প্রতিবেদক, বিডিজেন
স্টেডিয়াম–সংলগ্ন দৈনিক বাংলা মোড়ে পৌঁছতেই চোখে পড়ল মানুষের লম্বা লাইন। বেশির ভাগের পরনেই বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাদা রঙের নতুন হোম জার্সি। স্টেডিয়ামমুখী জনতার স্রোত এগিয়ে চলেছে ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামের দিকে।
সন্ধ্যা ৭টায় এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচ। দুপুর আড়াইটাতেই মানুষের ঢল স্টেডিয়াম ঘিরে। শেষ কবে এমন দৃশ্য দেখেছে ঢাকার মানুষ?
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পুরোনো অফিসের দেয়াল ঘেঁষে ফুটবলের জনস্রোত দেখছিলেন এক প্রবীণ, নাম মো. সুলতান। বহু বছর ধরে ঢাকা স্টেডিয়াম এলাকার সঙ্গে তাঁর পরিচিতি। ছোটখাট ব্যবসা আছে এই এলাকায়। ঈদের ছুটি শেষ করে সবে ফিরেছেন গ্রামের বাড়ি থেকে।
মো. সুলতানকে জিজ্ঞেস করতেই বললেন, ‘আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ হইত যখন, তখন এমন ভিড় দেখতাম মানুষের। সেইটা তো বহু বছর আগের কথা। মাঝখানে ২০–২৫ বছর ঢাকা স্টেডিয়ামের কোনো খেলা দেখার জন্য এত মানুষের ভিড় দেখি নাই।’
পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন মাহফুজ রহমান নামের এক ব্যক্তি। তিনিও ফুটবলপ্রিয় মানুষ। খুব ইচ্ছা ছিল সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচটি দেখবেন। কিন্তু টিকিট না পাওয়ার কারণে দেখা হচ্ছে না। ঈদের ছুটির মধ্যেই স্টেডিয়াম এলাকায় এসেছেন গ্যালারিতে বসে না হোক, অন্তত, মাঠের বাইরে দাঁড়িয়ে হলেও উপলক্ষটাকে উপভোগ করার উদ্দেশে।
তাঁর কথা, ‘২০০৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছিল বাংলাদেশ ফুটবল দল। তখন এমন দৃশ্য দেখেছিলাম। ফুটবলের প্রতি মানুষের আগ্রহ এরপর হারিয়েই গিয়েছিল। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচ ঘিরে সেই আগ্রহ ফিরেছে দেখে খুব আনন্দ হচ্ছে। তবে টিকিট পাইনি বলে খেলাটা স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে বসে দেখতে পাচ্ছি না বলে খারাপ লাগছে।’
সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচটা সবাই দেখতে চেয়েছিলেন। জাতীয় দলের জার্সির বিক্রি হয়েছে দেদার। কাল ম্যাচের আগে সারা ঢাকা শহরেই মানুষের পরনে জাতীয় দলের রেপ্লিকা জার্সি দেখা গেছে। এমন কিছু বাংলাদেশের ফুটবলে নতুনই। জাতীয় ক্রিকেট দলের জার্সি পরে মানুষকে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেলেও ফুটবল দলের জার্সি এতদিন দেখা যায়নি।
কাল ম্যাচের আগে স্টেডিয়াম প্রাঙ্গনে জাতীয় ফুটবল দলের জার্সির পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ‘দৌড়’ জার্সি বিক্রি করেছে। সেখানেও মানুষের ভিড় দেখা গেছে।
সব মিলিয়ে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচ ভিন্ন কিছু দৃশ্যপটের জন্ম দিয়েছিল, যা একটা প্রজন্মকে হারানো অতীতে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে, নতুন প্রজন্মকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে এদেশের মানুষের ফুটবল-প্রেমের সঙ্গে।
১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফি জয়ের মাধ্যমে ক্রিকেটের বিশ্বকাপ কোয়ালিফাই, কিংবা ২০০০ সালে টেস্ট মর্যাদার মাধ্যমে ক্রিকেটের অবিস্মরণীয় উত্থান, একই সঙ্গে ফুটবলের ধারাবাহিক ব্যর্থতা. যে প্রেম আড়াল করে দিয়েছিল অনেকটাই।
সেই ফুটবল-প্রেম হঠাৎ জেগে ওঠার কারণটা কী? অনেকেই বলছেন, ইতিহাসের চক্র পূরণ হয়েছে, যে ফুটবলের ধারাবাহিক আন্তর্জাতিক ব্যর্থতা, ঘরোয়া ফুটবলে পাতানো খেলা, ভালো মানের তারকা ফুটবলারের অভাব, ফুটবের প্রতি মানুষের আগ্রহ শূন্যের কোটায় এনে ঠেলেছিল, সেই একই ঘটনা সিকি শতাব্দী পর মানুষ দেখছে ক্রিকেট নিয়ে। সাম্প্রতিককালে ক্রিকেটে মাঠের চেয়ে মাঠের বাইরের ঘটনার ঘনঘটা, জাতীয় ক্রিকেটে দলের ব্যর্থতা, ঘরোয়া ক্রিকেটে নানা বিতর্ক, মানুষকে ত্যক্ত-বিরক্ত করে তুলেছে।
সিঙ্গাপুরের ম্যাচ এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের একটি ম্যাচই ছিল, তারপরেও এ ম্যাচ নিয়ে মানুষের আকাশছোঁয়া আগ্রহের কারণ অবশ্যই ইংলিশ ফুটবলে এফএ কাপ জয়ী হামজা চৌধুরীর মতো ফুটবলারের বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে খেলা, একই সঙ্গে কানাডিয়ান জাতীয় দলে খেলা শমিত সোমের আগমণ, তারিক কাজী, কাজেম শাহ, ফাহমিদুল ইসলামের মতো প্রবাসী ফুটবলারদের আবির্ভাব—দেশের ফুটবলে যে তারকা ফুটবলারের দীর্ঘ খরা, সেটি কিছুটা হলেও পূরণ হয়েছে হামজা-শমিত-তারিক-কাজেম-জামাল-ফাহমিদুলদের কারণে। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে দেশের মাটিতে এই ম্যাচ সে কারণেই মানুষের আগ্রহের মাত্রা অনেকটাই বাড়িয়েছে।
ম্যাচটা বাংলাদেশ হেরেছে ২-১ গোলে। উৎসবের আবহে ফুটবলপ্রেমীদের জন্য ব্যাপারটা কষ্টের হলেও সেই কষ্ট মানুষ ভোলার চেষ্টা করেছে বাংলাদেশ দলের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখে। ম্যাচটার ফল বাংলাদেশের অনুকূলে আসলেও আসতে পারত। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে সিঙ্গাপুরকে যেভাবে বাংলাদেশ চেপে ধরেছিল, তাতে স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে উপস্থিত ২৩ হাজারের কিছু বেশি দর্শক, আর টেলিভিশনের পর্দার সামনে বসে থাকা লাখ লাখ ফুটবলপ্রেমী আশায় বুক বেঁধেছিলেন। শেষ পর্যন্ত জয় বা ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়া যায়নি ঠিকই, কিন্তু আশার আলোর সলতেটা কিন্তু বাংলাদেশি নতুন প্রজন্মের ফুটবলাররা জ্বালিয়ে দিয়েছেন ঠিকই।
ম্যাচ শেষে গ্যালারি থেকে বের হতে হতে অনেক দর্শকই আক্ষেপে পুড়েছেন। ম্যাচটা জিতে গেলে বা নিদেনপক্ষে অমীমাংসিতভাবে শেষ করতে পারলে দেশের ফুটবলের দৃশ্যপটই পাল্টে যেত। নতুন দিনের পথচলার শুরুটা হয়ে যেত।
আহনাফ সাঈদ নামের একজন ফুটবলপ্রেমী স্টেডিয়ামের ১৮ নম্বর গেট দিয়ে বের হওয়ার সময় আবেগ এক পাশে সরিয়ে রেখে শোনালেন অন্য কথা, ‘জাতীয় দল নিয়ে পড়ে থাকলে হবে না ভাই। ফুটবলে জাতীয় দলের খেলা থাকে বছরে সর্বোচ্চ ১০টা। ফুটবল ক্লাব-নির্ভর খেলা। বাফুফের উচিত দেশের প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের মান উন্নত করা। লিগের জন্য ভালো মাঠ, ভালো পরিবেশ, সুন্দর টেলিভিশন সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা। সেই সঙ্গে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচে যে স্পনসররা এগিয়ে এসেছেন, তাদের বলব, দেশের ঘরোয়া ফুটবলে স্পনসর করতে। যে দেশের লিগ যতো উন্নত, যতো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ, সে দেশের ফুটবল তত উন্নত।’
সিঙ্গাপুর ম্যাচ দিয়ে ফুটবলের যে নতুন পথচলাটা হয়েছে, সেই পথচলার সঙ্গী হোক, দেশের ঘরোয়া ফুটবলের উন্নয়ন। পেশাদারি ক্লাব ফুটবল আর তৃণমূলে খেলোয়াড় তৈরিতে জোর দেওয়া।
দেশের ফুটবল নিয়ে একটা কথা খুব প্রচলিত, ‘এদেশের মানুষ ফুটবলের সঙ্গে দীর্ঘদিন প্রেম করেছে, কিন্তু বিয়ে করেছে ক্রিকেটকে। কথাটিকে একটি অন্যভাবে বলা যায়, ‘প্রথম প্রেম কি কেউ ভুলতে পারে?’
ফুটবল যে বাংলাদেশের মানুষের প্রথম প্রেম!
স্টেডিয়াম–সংলগ্ন দৈনিক বাংলা মোড়ে পৌঁছতেই চোখে পড়ল মানুষের লম্বা লাইন। বেশির ভাগের পরনেই বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাদা রঙের নতুন হোম জার্সি। স্টেডিয়ামমুখী জনতার স্রোত এগিয়ে চলেছে ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামের দিকে।
সন্ধ্যা ৭টায় এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচ। দুপুর আড়াইটাতেই মানুষের ঢল স্টেডিয়াম ঘিরে। শেষ কবে এমন দৃশ্য দেখেছে ঢাকার মানুষ?
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পুরোনো অফিসের দেয়াল ঘেঁষে ফুটবলের জনস্রোত দেখছিলেন এক প্রবীণ, নাম মো. সুলতান। বহু বছর ধরে ঢাকা স্টেডিয়াম এলাকার সঙ্গে তাঁর পরিচিতি। ছোটখাট ব্যবসা আছে এই এলাকায়। ঈদের ছুটি শেষ করে সবে ফিরেছেন গ্রামের বাড়ি থেকে।
মো. সুলতানকে জিজ্ঞেস করতেই বললেন, ‘আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ হইত যখন, তখন এমন ভিড় দেখতাম মানুষের। সেইটা তো বহু বছর আগের কথা। মাঝখানে ২০–২৫ বছর ঢাকা স্টেডিয়ামের কোনো খেলা দেখার জন্য এত মানুষের ভিড় দেখি নাই।’
পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন মাহফুজ রহমান নামের এক ব্যক্তি। তিনিও ফুটবলপ্রিয় মানুষ। খুব ইচ্ছা ছিল সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচটি দেখবেন। কিন্তু টিকিট না পাওয়ার কারণে দেখা হচ্ছে না। ঈদের ছুটির মধ্যেই স্টেডিয়াম এলাকায় এসেছেন গ্যালারিতে বসে না হোক, অন্তত, মাঠের বাইরে দাঁড়িয়ে হলেও উপলক্ষটাকে উপভোগ করার উদ্দেশে।
তাঁর কথা, ‘২০০৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছিল বাংলাদেশ ফুটবল দল। তখন এমন দৃশ্য দেখেছিলাম। ফুটবলের প্রতি মানুষের আগ্রহ এরপর হারিয়েই গিয়েছিল। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচ ঘিরে সেই আগ্রহ ফিরেছে দেখে খুব আনন্দ হচ্ছে। তবে টিকিট পাইনি বলে খেলাটা স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে বসে দেখতে পাচ্ছি না বলে খারাপ লাগছে।’
সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচটা সবাই দেখতে চেয়েছিলেন। জাতীয় দলের জার্সির বিক্রি হয়েছে দেদার। কাল ম্যাচের আগে সারা ঢাকা শহরেই মানুষের পরনে জাতীয় দলের রেপ্লিকা জার্সি দেখা গেছে। এমন কিছু বাংলাদেশের ফুটবলে নতুনই। জাতীয় ক্রিকেট দলের জার্সি পরে মানুষকে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেলেও ফুটবল দলের জার্সি এতদিন দেখা যায়নি।
কাল ম্যাচের আগে স্টেডিয়াম প্রাঙ্গনে জাতীয় ফুটবল দলের জার্সির পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ‘দৌড়’ জার্সি বিক্রি করেছে। সেখানেও মানুষের ভিড় দেখা গেছে।
সব মিলিয়ে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচ ভিন্ন কিছু দৃশ্যপটের জন্ম দিয়েছিল, যা একটা প্রজন্মকে হারানো অতীতে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে, নতুন প্রজন্মকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে এদেশের মানুষের ফুটবল-প্রেমের সঙ্গে।
১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফি জয়ের মাধ্যমে ক্রিকেটের বিশ্বকাপ কোয়ালিফাই, কিংবা ২০০০ সালে টেস্ট মর্যাদার মাধ্যমে ক্রিকেটের অবিস্মরণীয় উত্থান, একই সঙ্গে ফুটবলের ধারাবাহিক ব্যর্থতা. যে প্রেম আড়াল করে দিয়েছিল অনেকটাই।
সেই ফুটবল-প্রেম হঠাৎ জেগে ওঠার কারণটা কী? অনেকেই বলছেন, ইতিহাসের চক্র পূরণ হয়েছে, যে ফুটবলের ধারাবাহিক আন্তর্জাতিক ব্যর্থতা, ঘরোয়া ফুটবলে পাতানো খেলা, ভালো মানের তারকা ফুটবলারের অভাব, ফুটবের প্রতি মানুষের আগ্রহ শূন্যের কোটায় এনে ঠেলেছিল, সেই একই ঘটনা সিকি শতাব্দী পর মানুষ দেখছে ক্রিকেট নিয়ে। সাম্প্রতিককালে ক্রিকেটে মাঠের চেয়ে মাঠের বাইরের ঘটনার ঘনঘটা, জাতীয় ক্রিকেটে দলের ব্যর্থতা, ঘরোয়া ক্রিকেটে নানা বিতর্ক, মানুষকে ত্যক্ত-বিরক্ত করে তুলেছে।
সিঙ্গাপুরের ম্যাচ এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের একটি ম্যাচই ছিল, তারপরেও এ ম্যাচ নিয়ে মানুষের আকাশছোঁয়া আগ্রহের কারণ অবশ্যই ইংলিশ ফুটবলে এফএ কাপ জয়ী হামজা চৌধুরীর মতো ফুটবলারের বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে খেলা, একই সঙ্গে কানাডিয়ান জাতীয় দলে খেলা শমিত সোমের আগমণ, তারিক কাজী, কাজেম শাহ, ফাহমিদুল ইসলামের মতো প্রবাসী ফুটবলারদের আবির্ভাব—দেশের ফুটবলে যে তারকা ফুটবলারের দীর্ঘ খরা, সেটি কিছুটা হলেও পূরণ হয়েছে হামজা-শমিত-তারিক-কাজেম-জামাল-ফাহমিদুলদের কারণে। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে দেশের মাটিতে এই ম্যাচ সে কারণেই মানুষের আগ্রহের মাত্রা অনেকটাই বাড়িয়েছে।
ম্যাচটা বাংলাদেশ হেরেছে ২-১ গোলে। উৎসবের আবহে ফুটবলপ্রেমীদের জন্য ব্যাপারটা কষ্টের হলেও সেই কষ্ট মানুষ ভোলার চেষ্টা করেছে বাংলাদেশ দলের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখে। ম্যাচটার ফল বাংলাদেশের অনুকূলে আসলেও আসতে পারত। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে সিঙ্গাপুরকে যেভাবে বাংলাদেশ চেপে ধরেছিল, তাতে স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে উপস্থিত ২৩ হাজারের কিছু বেশি দর্শক, আর টেলিভিশনের পর্দার সামনে বসে থাকা লাখ লাখ ফুটবলপ্রেমী আশায় বুক বেঁধেছিলেন। শেষ পর্যন্ত জয় বা ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়া যায়নি ঠিকই, কিন্তু আশার আলোর সলতেটা কিন্তু বাংলাদেশি নতুন প্রজন্মের ফুটবলাররা জ্বালিয়ে দিয়েছেন ঠিকই।
ম্যাচ শেষে গ্যালারি থেকে বের হতে হতে অনেক দর্শকই আক্ষেপে পুড়েছেন। ম্যাচটা জিতে গেলে বা নিদেনপক্ষে অমীমাংসিতভাবে শেষ করতে পারলে দেশের ফুটবলের দৃশ্যপটই পাল্টে যেত। নতুন দিনের পথচলার শুরুটা হয়ে যেত।
আহনাফ সাঈদ নামের একজন ফুটবলপ্রেমী স্টেডিয়ামের ১৮ নম্বর গেট দিয়ে বের হওয়ার সময় আবেগ এক পাশে সরিয়ে রেখে শোনালেন অন্য কথা, ‘জাতীয় দল নিয়ে পড়ে থাকলে হবে না ভাই। ফুটবলে জাতীয় দলের খেলা থাকে বছরে সর্বোচ্চ ১০টা। ফুটবল ক্লাব-নির্ভর খেলা। বাফুফের উচিত দেশের প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের মান উন্নত করা। লিগের জন্য ভালো মাঠ, ভালো পরিবেশ, সুন্দর টেলিভিশন সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা। সেই সঙ্গে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচে যে স্পনসররা এগিয়ে এসেছেন, তাদের বলব, দেশের ঘরোয়া ফুটবলে স্পনসর করতে। যে দেশের লিগ যতো উন্নত, যতো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ, সে দেশের ফুটবল তত উন্নত।’
সিঙ্গাপুর ম্যাচ দিয়ে ফুটবলের যে নতুন পথচলাটা হয়েছে, সেই পথচলার সঙ্গী হোক, দেশের ঘরোয়া ফুটবলের উন্নয়ন। পেশাদারি ক্লাব ফুটবল আর তৃণমূলে খেলোয়াড় তৈরিতে জোর দেওয়া।
দেশের ফুটবল নিয়ে একটা কথা খুব প্রচলিত, ‘এদেশের মানুষ ফুটবলের সঙ্গে দীর্ঘদিন প্রেম করেছে, কিন্তু বিয়ে করেছে ক্রিকেটকে। কথাটিকে একটি অন্যভাবে বলা যায়, ‘প্রথম প্রেম কি কেউ ভুলতে পারে?’
ফুটবল যে বাংলাদেশের মানুষের প্রথম প্রেম!
গত ১০ আগস্ট ঢাকার একটি হোটেলে ছেলের জন্মদিন পালন করেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। এই আয়োজনের কিছু ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই রোববার (১৭ আগস্ট) দুপুরে জানা যায়, সন্তানসহ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তিনি।
সৌদি আরবের জেদ্দায় বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ হজ অফিসে উপসচিব মো. কামরুল ইসলামকে নতুন কাউন্সিলর (হজ) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় প্রায় ৫০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশ সীমান্তসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান নিয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন, পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে তারা সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে।
বাংলাদেশ যেন কখনো চরমপন্থা বা মৌলবাদের অভয়ারণ্য না হয়, সেই প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।