা সাইজ। দুই/তিনতলা সিঁড়ি বেয়ে ওঠাতে হবে। বেচারার গার্লফ্রেন্ড নেই পাশে। এবার দেখি ছেলেলা আমার দিকে তাকায়, ‘হাই’ দেয়।
ষাটের দশক শুধু জেইনের জীবন নয়, বদলে দিল এক পুরো প্রজন্মকে। মানুষ শিখল প্রশ্ন করতে, প্রতিবাদ করতে, আর ভালোবাসতে। সত্যিই, এক নতুন সময়ের জন্ম হয়েছিল।
ওমান রাষ্ট্রীয়ভাবে শিক্ষাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যদি ভালো ভূমিকা রাখতে পারে তবে দীর্ঘমেয়াদে ওমানে বাংলাদেশের অবস্থান দৃঢ় হবে। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষা ও গবেষণাতেও অবদান রাখতে পারে।
বাংলাদেশের অর্থনীতিকে মজবুত করার জন্য রাজস্ব খাত ও আর্থিক খাতের সংস্কারকে সংহতভাবে এগিয়ে নিতে হবে। এটি শুধুমাত্র উন্নয়নের জন্য নয় বরং দেশের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।