logo
খবর

মালদ্বীপ গিয়েছিলেন বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে, ফিরছেন লাশ হয়ে

বিডিজেন ডেস্ক
বিডিজেন ডেস্ক৩০ এপ্রিল ২০২৫
Copied!
মালদ্বীপ গিয়েছিলেন বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে, ফিরছেন লাশ হয়ে
মো. জসিম উদ্দিন। ছবি: প্রথম আলো

প্রায় সাত বছর আগে বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে মালদ্বীপ গিয়েছিলেন মো. জসিম উদ্দিন (৪৫)। স্বপ্ন ছিল কাজ করে ঋণের টাকা পরিশোধ করবেন; সংসারে ফিরিয়ে আনবেন সচ্ছলতা। হাসি ফোটাবেন স্ত্রী–সন্তানদের মুখে। স্বপ্নপূরণের দ্বারপ্রান্তেও এসেছিলেন। কথা ছিল আসছে ঈদুল আজহার আগে বাড়ি ফিরবেন। পরিবার–পরিজনের সঙ্গে ঈদ করবেন। বাড়িতে ফিরছেন ঠিকই। তবে জীবিত নয়, ফিরছেন লাশ হয়ে।

খবর প্রথম আলোর।

জসিম উদ্দিনের বিষয়ে কথাগুলো বলতে বলতে কাঁদছিলেন তাঁর স্ত্রী মোসা. মাসুমা আক্তার (৩৭)। বাংলাদেশ সময় গত শনিবার (২৬ এপ্রিল) দিবাগত রাত চারটার দিকে মালদ্বীপের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জসিম। হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। জসিমের মৃত্যুর খবরে তাঁর পরিবারে ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বড় ডালিমা গ্রামের বাসিন্দা মো. আলাউদ্দিন আহম্মেদের ছেলে জসিম উদ্দিন। ছয় ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সেজ। জসিমের এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে মেহনাব হোসেন এ বছর দাখিল পরীক্ষা দিচ্ছে। আর মেয়ে মোছা. জেরিন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে।

জসিমের ছোট ভাই মো. মাহফুজ বলেন, জীবিকার তাগিদে ২০০৫ সালে সৌদি আরব গিয়েছিলেন জসিম। ২০১৭ সালে বাড়ি ফিরে এসে মুরগির খামার করেছিলেন। মুরগির খামারে লোকসানে প্রবাসের আয় করা সব টাকা শেষ হয়ে যায়। উল্টো ঋণের জালে জড়িয়ে পড়েন। ২০১৮ সালে চলে যান মালদ্বীপে। মালদ্বীপের কুলহুধুফুশি আইসল্যান্ডে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। আসছে ঈদুল আজহায় বাড়ি ফেরার কথা ছিল। ২৫ এপ্রিল, শুক্রবার বুকে ব্যথা নিয়ে মালদ্বীপের একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই দিনই বাসায় ফিরে যান। পরের দিন শনিবার রাতে বুকে ব্যথা অনুভব হলে সহকর্মীরা তাঁকে আবার হাসপাতালে নিয়ে যান। রাত চারটার দিকে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

জসিমের বড় ভাই ও মেয়ের আহাজারি। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বড়ডালিমা গ্রামে। ছবি–প্রথম আলো
জসিমের বড় ভাই ও মেয়ের আহাজারি। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বড়ডালিমা গ্রামে। ছবি–প্রথম আলো

স্ত্রী মাসুমা আক্তার কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে মালদ্বীপ গিয়েছিলেন, ফিরবেন লাশ হয়ে—এইটা ক্যামনে সহ্য করমু! আমার দুই সন্তানেরে কী বুঝ দিমু? ওরা বাবা ডাকবে কারে?’ অঝোরে কাঁদছিল মেয়ে জেরিন। আক্ষেপ নিয়ে সে বলছিল, ‘বুঝ হওয়ার আগে থেকেই বাবা বিদেশে থাকেন। বুঝ হওয়ার পর থেকে বাবাকে কখনো সামনাসামনি দেখা হয়নি। ভিডিও কলে বাবাকে দেখতাম। এবার ঈদে (ঈদুল আজহা) বাবাকে দেখব, আদর করব—সেই স্বপ্নে বিভোর ছিলাম। বাবাকে আর দেখা হলো না। নিথর দেহটাকে হয়তো দেখতে পারব।’

জসিমের মৃত্যুর খবরে নির্বাক বৃদ্ধা মা মোছা. বিবি আয়শা (৭৫)। বড় ভাই মো. ফজলুর রহমান ফোরকান বলেন, সব প্রক্রিয়া শেষ করে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বেলা সোয়া ১১টায় মরদেহ মালদ্বীপ থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। সন্ধ্যা সোয়া ছয়টায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। রাতে লাশ গ্রামের বাড়ি বড়ডালিমায় নিয়ে আসা হবে। আজ বুধবার ডালিমা গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে বাবার কবরের পাশেই তাঁকে দাফন করা হবে।

সূত্র: প্রথম আলো

আরও দেখুন

‘নিরাপদ অভিবাসন ব্যবস্থাপনা গঠনে তরুণদের অভিজ্ঞতা অপরিহার্য’

‘নিরাপদ অভিবাসন ব্যবস্থাপনা গঠনে তরুণদের অভিজ্ঞতা অপরিহার্য’

বক্তারা জানান, নিরাপদ অভিবাসন পথ তৈরি এবং শক্তিশালী অভিবাসন ব্যবস্থাপনা গঠনে তরুণদের অভিজ্ঞতা অপরিহার্য। বৈশ্বিক ফোরামগুলোও এখন অভিবাসন শাসনব্যবস্থায় যুব অংশগ্রহণকে গুরুত্ব দিচ্ছে। সারা বিশ্বে প্রায় ১ দশমিক ৮ বিলিয়ন তরুণের দৃষ্টিভঙ্গি অভিবাসন নীতি ও আখ্যানকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক করে তুলতে পারে।

২ দিন আগে

বাংলাদেশি হজযাত্রীদের ২০ শতাংশকে মদিনা দিয়ে যেতে হবে

বাংলাদেশি হজযাত্রীদের ২০ শতাংশকে মদিনা দিয়ে যেতে হবে

সৌদি আরবের সঙ্গে হওয়া হজ চুক্তি অনুযায়ী আগামী বছর হজে মদিনা দিয়ে ২০ শতাংশ বাংলাদেশি হজযাত্রী গমন এবং ৩০ শতাংশ হজযাত্রীকে ফিরতে হবে।

২ দিন আগে

সিলেট অঞ্চলে বুধবার মধ্যরাতে দুবার ভূমিকম্প

সিলেট অঞ্চলে বুধবার মধ্যরাতে দুবার ভূমিকম্প

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সিসমিক অবজারভেটরির তথ্যমতে, রিখটার স্কেলে প্রথম ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৫ এবং উৎপত্তিস্থল সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলায়। পরের ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৩ এবং এর উৎপত্তিস্থল ছিল বিয়ানীবাজারের পার্শ্ববর্তী মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলায়।

৩ দিন আগে

কর্মরত অবস্থায় আটক করে জেলে, তারপর দেশে পাঠানো হয়েছে: অভিযোগ জর্ডান ফেরত নারী গামেন্টস কর্মীর

কর্মরত অবস্থায় আটক করে জেলে, তারপর দেশে পাঠানো হয়েছে: অভিযোগ জর্ডান ফেরত নারী গামেন্টস কর্মীর

জান্নাতুন বলেন, ‘‘এক কাপড়ে ছিলাম সেটা পরেই আসতে হয়েছে। কোম্পানি থেকে শেষ মাসের বেতন পাব, সেটাও পাইনি। আমাদের জামা–কাপড়সহ প্রয়োজনীয় আরও কিছু জিনিসপত্র ছিল, কিন্তু কিছুই নিয়ে আসতে পারিনি।

৫ দিন আগে