logo
খবর

বাংলাদেশে আইন প্রয়োগে নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার আহ্বান এইচআরডব্লিউর

বিডিজেন ডেস্ক
বিডিজেন ডেস্ক১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
Copied!
বাংলাদেশে আইন প্রয়োগে নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার আহ্বান এইচআরডব্লিউর
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)

বাংলাদেশের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো যেন তাদের কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা বজায় রাখে এবং রাজনৈতিক সহিংসতায় অভিযুক্ত করার ক্ষেত্রে আইনের শাসনের প্রতি সম্মান জানায়, তা নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) এইচআরডব্লিউর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরপেক্ষতার পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও বিক্ষোভের অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

বিবৃতিতে বলা হয়, জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৪ সালের আগস্টে আন্দোলনের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। ওই আন্দোলন দমন করতে গিয়ে পুলিশ, বর্ডার গার্ড (বিজিবি), র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়র (র‍্যাব), গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িয়ে পড়েছিল।

এইচআরডব্লিউ বলেছে, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার নিরাপত্তা খাত সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। অবশ্য সরকার ‘অপারেশন ডেভিল হান্টের জন্য সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে মোতায়েন করেছে। এই অভিযানে ইতিমধ্যে প্রায় ২ হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের সমর্থক।

এইচআরডব্লিউর এশিয়া অঞ্চলের উপপরিচালক মীনাক্ষী গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের দেড় দশকের নিপীড়নের পর বাংলাদেশ রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। তবে কর্তৃপক্ষগুলোকে অতীতের ভুলের পুনরাবৃত্তি করা উচিত হবে না। তার বদলে নিরপেক্ষতার সঙ্গে আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, বাংলাদেশে জুলাই–আগস্টে আন্দোলন দমনে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্বিচার গুলি, গণগ্রেপ্তার ও নির্যাতনের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। অনুমান করা হচ্ছে, ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ১ হাজার ৪০০ জন নিহত হয়েছে। তাদের বেশির ভাগই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়।

এইচআরডব্লিউ বলেছে, জাতিসংঘের প্রতিবেদনে একটি ‘হতাশাজনক চিত্র’ উঠে এসেছে, যেখানে ‘জাতীয়ভাবে যে ক্ষত তৈরি হয়েছে, তা থেকে সেরে ওঠার জন্য জবাবদিহি ও ন্যায়বিচার জরুরি।’

এইচআরডব্লিউর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ৭ ফেব্রুয়ারি সমর্থকদের উদ্দেশে ভারত থেকে বক্তৃতা দেওয়ার ঘোষণা দেন শেখ হাসিনা। ওই ঘোষণা ঘিরে সাম্প্রতিক সংঘাত শুরু হয়। যেসব শিক্ষার্থীসহ অন্যরা শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছিলেন, তারাই আবার বিক্ষোভ শুরু করেন। শেখ হাসিনার পরিবার ও দলের সদস্যদের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। বিক্ষোভকারীরা তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িও গুঁড়িয়ে দেয়, যাঁর নেতৃত্বে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছিল।

বিবৃতি অনুযায়ী, এর এক দিন বাদে ৮ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থী ও আওয়ামী লীগের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের পর অপারেশন ডেভিল হান্ট শুরু করা হয়। অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষণা দেয়, ‘পতিত স্বৈরাচারী সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট’ ব্যক্তিদের এই অভিযানের লক্ষ্যবস্তু করা হবে। ওই ব্যক্তিদের ‘ডেভিল’ বা ‘শয়তান’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়।

এইচআরডব্লিউ বলেছে, শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ ও বিক্ষোভের অধিকার আন্তর্জাতিক আইনের মাধ্যমে সুরক্ষিত একটি মৌলিক অধিকার। অন্তর্বর্তী সরকারকে এই অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। এমনকি সাবেক কর্তৃত্ববাদী সরকারের সমর্থকদেরও সমাবেশ ও বিক্ষোভের অধিকার রয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের মানদণ্ড অনুযায়ী, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও বিক্ষোভের অধিকারের সুরক্ষা প্রদান এবং এই অধিকার প্রয়োগের সুযোগ করে দেওয়া উচিত। একই সঙ্গে সমাবেশ ও বিক্ষোভ ঘিরে বলপ্রয়োগের আগে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে যতটা সম্ভব অহিংস পথ অবলম্বন করতে হবে।

বাংলাদেশে আইন–শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা অধ্যাপক ইউনূস সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বলে উল্লেখ করেছে এইচআরডব্লিউ। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আগামী মার্চে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের অধিবেশনে ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি প্রস্তাব আনার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে অন্তর্বর্তী সরকার। ওই প্রস্তাবে কারিগরি সহায়তা, আরও তদন্ত, তদারকি এবং জাতিসংঘ সমর্থিত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞদের দিয়ে প্রতিবেদন তৈরির জন্য অনুরোধ করা যেতে পারে।

মীনাক্ষী গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, শেখ হাসিনার সরকারের দমনপীড়নের কারণে বাংলাদেশের মানুষ ক্ষুব্ধ এবং তাদের জবাবদিহি ও ন্যায়বিচার পাওয়া উচিত। তবে তা হতে হবে মানবাধিকারের প্রতি সম্মান রেখে।

‘মব’ (উচ্ছৃঙ্খল জনতা) সহিংসতাসহ সব ধরনের অপরাধের শাস্তি নিশ্চিত করা উচিত উল্লেখ করে মীনাক্ষী গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘কিন্তু কর্তৃপক্ষ যখন বিরোধীদের ‘ডেভিল’ হিসেবে চিত্রায়িত করে, তখন তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিপীড়নকে বাড়িয়ে দিতে পারে, যা কখনো জবাবদিহির আওতায় আসেনি।’

আরও পড়ুন

অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ, ২২ মে শুনানি

অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ, ২২ মে শুনানি

গ্রেপ্তার অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে ভাটারা থানায় দায়ের করা হত্যাচেষ্টা মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ সোমবার (১৯ মে) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

৯ ঘণ্টা আগে

আগস্ট-অক্টোবরেই নির্বাচন হতে পারে, ডিসেম্বরে কেন যেতে হবে: বিএনপি নেতা আমীর খসরু

আগস্ট-অক্টোবরেই নির্বাচন হতে পারে, ডিসেম্বরে কেন যেতে হবে: বিএনপি নেতা আমীর খসরু

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ডিসেম্বর পর্যন্ত যেতে হবে কেন? আমি তো দেখছি ডিসেম্বর পর্যন্ত যাওয়ার কোনো কারণ নেই। নির্বাচনের জন্য ৩ মাস সময় নিয়ে যাওয়া দরকার। আগস্ট, সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরে নির্বাচন হতে পারে। ডিসেম্বরে কেন যেতে হবে?

২০ ঘণ্টা আগে

অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরে-বাইরে অস্থিরতা দৃশ্যমান: তারেক রহমান

অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরে-বাইরে অস্থিরতা দৃশ্যমান: তারেক রহমান

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের চিন্তা ও কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে জনগণ অন্ধকারে থাকায় দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা বাড়ছে। আমরা প্রায়ই দেখছি, বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ রাজপথে জড়ো হচ্ছেন।

১ দিন আগে

অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া শাহজালাল বিমানবন্দরে আটক

অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া শাহজালাল বিমানবন্দরে আটক

চলচ্চিত্র অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে রাজধানী ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটক করেছে পুলিশ। ভাটারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুজন হক সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

১ দিন আগে