logo
খবর

শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ছাড়া পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়: সেনাপ্রধান ওয়াকার

বিডিজেন ডেস্ক
বিডিজেন ডেস্ক২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
Copied!
শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ছাড়া পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়: সেনাপ্রধান ওয়াকার
‘ফাউন্ডেশন ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ’ নামে নতুন গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। র‍্যাডিসন ব্লু হোটেল। ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫। ছবি: তানভীর আহাম্মেদ

শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ছাড়া পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, শক্তিশালী প্রতিরক্ষা গড়ে তুলতে কোন কোন ক্ষেত্রে জোর দেওয়া উচিত, তা গবেষণার মাধ্যমে বের করতে হবে। একই সঙ্গে খাদ্য, পানি, জ্বালানি নিরাপত্তাসহ সব ক্ষেত্রেই গবেষণার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন তিনি।

খবর প্রথম আলোর।

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানী ঢাকার র‍্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলের বলরুমে ‘ফাউন্ডেশন ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (এফএসডিএস)’ নামে গবেষণাধর্মী নতুন একটি প্রতিষ্ঠানের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটি দেশে সুশাসন, জাতীয় নিরাপত্তা, উন্নয়ন ও নীতি প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় সহযোগিতার লক্ষ্যে গবেষণা করবে। এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ফজলে এলাহী আকবর।

এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, বাংলাদেশে অনেক গবেষণা সংস্থা আছে। তারা ভালো গবেষণা করেছে। কিন্তু নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে গবেষণার ফলাফলের প্রতিফলন কম দেখা গেছে। সরকার ও বেসরকারি খাত যদি নীতি পদক্ষেপের ক্ষেত্রে গবেষণার ফলাফলকে বিবেচনায় না নেয়, তাহলে গবেষণা কাজে লাগবে না।

এফএসডিএস প্রতিষ্ঠাকে সময়োপযোগী উদ্যোগ হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, সুশাসন, টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জাতীয় সংহতির জন্য গবেষণাভিত্তিক নীতিকাঠামো দরকার। কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে নতুন এই প্রতিষ্ঠানকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন সেনাপ্রধান।

অনুষ্ঠানে এফএসডিএসের চেয়ারম্যান ফজলে ইলাহী আকবর বলেন, তাদের এই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য হলো জাতীয় সংহতি ও অগ্রগতির স্বার্থে সবার মধ্যে সহযোগিতা ও সংযোগ বৃদ্ধি করা। তিনি বলেন, একই লক্ষ্য নিয়ে দেশে আরও কিছু চিন্তন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তবে ফাউন্ডেশন ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের মূল দৃষ্টিভঙ্গি জাতীয় চেতনার মশাল প্রজ্বলিত করে-‘বাংলাদেশ ফার্স্ট’ নীতি অবলম্বন। এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান মনোযোগ থাকবে জাতীয় নিরাপত্তা, বেসামরিক ও সামরিক খাতের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং ভূরাজনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি বজায় রাখতে সহযোগিতা করা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত দর্শক–শ্রোতাদের একাংশ
অনুষ্ঠানে উপস্থিত দর্শক–শ্রোতাদের একাংশ

বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ককে আরও সম্প্রসারিত করার জন্য আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার বাজারে প্রবেশের উদ্যোগ নেওয়া দরকার বলে মনে করেন ফজলে এলাহী আকবর। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বাজার বৈচিত্র্যপূর্ণ করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে হবে।

বাংলাদেশের জন্য বঙ্গোপসাগর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে ফজলে এলাহী আকবর বলেন, কারণ, এটি বৈশ্বিক বাণিজ্য ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি কৌশলগত সামুদ্রিক অঞ্চল। এর প্রাকৃতিক সম্পদ ও গুরুত্বপূর্ণ শিপিং রুটগুলোর (সমুদ্র পরিবহনের পথ) প্রতি আন্তর্জাতিক মহলের আগ্রহ ক্রমে বাড়ছে। এটা বাংলাদেশকে আঞ্চলিক সামুদ্রিক নিরাপত্তায় প্রধান অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করছে।

প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ককে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে বলে উল্লেখ করেন ফজলে এলাহী আকবর। তিনি বলেন, ‘জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তার ভিত্তিতে কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন বজায় রাখা অপরিহার্য। যা আমাদের কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক উদ্যোগের মূল ভিত্তি হতে পারে। দুঃখজনকভাবে, আমাদের রাজনৈতিক আলোচনায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি প্রায়ই উপেক্ষিত হয়েছে।’

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, আইনের অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খান এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার মার্শাল হাসান মাহমুদ খান ও নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, সাবেক সেনাপ্রধান অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল এম নূরউদ্দীন খান, সাবেক পুলিশপ্রধান আশরাফুল হুদা, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ, ভাইস চেয়ারম্যান (অব.) এয়ার ভাইস মার্শাল আলতাফ হোসেন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনাম, মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, দেশ রূপান্তর সম্পাদক কামাল উদ্দিন সবুজ, একুশে টেলিভিশনের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তারসহ অবসরপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারাও এই অনুষ্ঠানে ছিলেন। সব শেষে অতিথিদের ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেন মেজর জেনারেল (অব.) কালাম।

সূত্র: প্রথম আলো

আরও পড়ুন

প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিয়ে ইসির সঙ্গে জামায়াতের প্রতিনিধিদলের আলোচনা

প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিয়ে ইসির সঙ্গে জামায়াতের প্রতিনিধিদলের আলোচনা

‘আমরা এই বিষয়ে আলোচনা করেছি। তাদের [প্রবাসী] দুটি সমস্যার কথা তুলেছিলাম—একটা হচ্ছে আইডি কার্ড। এটা অবশ্যই হবে, যদিও কিছু জটিলতা আছে। তার বাইরে অন্য কোনো ডকুমেন্ট দিয়ে করা যায় কি না, আজ নির্বাচন কমিশন বলেছে যে, জন্মসনদের মাধ্যমেও ভোটার হওয়া সম্ভব। এতে একটা সমাধান পাওয়া যেতে পারে।’

১৫ ঘণ্টা আগে

মানবপাচারের মামলায় প্রবাসী ও তার স্ত্রীকে অভিযুক্ত বানিয়ে আদালতে পুলিশের চার্জশিট

মানবপাচারের মামলায় প্রবাসী ও তার স্ত্রীকে অভিযুক্ত বানিয়ে আদালতে পুলিশের চার্জশিট

মানবপাচারের পৃথক ৩টি মামলায় এক প্রবাসী ও তার স্ত্রীকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। মামলার বাদীদের অভিযোগ, তদন্ত কর্মকর্তা দাবি অনুযায়ী ঘুষের টাকা না পেয়ে সাক্ষী (প্রবাসীর স্ত্রী) এবং তার প্রবাসী স্বামীকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন।

২ দিন আগে

লিবিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন আরও ৩০৯ বাংলাদেশি

লিবিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন আরও ৩০৯ বাংলাদেশি

লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলি ও আশপাশের এলাকায় অবৈধভাবে অবস্থানরত  ৩০৯ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর সমন্বিত প্রচেষ্টায় প্রত্যাবাসন কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।

৩ দিন আগে

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আমিরাতে আটক অবশিষ্ট বন্দীর মুক্তির বিষয়ে প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আমিরাতে আটক অবশিষ্ট বন্দীর মুক্তির বিষয়ে প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ

২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে বিভিন্ন সময়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আটককৃতদের মধ্য থেকে ইতিমধ্যে ১৮৮ জন দেশে ফিরে এলেও এখনো আবুধাবি কারাগারে আটক আছে ২৫ জন প্রবাসী। তাদের মুক্তির বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কুটনৈতিক ও আইনী প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

৫ দিন আগে