বিডিজেন ডেস্ক
বিশেষ ক্ষমতা আইনে সাবেক ‘মিস আর্থ বাংলাদেশ’ মেঘনা আলমকে আটক ও কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রচিন্তা। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে রাষ্ট্রনৈতিক সংগঠনটি এই উদ্বেগ জানায়।
খবর আজের পত্রিকার।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রাষ্ট্রচিন্তা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে যে উদ্যোক্তা ও মডেল মেঘনা আলমকে একটি বিতর্কিত ও ‘‘কালো আইনের’’ আওতায় ৩০ দিনের জন্য আটক করা হয়েছে এবং এই পুরো প্রক্রিয়া বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিশ্বাসযোগ্যতা, মানবিকতা ও গণতান্ত্রিক প্রতিশ্রুতিকে ভয়ানকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
মেঘনা আলমের ফেসবুক লাইভ ভিডিওতে দেখা গেছে, একদল ব্যক্তি—যারা নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়েছেন—রাতের আঁধারে মেঘনা আলমের বাসায় প্রবেশ করে প্রথমে পরিচয় গোপন করে, পরে মাদকের মিথ্যা অভিযোগ তুলে তাঁকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যায়। ঘটনাটির পর ঢাকা মহানগর পুলিশ, থানা ও গোয়েন্দা বাহিনীর মধ্যে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য উঠে আসে। থানা বলে, তারা কিছু জানে না; ডিবি বলে, তারা কিছু করেনি এবং কয়েক ঘণ্টা পরে ডিবিই তাঁকে আটক করার কথা স্বীকার করে। এই ‘‘লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড’’ স্টাইলের নাগরিক অধিকার হরণ আমাদের রাষ্ট্রীয় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির চরম অভাবকে স্পষ্ট করে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘মেঘনা আলমকে যে আইনে আটক করা হয়েছে, সেটি হলো, ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন—বাংলাদেশের আইন অঙ্গনের সবচেয়ে বিতর্কিত ও কলঙ্কিত আইনগুলোর একটি। আইনটি মূলত অপব্যবহারের মাধ্যমে পরিচিত এবং ২০২৪ সালের জুলাই মাসে গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বিতাড়িত স্বৈরাচার সরকার ঠিক এই আইনকে হাতিয়ার করে হাজার হাজার মানুষকে গুম, অপহরণ ও বিচারবহির্ভূতভাবে খুন করেছিল। আমাদের দেশে এখনো এমন এক ‘‘আইনানুগ গুমের কাঠামো’’ টিকে আছে, যার মাধ্যমে মানুষকে প্রথমে নিখোঁজ করা হয় এবং পরে এই আইনের মারপ্যাঁচে তাকে জেলবন্দী করে রাখা হয়। একে সবাই ‘গুম’ বলেই জানে—যেটা কেবল বেআইনি নয়, রাষ্ট্রীয় বর্বরতা ও নৈতিক অধঃপতনের এক ভয়াবহ রূপ।
এই কালো আইনের মূল উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বা রাষ্ট্র সমালোচকদের বিরুদ্ধে দমননীতি চালু রাখা। একে গণতন্ত্রের ছায়ায় স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠার ‘আইনি প্যাকেজ’ বলা চলে। আজ যখন আমরা একটি নতুন রাজনৈতিক অধ্যায়ে প্রবেশ করেছি—গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটি স্বৈরতান্ত্রিক সরকারকে বিতাড়িত করেছি—তখন এই আইন টিকে থাকা কেবল নৈতিক ও আইনি বিভ্রান্তিই নয়, বরং মুক্তিযুদ্ধজয়ী একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের আত্মবিরোধিতার নিদর্শন।
আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করেছি যে এ ঘটনার পেছনে একজন বিদেশি রাষ্ট্রদূতের ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও প্রতিহিংসার অভিযোগ উঠে এসেছে। এই রাষ্ট্রদূত তার ব্যক্তিগত সম্পর্কের জেরে একজন বাংলাদেশি নাগরিকের প্রতি প্রতিশোধ নিতে রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করছেন—এটি কেবল অনভিপ্রেত নয়, বরং বাংলাদেশের ওপর একটি পরোক্ষ কূটনৈতিক আগ্রাসন। রাষ্ট্র যদি এ ক্ষেত্রে নীরব থাকে, তাহলে তা হবে এর সার্বভৌমত্বের প্রতি আত্মঘাতী বিশ্বাসঘাতকতা।’
উদ্ভূত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রচিন্তা জোরালোভাবে দাবি করছে
মেঘনা আলমকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে এবং তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ যদি সত্যিই থাকে, তবে প্রচলিত ফৌজদারি আইনের আওতায় স্বচ্ছ তদন্ত ও সুবিচার নিশ্চিত করতে হবে।
১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত করতে হবে। এই আইন গণতন্ত্রের প্রতিপক্ষ এবং এর অস্তিত্ব বর্তমান রাষ্ট্রীয় কাঠামোর প্রতি ঘোরতর অবমাননা।
ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব বাহিনী ও ব্যক্তিকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। জনগণের করের টাকায় পরিচালিত বাহিনী কখনোই ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা বা কূটনৈতিক তোষণের যন্ত্র হতে পারে না।
উক্ত বিদেশি রাষ্ট্রদূতের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে হবে এবং প্রমাণিত হলে তার কূটনৈতিক অবস্থান পুনর্বিবেচনা করতে হবে।
রাষ্ট্রচিন্তা বিশ্বাস করে, একটি রাষ্ট্রের মর্যাদা তখনোই রক্ষা পায়, যখন সে তার দুর্বলতম নাগরিকের অধিকার রক্ষা করতে পারে। আর নাগরিকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর অন্ধ অপব্যবহার শুধু একটি আইনি অন্যায় নয়, এটি একটি নৈতিক ব্যর্থতা, যার বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।
সূত্র: আজকের পত্রিকা
আরও পড়ুন
বিশেষ ক্ষমতা আইনে সাবেক ‘মিস আর্থ বাংলাদেশ’ মেঘনা আলমকে আটক ও কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রচিন্তা। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে রাষ্ট্রনৈতিক সংগঠনটি এই উদ্বেগ জানায়।
খবর আজের পত্রিকার।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রাষ্ট্রচিন্তা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে যে উদ্যোক্তা ও মডেল মেঘনা আলমকে একটি বিতর্কিত ও ‘‘কালো আইনের’’ আওতায় ৩০ দিনের জন্য আটক করা হয়েছে এবং এই পুরো প্রক্রিয়া বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিশ্বাসযোগ্যতা, মানবিকতা ও গণতান্ত্রিক প্রতিশ্রুতিকে ভয়ানকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
মেঘনা আলমের ফেসবুক লাইভ ভিডিওতে দেখা গেছে, একদল ব্যক্তি—যারা নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়েছেন—রাতের আঁধারে মেঘনা আলমের বাসায় প্রবেশ করে প্রথমে পরিচয় গোপন করে, পরে মাদকের মিথ্যা অভিযোগ তুলে তাঁকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যায়। ঘটনাটির পর ঢাকা মহানগর পুলিশ, থানা ও গোয়েন্দা বাহিনীর মধ্যে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য উঠে আসে। থানা বলে, তারা কিছু জানে না; ডিবি বলে, তারা কিছু করেনি এবং কয়েক ঘণ্টা পরে ডিবিই তাঁকে আটক করার কথা স্বীকার করে। এই ‘‘লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড’’ স্টাইলের নাগরিক অধিকার হরণ আমাদের রাষ্ট্রীয় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির চরম অভাবকে স্পষ্ট করে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘মেঘনা আলমকে যে আইনে আটক করা হয়েছে, সেটি হলো, ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন—বাংলাদেশের আইন অঙ্গনের সবচেয়ে বিতর্কিত ও কলঙ্কিত আইনগুলোর একটি। আইনটি মূলত অপব্যবহারের মাধ্যমে পরিচিত এবং ২০২৪ সালের জুলাই মাসে গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বিতাড়িত স্বৈরাচার সরকার ঠিক এই আইনকে হাতিয়ার করে হাজার হাজার মানুষকে গুম, অপহরণ ও বিচারবহির্ভূতভাবে খুন করেছিল। আমাদের দেশে এখনো এমন এক ‘‘আইনানুগ গুমের কাঠামো’’ টিকে আছে, যার মাধ্যমে মানুষকে প্রথমে নিখোঁজ করা হয় এবং পরে এই আইনের মারপ্যাঁচে তাকে জেলবন্দী করে রাখা হয়। একে সবাই ‘গুম’ বলেই জানে—যেটা কেবল বেআইনি নয়, রাষ্ট্রীয় বর্বরতা ও নৈতিক অধঃপতনের এক ভয়াবহ রূপ।
এই কালো আইনের মূল উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বা রাষ্ট্র সমালোচকদের বিরুদ্ধে দমননীতি চালু রাখা। একে গণতন্ত্রের ছায়ায় স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠার ‘আইনি প্যাকেজ’ বলা চলে। আজ যখন আমরা একটি নতুন রাজনৈতিক অধ্যায়ে প্রবেশ করেছি—গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটি স্বৈরতান্ত্রিক সরকারকে বিতাড়িত করেছি—তখন এই আইন টিকে থাকা কেবল নৈতিক ও আইনি বিভ্রান্তিই নয়, বরং মুক্তিযুদ্ধজয়ী একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের আত্মবিরোধিতার নিদর্শন।
আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করেছি যে এ ঘটনার পেছনে একজন বিদেশি রাষ্ট্রদূতের ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও প্রতিহিংসার অভিযোগ উঠে এসেছে। এই রাষ্ট্রদূত তার ব্যক্তিগত সম্পর্কের জেরে একজন বাংলাদেশি নাগরিকের প্রতি প্রতিশোধ নিতে রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করছেন—এটি কেবল অনভিপ্রেত নয়, বরং বাংলাদেশের ওপর একটি পরোক্ষ কূটনৈতিক আগ্রাসন। রাষ্ট্র যদি এ ক্ষেত্রে নীরব থাকে, তাহলে তা হবে এর সার্বভৌমত্বের প্রতি আত্মঘাতী বিশ্বাসঘাতকতা।’
উদ্ভূত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রচিন্তা জোরালোভাবে দাবি করছে
মেঘনা আলমকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে এবং তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ যদি সত্যিই থাকে, তবে প্রচলিত ফৌজদারি আইনের আওতায় স্বচ্ছ তদন্ত ও সুবিচার নিশ্চিত করতে হবে।
১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত করতে হবে। এই আইন গণতন্ত্রের প্রতিপক্ষ এবং এর অস্তিত্ব বর্তমান রাষ্ট্রীয় কাঠামোর প্রতি ঘোরতর অবমাননা।
ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব বাহিনী ও ব্যক্তিকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। জনগণের করের টাকায় পরিচালিত বাহিনী কখনোই ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা বা কূটনৈতিক তোষণের যন্ত্র হতে পারে না।
উক্ত বিদেশি রাষ্ট্রদূতের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে হবে এবং প্রমাণিত হলে তার কূটনৈতিক অবস্থান পুনর্বিবেচনা করতে হবে।
রাষ্ট্রচিন্তা বিশ্বাস করে, একটি রাষ্ট্রের মর্যাদা তখনোই রক্ষা পায়, যখন সে তার দুর্বলতম নাগরিকের অধিকার রক্ষা করতে পারে। আর নাগরিকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর অন্ধ অপব্যবহার শুধু একটি আইনি অন্যায় নয়, এটি একটি নৈতিক ব্যর্থতা, যার বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।
সূত্র: আজকের পত্রিকা
আরও পড়ুন
ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সস্ত্রীক সাক্ষাৎ করেছেন নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সস্ত্রীক সাক্ষাৎ করেছেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঘোষণা করা নির্বাচনের সময়সমীনা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, নির্বাচনের আগে জুলাই সনদ ঘোষণা করতে হবে।
ডিসেম্বরে নির্বাচন করা সম্ভব, সেটাই জাতির জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ডিসেম্বরে নির্বাচন করা সম্ভব, সেটি হলে তা জাতির জন্য ভালো হবে।