logo
খবর

বাংলাদেশে গণপিটুনির ঘটনা বাড়ছে, ৭ মাসে নিহত ১১৯ জন: এইচআরএসএস

বিডিজেন ডেস্ক
বিডিজেন ডেস্ক০৬ মার্চ ২০২৫
Copied!
বাংলাদেশে গণপিটুনির ঘটনা বাড়ছে, ৭ মাসে নিহত ১১৯ জন: এইচআরএসএস
গণপিটুনি। প্রতীকী ছবি

বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের ৭ মাসে গণপিটুনির অন্তত ১১৪টি ঘটনা ঘটেছে। এতে ১১৯ জন নিহত এবং ৭৪ জন আহত হয়েছে। আর গত ১০ বছরে গণপিটুনিতে মারা গেছে কমপক্ষে ৭৯২ জন। আহত হয়েছে ৭৬৫ জন।

খবর প্রথম আলোর।

আজ বুধবার (৫ মার্চ) মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) এসব তথ্য জানিয়েছে।

এইচআরএসএস বলছে, সম্প্রতি গণপিটুনির মাধ্যমে মানুষ হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে। ডাকাত, চোর, ছিনতাইকারী সন্দেহেও গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। এসবের বাইরে ধর্মীয় অবমাননা এবং ছেলেধরার অভিযোগেও গণপিটুনির ঘটনা ঘটছে। গণপিটুনির ঘটনায় থানায় মামলা হলেও সুষ্ঠু তদন্ত ও অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিতের ঘটনা খুবই কম। এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিরা আইনের আওতায় না আসায় এ ধরনের ঘটনা থামছে না।

এইচআরএসএসের তথ্যমতে, গত ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২০১টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে ২০২৪ সালে। ওই বছর গণপিটুনিতে মারা গেছে ১৭৯ জন। আহত হয়েছে ৮৮ জন। ২০২৪ সালের মতো গণপিটুনির ঘটনা বেশি ঘটেছে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে। এই দুই বছর গণপিটুনিতে ২৩২ জন নিহত হয়।

এই মানবাধিকার সংস্থার হিসাব, এ বছর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে অন্তত ৩০টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছে ১৯ জন আর আহত হয়েছে ২০ জন।

বাংলাদেশে গণপিটুনির ঘটনা আগে ঘটলেও ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পালাবদলের পর এ ধরনের ঘটনা নতুন মাত্রা পায়। আগে চোর, ডাকাত, ছিনতাইকারী সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনা বেশি ঘটলেও এ সময় দলবদ্ধভাবে হামলার ঘটনা বেড়েছে, যা ইতিমধ্যে ‘মব’ নামে পরিচিতি পেয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরপর এ ধরনের ঘটনাকে মানুষের রাগ-ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখেন অনেকে। তবে ৬ মাস পর এসেও এ ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও অধিকারকর্মীরা এ জন্য সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করছে।

এর মধ্যে ৩ মার্চ রাতে চট্টগ্রামের এওচিয়া এলাকায় মাইকে ‘ডাকাত পড়ার’ ঘোষণা দিয়ে ২ জনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে দলবদ্ধভাবে গুলশানের একটি বাসায় ঢুকে ‘তল্লাশি’র নামে জিনিসপত্র তছনছ ও লুটপাট করা হয়েছে।

এইচআরএসএস বলছে, এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ডাকাতির ঘটনায় শরীয়তপুরে ৭ জনকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। এতে ৫ জন মারা যায়। এর এক দিন আগে রাজধানীর উত্তরায় ছিনতাইকারী সন্দেহে ২ ব্যক্তিকে পায়ে দড়ি বেঁধে উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখা হয়। এসব ঘটনার বাইরে বগুড়া, মাদারীপুর, টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম, খুলনা, চট্টগ্রামের মিরসরাই, ঢাকার যাত্রাবাড়ী, গাজীপুরের টঙ্গী, রাজশাহী ও বরিশালেও গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে।

বাংলাদেশে এ ধরনের সহিংসতা বৃদ্ধির পেছনে ৬ ধরনের কারণের কথা বলেছেন, এইচআরএসএসের নির্বাহী পরিচালক ইজাজুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রাজনৈতিক ক্ষোভের কারণে প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে গণপিটুনির ঘটনা ঘটাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিশেষত পুলিশ ও র‍্যাব এখনো পুরোপুরি কার্যকর নয়। আবার চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি বৃদ্ধি পাওয়ায় জনমনে ক্ষোভের কারণে অনেকে সন্দেহ করে গণপিটুনির ঘটনা ঘটাচ্ছে।

ইজাজুল ইসলাম বলেন, গণপিটুনির ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির নজির তেমন নেই, তাই অনেকেই আইন হাতে তুলে নিচ্ছে। এ ছাড়া. স্বার্থান্বেষী কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর অরাজকতা তৈরির চেষ্টা এবং এ বিষয়ে জনসচেতনতার অভাবে রয়েছে। এসব কারণে গণপিটুনির ঘটনা বেড়েছে।

হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি বলেছে, গণপিটুনি একটি দণ্ডনীয় অপরাধ ও মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তাই দেশের সব নাগরিককে আইন নিজের হাতে তুলে না নিতে আহ্বান জানিয়েছে এইচআরএসএস। সংস্থাটি বলছে, গণপিটুনির মতো ঘটনা এড়াতে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে সব নাগরিকের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন ও গণপিটুনির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

এইচআরএসএসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আইন অনুযায়ী কোনো অপরাধী ধরা পড়লে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করতে হবে। গণপিটুনিতে কোনো ব্যক্তি মারা গেলে ওই ঘটনায় অংশগ্রহণকারী সব ব্যক্তি সমনাভাবে দায়ী থাকবে। অপরাধী প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা যাবে না। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, কারও প্রতি নির্যাতন, অত্যাচার, নিষ্ঠুরতা ও অমানবিক আচরণ করা যাবে না।

সূত্র: প্রথম আলো

আরও পড়ুন

জুলাই সনদ কখনোই সংবিধানের ওপর প্রাধান্য পেতে পারে না: গণফোরাম

জুলাই সনদ কখনোই সংবিধানের ওপর প্রাধান্য পেতে পারে না: গণফোরাম

জুলাই সনদ একটি রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল। এই রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল কখনোই সংবিধানের ওপরে প্রাধান্য পেতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় আপত্তির একটি জায়গা।’

৬ ঘণ্টা আগে

আসনভিত্তিক বা সংখ্যানুপাতিক কোনোটিই একেবারে নিখুঁত নয়: বদিউল আলম মজুমদার

আসনভিত্তিক বা সংখ্যানুপাতিক কোনোটিই একেবারে নিখুঁত নয়: বদিউল আলম মজুমদার

নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, তারা কমিশনের পক্ষ থেকে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের প্রস্তাব করেছেন। এর মধ্যে নিম্নকক্ষ হবে বর্তমান আসনভিত্তিক। আর উচ্চকক্ষ হবে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (পিআর)। সংবিধান সংস্কার কমিশনও একই রকম প্রস্তাব করেছে।

৬ ঘণ্টা আগে

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য শেখ হাসিনার বিচার অবশ্যই হতে হবে: মির্জা ফখরুল

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য শেখ হাসিনার বিচার অবশ্যই হতে হবে: মির্জা ফখরুল

গুম-খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচার দাবি করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

১ দিন আগে

শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রকাশ করলে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা: অন্তর্বর্তী সরকার

শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রকাশ করলে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা: অন্তর্বর্তী সরকার

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার নিয়ে গণমাধ্যমকে সতর্ক করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ শুক্রবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস উইং এক বিবৃতিতে এই সতর্কবার্তা জানিয়েছে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, শেখ হাসিনার বক্তব্য কেউ ভবিষ্যতে প্রকাশ করলে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

১ দিন আগে