logo
খবর

শাপলা চত্বরের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

প্রতিবেদক, বিডিজেন১২ মার্চ ২০২৫
Copied!
শাপলা চত্বরের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

২০১৩ সালের ৫ ও ৬ মে রাজধানী ঢাকার শাপলা চত্বরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

বুধবার (১২ মার্চ) গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।

শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য যে ৪ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে তাঁরা হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর, গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার ও সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ।

এ ছাড়া, বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার থাকা ৪ অভিযুক্ত হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহিদুল হক, মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান ও পুলিশের সাবেক উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোল‍্যা নজরুল ইসলাম। তাঁদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম।

শাপলা চত্বরের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, হেফাজতে ইসলাম কয়েকজন ব্লগারের 'ইসলাম ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)–এর অবমাননার প্রতিবাদে' ১৩ দফা দাবি পেশ করেছিল।

দাবি আদায়ে সরকার ব্যর্থ হলে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে জড়ো হয় হেফাজতে ইসলামের সমর্থকেরা।

ওই দিন রাত ১১টা থেকে পরদিন ভোর ৪টা পর্যন্ত শেখ হাসিনার নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ওই এলাকায় রাস্তায় ব্যারিকেড দেওয়া ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাসহ মাদরাসা ছাত্র ও পথচারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে।

মামলার এজাহারে দাবি করা হয়, নিহতদের লাশ সিটি করপোরেশনের যানবাহন ব্যবহার করে গুম করা হয়।

শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশ

২০১০ সালে যাত্রা শুরু করেছিল হেফাজতে ইসলাম। ২০১১ সালে নারী নীতি প্রণয়নের বিরুদ্ধে হরতাল ডেকেছিল। তবে নারী নীতির বিরোধিতা করাসহ ১৩ দফা দাবিতে ২০১৩ সালের ৫ মের কর্মসূচি ঘিরেই আলোচনায় আসে হেফাজত। ওই দিন রাজধানী ঢাকার মতিঝিলের শাপলা চত্বরে ১৩ দফা দাবিতে অবরোধ কর্মসূচি পালন করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সেদিন সংগঠনের নেতাকর্মীরা রাজধানীর ৬টি প্রবেশপথ অবরোধ করে।

দিনভর চলে অংগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর। অনেক স্থাপনায় আগুন দেওয়া হয়। সমাবেশে হেফাজতের নেতারা তাদের বক্তৃতায় আল্টিমেটাম দিতে থাকেন।

ওই দিন বিকেলে আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ধানমন্ডিতে দলীয় সভানেত্রীর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। সে সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতে ইসলামকে বিকেল ৫টার মধ্যে কর্মসূচি শেষ করতে বলা হয়।

সৈয়দ আশরাফের বক্তব্যের পরপরই শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশ থেকে পাল্টা হুঁশিয়ারি দেন হেফাজতের নেতারা। রাত নামতে থাকলেও শাপলা চত্বরে অবস্থান অব্যাহত রাখে হেফাজতে ইসলাম।

রাত ১টার দিকে হেফাজত নেতাকর্মীদের সরাতে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে কমলাপুর স্টেশনে যাওয়ার রাস্তা ও বঙ্গভবনের দিকে যাওয়ার রাস্তা খোলা রেখে দৈনিক বাংলা মোড়, দিলকুশা, ফকিরাপুল ও নটরডেম কলেজের সামনে অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরা।

তারা হেফাজতের নেতাকর্মীদের শাপলা চত্বর ছেড়ে চলে যাওয়ার আহ্বান জানায়। রাত পৌনে ৩টার দিকে শুরু হয় মূল অভিযান। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ফাঁকা গুলি ও টিয়ার গ্যাস ছুড়তে ছুড়তে মঞ্চের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। ভোর ৫টা নাগাদ অভিযান শেষে হয়, নীরব হয়ে পড়ে শাপলা চত্বর।

হেফাজতের সমাবেশ নিয়ে সরকারের প্রেসনোট

এদিকে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে পুলিশি অভিযানের প্রেক্ষাপটে ২০১৩ সালের ১০ মে বাংলাদেশ সরকার এক প্রেসনোট জারি করে।

সরকারের প্রেসনোটে হাজার হাজার মানুষ নিহত হবার গুজবকে অসত্য, মনগড়া ও অসৎ উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে বর্ণনা করা হয়। প্রেসনোটে বলা হয়, অনন্যোপায় হয়ে ওই অভিযান চালায় সরকার।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রেসনোটে বলা হয়, সম্ভাব্য অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ও নৈরাজ্য থেকে দেশকে রক্ষায় একটি রাস্তা খোলা রেখে দুদিক থেকে যে যৌথ অভিযান চালানো হয় তাতে হেফাজতের কর্মীরা ১০-১৫ মিনিটের মধ্যেই মতিঝিল ছেড়ে গিয়েছিল।

এতে আরও বলা হয়, ঘটনার দিন হেফাজতের নেতা আহমদ শফী লালবাগ মাদ্রাসা থেকে সমাবেশস্থলে রওনা হলেও শাপলা চত্বরে না এসে ফিরে যান।

প্রেসনোটে আরও বলা হয়, সমাবেশস্থলে ৪ জনের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায় এবং ওই দিন সংঘাতে ৩ পথচারী, ১ জন পুলিশসহ ১১ জন নিহত হলেও হাজার হাজার মানুষ নিহত হয় বলে গুজব রটানো হয়।

আরও পড়ুন

সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠাবে মালয়েশিয়া: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠাবে মালয়েশিয়া: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

মালয়েশিয়ায় উগ্রবাদী মতাদর্শ ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক ৩৬ বাংলাদেশির মধ্যে অধিকাংশ ব্যক্তিকে ফেরত পাঠানো হতে পারে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) ঢাকায় এ কথা বলেন।

১৯ ঘণ্টা আগে

ইতালির নাগরিক সিজার তাবেলা হত্যায় ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

ইতালির নাগরিক সিজার তাবেলা হত্যায় ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

ইতালির নাগরিক সিজার তাবেলা হত্যা মামলায় ৩ অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এ ছাড়া, মামলা থেকে খালাস পেয়েছে ৪ জন।

১ দিন আগে

বিটিআরসির নতুন নীতিমালা নিয়ে বিএনপির উদ্বেগ

বিটিআরসির নতুন নীতিমালা নিয়ে বিএনপির উদ্বেগ

বিটিআরসির নতুন নীতিমালা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। সবার সঙ্গে আলোচনা করে নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

১ দিন আগে

গুমে সেনাসদস্যদের সংশ্লিষ্টতা থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: সেনাসদর

গুমে সেনাসদস্যদের সংশ্লিষ্টতা থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: সেনাসদর

গুমের ঘটনায় সেনাবাহিনীর কোনো সদস্যের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সেনাসদর। সেনাবাহিনীতে থাকা সদস্যদের মধ্যে যারা বিভিন্ন সংস্থায় ডেপুটেশনে কর্মরত, তাদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ উঠেছে।

১ দিন আগে