রহমান মৃধা, সুইডেন
বিশ্ব রাজনীতি, কূটনীতি এবং মানবাধিকার আজ এমন এক পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে যেখানে প্রতিটি দেশ নিজেদের স্বার্থ এবং ক্ষমতার জন্য কখনো কখনো অন্যায়ের দিকে ঝুঁকছে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রভাবশালী দেশগুলো যখন নিজেদের কৌশলগত স্বার্থের জন্য মানবাধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বকে উপেক্ষা করতে দ্বিধা করছে, তখন বাংলাদেশকেও তার স্বতন্ত্র অবস্থান শক্তভাবে নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের জাতির ইতিহাস সাক্ষী, বাংলাদেশ কখনোই অন্যায়ের সামনে মাথা নত করেনি এবং তা করবে না। আমরা নিজেদের পায়ে দাঁড়িয়ে প্রতিষ্ঠিত এবং সারা বিশ্বে তা প্রমাণিত হয়েছে।
আজকের দিনেও, যখন আন্তর্জাতিক রাজনীতি এক কঠিন খেলা হয়ে দাঁড়িয়েছে, বাংলাদেশে এটি একটি বিশেষ মুহূর্ত, যেখানে আমাদের স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে হবে যে, বাংলাদেশ আর কোনো বিদেশি শক্তির ইশারায় নাচবে না। আমাদের দেশের সম্মান, স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমরা অটল। বিশ্বের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, যেখানে বড় শক্তি অন্যায়ভাবে ছোট দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোতে হস্তক্ষেপ করছে, তা মোকাবিলা করার জন্য আমাদের একতাবদ্ধ হতে হবে। কূটনীতির নামে বা বিশ্বের কোনো রাজনৈতিক কৌশলের মাধ্যমে আমাদের দেশের সম্মান নিয়ে যেন খেলা না হয়, এ বিষয়ে আমাদের দৃঢ় অবস্থান নিতে হবে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস সশস্ত্র সংগ্রামের। ১৯৭১ সালে আমরা স্বাধীনতার সংগ্রাম জিতেছি। লাখ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করতে। বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ, তবে তার মানুষের শক্তি এবং দৃঢ়তা অনেক বড়। আমরা জানি, শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক উপায়ে নিজেদের অবস্থান প্রতিষ্ঠা করতে।
কিন্তু, যখন আমাদের দেশের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও মানুষের অধিকার প্রশ্নবিদ্ধ হবে, তখন আমরা অস্ত্র হাতে নিতেও জানি। বাংলাদেশ কখনোই সন্ত্রাস বা যুদ্ধপ্রবণ দেশ হিসেবে পরিচিতি পায়নি, কিন্তু শত্রু এলে আমাদের প্রতিরোধ ও প্রতিবাদ জানানো আমাদের অধিকার। আমাদের শান্তিপ্রিয় প্রকৃতি আমাদের শক্তির মূল ভিত্তি, তবে আমরা কখনোই অন্যায়ের সামনে মাথা নত করব না।
বাংলাদেশে ২০২৪ সালে স্বৈরশাসনের পতন ঘটেছে, যা দেশের জনগণের ঐক্য ও সংগ্রামের ফলস্বরূপ। দীর্ঘদিন ধরে গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটাধিকার ও বাক্স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তে জনগণ তাদের আওয়াজ তুলে স্বৈরশাসনের পতন ঘটিয়েছে। স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিবাদ এবং আন্দোলন সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে। যা দেশের ভবিষ্যতের জন্য নতুন আশার বাতি প্রজ্বলিত করেছে। এ পদক্ষেপটি শুধু একটি রাজনৈতিক পরিবর্তন নয়, এটি দেশের জনগণের শক্তি, ঐক্য ও সংগ্রামের শক্তিশালী প্রমাণ। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধার ঘটেছে এবং জনগণ তাদের অধিকার ফিরে পেয়েছে।
বিশ্ব রাজনীতির জগতে, আমরা জানি, বাংলাদেশ অনেক বড় ক্ষমতাধর দেশগুলোর কাছে ক্ষুদ্র হতে পারে। কিন্তু, আমাদের শক্তি আমাদের জাতির ঐতিহ্য ও মানুষের একতা। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কখনোই আত্মসমর্পণ করবে না। শত্রু বা বিরোধী শক্তির প্রভাবের সামনে আমাদের পিছু হটতে হবে না। গত কয়েক বছরে, নানা ধরনের চাপ সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশের ওপর, বিশেষ করে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, মানবাধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে। কিছু শক্তিশালী দেশ নিজেদের সুবিধা হাসিলের জন্য কখনো কখনো বাংলাদেশকে দোষী সাব্যস্ত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু বাংলাদেশ তার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কঠোর অবস্থানে থাকবে এবং এ ধরনের চাপের মোকাবিলা করবে।
এখানে, বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোর দায়বদ্ধতা গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের বিপক্ষে কোনো অপপ্রচার বা অন্যায় কিছু থাকলে, সেটি আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরার দায়িত্ব তাদের। গরিব, অক্ষম বা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে কোনো শক্তি যদি অবজ্ঞা করতে চায়, সেটা কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না। বিশ্বের সমস্ত দেশের মানুষের অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা উচিত এবং বাংলাদেশের জনগণ কখনোই নিজ দেশের প্রতি অসম্মান বা অপমান সহ্য করবে না।
আমরা যারা প্রবাসে আছি, আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি। প্রতিদিন নানা সমস্যার মুখোমুখি হলেও, আমরা কখনোই নিজেদের দেশকে ছোট করতে পারব না। বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে এবং সবার জন্য সঠিক তথ্য প্রচার করতে হবে। দেশের উন্নতি এবং সামগ্রিক সমৃদ্ধি আমাদেরই হাত ধরে আসবে। তাই, আমরা যারা দেশের বাইরে আছি, আমাদের উচিত আন্তর্জাতিক স্তরে বাংলাদেশের সুনাম রক্ষা করা এবং দেশের সত্যিকারের চিত্র তুলে ধরা।
বাংলাদেশ একসময় তার নিজস্ব ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল এবং আজ তা বিশ্বের কাছে একটি বাস্তবতা। যখন বিশ্বব্যাপী নানা দেশ নিজেদের স্বার্থে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বা অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখছে, তখন আমাদেরকে অবশ্যই শক্ত অবস্থানে থাকতে হবে। মিথ্যাচার, অপপ্রচার বা অন্যায়ের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক চাপের সম্মুখীন হলেও, বাংলাদেশের জনগণ কখনোই পিছপা হবে না।
বিশ্ব রাজনীতির এই কুৎসিত খেলায় বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী জাতি হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে এবং সেটা কোনো শক্তির অপপ্রচারে হেলাফেলা হবে না। যদি কখনো প্রয়োজন হয়, বাংলাদেশ তার জনগণের একতাবদ্ধ শক্তি দিয়ে প্রতিরোধ গড়তে জানে। তবে, এটা অত্যন্ত জরুরি যে আমরা নিজেদের দেশকে ভালোবাসি এবং বিশ্ব মঞ্চে বাংলাদেশের প্রতি কোনো অবমাননা বা কটাক্ষ সয়ে নেব না।
এসময়ে এমন একটি লেখার প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বর্তমানে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কিছুটা উত্তেজনাপূর্ণ। সম্প্রতি, শেখ হাসিনা ও তার সরকারের কিছু সদস্য ভারতের সহযোগিতায়, আমেরিকার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের বিষয়ে গুজব ও প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করেছেন। ট্রাম্প তার মন্তব্যে, সত্য যাচাই না করেই, বাংলাদেশকে এমনভাবে উপস্থাপন করেছেন যা মোটেও যুক্তিযুক্ত নয়।
বিশেষত, ২০২০ সালের নভেম্বরে ট্রাম্প, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি সহিংসতা নিয়ে মন্তব্য করে বলেছিলেন যে, ‘‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা বিপর্যস্ত’’ এবং ‘‘সেখানে সরকার অত্যন্ত দমনমূলক শাসন চালাচ্ছে।’’ কিন্তু তার মন্তব্যের পেছনে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য ছিল কি না জানি না, তবে দেশটি তখন স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ছিল এবং আন্তর্জাতিক সংবাদ বা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অবস্থা পর্যবেক্ষণের পরেও সেসব মন্তব্য অযৌক্তিক ছিল কি না জানতে মন চায়। তবে, বর্তমান বাংলাদেশে যখন বিশ্বের শক্তিশালীদেশের রাষ্ট্রদূত রয়েছেন, তখনো ট্রাম্পের পক্ষ থেকে কোনো যাচাই-বাছাই ছাড়াই বাংলাদেশের বিষয়ে এই ধরনের মন্তব্য করাটা চরম অবিচার এবং কূটনৈতিক ভুল আমি মনে করি। এটি আন্তর্জাতিক কূটনীতির চরম অবমাননা এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অনধিকার চর্চা হিসেবে গণ্য হওয়া উচিত।
এমন পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের প্রতি অসত্য তথ্য পরিবেশন এবং বিদেশি শক্তি দ্বারা দেশটির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালানো কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। ভারত বা তার মতো শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো যে দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের কথা বলে, সেই দেশটির বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা অবশ্যই তাদের নৈতিক দায়িত্বের প্রতি অবমাননা। তাদের উচিত ছিল, তাদের মতামত দেওয়ার আগে বিষয়টির সঠিক যাচাই-বাছাই করা এবং কোনো একপেশে বক্তব্য না দেওয়া।
এদিকে, ভারতের নিজের সংখ্যালঘু জনগণের প্রতি যে অবিচার ও নিপীড়ন চলছে, তা সমালোচনার বাইরে রাখা যায় না। ভারতের মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখ ও অন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর যে ব্যাপক নিপীড়ন এবং অবিচার চলছে, তার প্রতি বিশ্ব সম্প্রদায়কে যথাযথ মনোযোগ দিতে হবে। কাশ্মীর ও গুজরাটসহ ভারতের অন্য অঞ্চলে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে যে অবিচার ও সহিংসতা ঘটছে, তা শুধুমাত্র ভারতের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়, বরং এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি স্পষ্ট উদাহরণ।
বাংলাদেশের বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য ভারতের হস্তক্ষেপ একটি নিন্দনীয় বিষয়। এটি স্পষ্ট যে, এমন হস্তক্ষেপের মাধ্যমে ভারত কৌশলগত স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছে। কিন্তু এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশকে আরও শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে—মানসিক ও শারীরিক উভয় দিক থেকেই। আমাদের জনগণকে বুঝতে হবে, কোনো বহিঃশক্তির চক্রান্তের কাছে মাথা নত করা মানে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের সঙ্গে আপস করা।
ভারত যদি সত্যিই সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে কথা বলে, তবে প্রথমে নিজেদের ঘর সাফ করা উচিত। নিজেদের দেশের জনগণের প্রতি অবিচার বন্ধ না করে, তারা অন্য কোনো দেশ বা জনগণের ব্যাপারে নৈতিক বক্তব্য রাখার অধিকার রাখে না। বাংলাদেশ তার সার্বভৌমত্ব এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোতে বহিরাগত হস্তক্ষেপ বরদাশত করবে না।
বাংলাদেশের অবস্থান আন্তর্জাতিক মঞ্চে আরও শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন। একটি ছোট দেশ, তবে ঐতিহাসিক সংগ্রাম ও একাত্মতার মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বে তার জাতিগত শক্তি এবং সংগ্রামের প্রতীক হয়ে উঠেছে। ভারত, কিংবা অন্য কোনো শক্তিশালী দেশের ষড়যন্ত্রে কিংবা অপপ্রচারে বাংলাদেশ কখনো হোঁচট খাবে না। আমাদের জনগণ কখনো নিজেদের সম্মান, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হস্তান্তর করবে না।
বিশ্ব মঞ্চে বাংলাদেশের অবস্থান আরও দৃঢ় করতে হবে। বাংলাদেশের জনগণ জানে, যেকোনো চাপ বা অন্যায়ের সম্মুখীন হলেও, আমরা একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ করব এবং আমাদের জাতির জন্য সব ধরনের অসম্মান ও অপমান সহ্য করা হবে না। আমরা শান্তিপূর্ণ, কিন্তু আমরা কখনোই অন্যায়ের কাছে মাথা নত করব না।
পরিশেষে বলতে চাই, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিশ্চয়তা আমাদের হাতে। এটি একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ, যা কখনো কারও করুণা বা সাহায্যে টিকে থাকবে না। ২০২৪ সালে স্বৈরশাসনের পতন এবং গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা এর প্রমাণ। স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে জনগণের সংগ্রাম সফল হয়েছে। গণতন্ত্র আবারও বাংলার মাটিতে শেকড় গেঁথেছে। আমাদের জাতি কখনো মাথা নত করবে না, কারণ বাংলাদেশের শক্তি, সম্মান ও মর্যাদা রক্ষা করার জন্য আমরা প্রস্তুত। শত্রু, বিরোধী শক্তি কিংবা আন্তর্জাতিক চাপের সম্মুখীন হলেও, বাংলাদেশ তার সার্বভৌমত্ব এবং স্বাধীনতা রক্ষায় শক্ত অবস্থানে থাকবে।
আমরা জানি, বাংলাদেশকে কেউ কখনো দাবাতে পারবে না, কারণ আমাদের দেশ তার জনগণের একতাবদ্ধ শক্তির মধ্যে নিহিত। শান্তিপূর্ণ প্রকৃতির পাশাপাশি, আমরা কখনোই অন্যায়ের কাছে নিজেদের পরাজিত হতে দেব না। দেশের প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান থেকে আমাদের জাতির শক্তি উঠে আসে এবং সেই শক্তি বাংলাদেশ আজ এবং ভবিষ্যতেও বিশ্ব মঞ্চে সম্মানিত স্থান লাভ করেছে। একটি বাংলাদেশ আমাদের জাগ্রত জনতার।
—রহমান মৃধা, গবেষক ও লেখক
(সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন)
ইমেইল: <[email protected]>
বিশ্ব রাজনীতি, কূটনীতি এবং মানবাধিকার আজ এমন এক পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে যেখানে প্রতিটি দেশ নিজেদের স্বার্থ এবং ক্ষমতার জন্য কখনো কখনো অন্যায়ের দিকে ঝুঁকছে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রভাবশালী দেশগুলো যখন নিজেদের কৌশলগত স্বার্থের জন্য মানবাধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বকে উপেক্ষা করতে দ্বিধা করছে, তখন বাংলাদেশকেও তার স্বতন্ত্র অবস্থান শক্তভাবে নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের জাতির ইতিহাস সাক্ষী, বাংলাদেশ কখনোই অন্যায়ের সামনে মাথা নত করেনি এবং তা করবে না। আমরা নিজেদের পায়ে দাঁড়িয়ে প্রতিষ্ঠিত এবং সারা বিশ্বে তা প্রমাণিত হয়েছে।
আজকের দিনেও, যখন আন্তর্জাতিক রাজনীতি এক কঠিন খেলা হয়ে দাঁড়িয়েছে, বাংলাদেশে এটি একটি বিশেষ মুহূর্ত, যেখানে আমাদের স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে হবে যে, বাংলাদেশ আর কোনো বিদেশি শক্তির ইশারায় নাচবে না। আমাদের দেশের সম্মান, স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমরা অটল। বিশ্বের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, যেখানে বড় শক্তি অন্যায়ভাবে ছোট দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোতে হস্তক্ষেপ করছে, তা মোকাবিলা করার জন্য আমাদের একতাবদ্ধ হতে হবে। কূটনীতির নামে বা বিশ্বের কোনো রাজনৈতিক কৌশলের মাধ্যমে আমাদের দেশের সম্মান নিয়ে যেন খেলা না হয়, এ বিষয়ে আমাদের দৃঢ় অবস্থান নিতে হবে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস সশস্ত্র সংগ্রামের। ১৯৭১ সালে আমরা স্বাধীনতার সংগ্রাম জিতেছি। লাখ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করতে। বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ, তবে তার মানুষের শক্তি এবং দৃঢ়তা অনেক বড়। আমরা জানি, শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক উপায়ে নিজেদের অবস্থান প্রতিষ্ঠা করতে।
কিন্তু, যখন আমাদের দেশের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও মানুষের অধিকার প্রশ্নবিদ্ধ হবে, তখন আমরা অস্ত্র হাতে নিতেও জানি। বাংলাদেশ কখনোই সন্ত্রাস বা যুদ্ধপ্রবণ দেশ হিসেবে পরিচিতি পায়নি, কিন্তু শত্রু এলে আমাদের প্রতিরোধ ও প্রতিবাদ জানানো আমাদের অধিকার। আমাদের শান্তিপ্রিয় প্রকৃতি আমাদের শক্তির মূল ভিত্তি, তবে আমরা কখনোই অন্যায়ের সামনে মাথা নত করব না।
বাংলাদেশে ২০২৪ সালে স্বৈরশাসনের পতন ঘটেছে, যা দেশের জনগণের ঐক্য ও সংগ্রামের ফলস্বরূপ। দীর্ঘদিন ধরে গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটাধিকার ও বাক্স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তে জনগণ তাদের আওয়াজ তুলে স্বৈরশাসনের পতন ঘটিয়েছে। স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিবাদ এবং আন্দোলন সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে। যা দেশের ভবিষ্যতের জন্য নতুন আশার বাতি প্রজ্বলিত করেছে। এ পদক্ষেপটি শুধু একটি রাজনৈতিক পরিবর্তন নয়, এটি দেশের জনগণের শক্তি, ঐক্য ও সংগ্রামের শক্তিশালী প্রমাণ। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধার ঘটেছে এবং জনগণ তাদের অধিকার ফিরে পেয়েছে।
বিশ্ব রাজনীতির জগতে, আমরা জানি, বাংলাদেশ অনেক বড় ক্ষমতাধর দেশগুলোর কাছে ক্ষুদ্র হতে পারে। কিন্তু, আমাদের শক্তি আমাদের জাতির ঐতিহ্য ও মানুষের একতা। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কখনোই আত্মসমর্পণ করবে না। শত্রু বা বিরোধী শক্তির প্রভাবের সামনে আমাদের পিছু হটতে হবে না। গত কয়েক বছরে, নানা ধরনের চাপ সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশের ওপর, বিশেষ করে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, মানবাধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে। কিছু শক্তিশালী দেশ নিজেদের সুবিধা হাসিলের জন্য কখনো কখনো বাংলাদেশকে দোষী সাব্যস্ত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু বাংলাদেশ তার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কঠোর অবস্থানে থাকবে এবং এ ধরনের চাপের মোকাবিলা করবে।
এখানে, বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোর দায়বদ্ধতা গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের বিপক্ষে কোনো অপপ্রচার বা অন্যায় কিছু থাকলে, সেটি আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরার দায়িত্ব তাদের। গরিব, অক্ষম বা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে কোনো শক্তি যদি অবজ্ঞা করতে চায়, সেটা কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না। বিশ্বের সমস্ত দেশের মানুষের অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা উচিত এবং বাংলাদেশের জনগণ কখনোই নিজ দেশের প্রতি অসম্মান বা অপমান সহ্য করবে না।
আমরা যারা প্রবাসে আছি, আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি। প্রতিদিন নানা সমস্যার মুখোমুখি হলেও, আমরা কখনোই নিজেদের দেশকে ছোট করতে পারব না। বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে এবং সবার জন্য সঠিক তথ্য প্রচার করতে হবে। দেশের উন্নতি এবং সামগ্রিক সমৃদ্ধি আমাদেরই হাত ধরে আসবে। তাই, আমরা যারা দেশের বাইরে আছি, আমাদের উচিত আন্তর্জাতিক স্তরে বাংলাদেশের সুনাম রক্ষা করা এবং দেশের সত্যিকারের চিত্র তুলে ধরা।
বাংলাদেশ একসময় তার নিজস্ব ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল এবং আজ তা বিশ্বের কাছে একটি বাস্তবতা। যখন বিশ্বব্যাপী নানা দেশ নিজেদের স্বার্থে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বা অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখছে, তখন আমাদেরকে অবশ্যই শক্ত অবস্থানে থাকতে হবে। মিথ্যাচার, অপপ্রচার বা অন্যায়ের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক চাপের সম্মুখীন হলেও, বাংলাদেশের জনগণ কখনোই পিছপা হবে না।
বিশ্ব রাজনীতির এই কুৎসিত খেলায় বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী জাতি হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে এবং সেটা কোনো শক্তির অপপ্রচারে হেলাফেলা হবে না। যদি কখনো প্রয়োজন হয়, বাংলাদেশ তার জনগণের একতাবদ্ধ শক্তি দিয়ে প্রতিরোধ গড়তে জানে। তবে, এটা অত্যন্ত জরুরি যে আমরা নিজেদের দেশকে ভালোবাসি এবং বিশ্ব মঞ্চে বাংলাদেশের প্রতি কোনো অবমাননা বা কটাক্ষ সয়ে নেব না।
এসময়ে এমন একটি লেখার প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বর্তমানে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কিছুটা উত্তেজনাপূর্ণ। সম্প্রতি, শেখ হাসিনা ও তার সরকারের কিছু সদস্য ভারতের সহযোগিতায়, আমেরিকার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের বিষয়ে গুজব ও প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করেছেন। ট্রাম্প তার মন্তব্যে, সত্য যাচাই না করেই, বাংলাদেশকে এমনভাবে উপস্থাপন করেছেন যা মোটেও যুক্তিযুক্ত নয়।
বিশেষত, ২০২০ সালের নভেম্বরে ট্রাম্প, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি সহিংসতা নিয়ে মন্তব্য করে বলেছিলেন যে, ‘‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা বিপর্যস্ত’’ এবং ‘‘সেখানে সরকার অত্যন্ত দমনমূলক শাসন চালাচ্ছে।’’ কিন্তু তার মন্তব্যের পেছনে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য ছিল কি না জানি না, তবে দেশটি তখন স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ছিল এবং আন্তর্জাতিক সংবাদ বা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অবস্থা পর্যবেক্ষণের পরেও সেসব মন্তব্য অযৌক্তিক ছিল কি না জানতে মন চায়। তবে, বর্তমান বাংলাদেশে যখন বিশ্বের শক্তিশালীদেশের রাষ্ট্রদূত রয়েছেন, তখনো ট্রাম্পের পক্ষ থেকে কোনো যাচাই-বাছাই ছাড়াই বাংলাদেশের বিষয়ে এই ধরনের মন্তব্য করাটা চরম অবিচার এবং কূটনৈতিক ভুল আমি মনে করি। এটি আন্তর্জাতিক কূটনীতির চরম অবমাননা এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অনধিকার চর্চা হিসেবে গণ্য হওয়া উচিত।
এমন পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের প্রতি অসত্য তথ্য পরিবেশন এবং বিদেশি শক্তি দ্বারা দেশটির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালানো কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। ভারত বা তার মতো শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো যে দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের কথা বলে, সেই দেশটির বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা অবশ্যই তাদের নৈতিক দায়িত্বের প্রতি অবমাননা। তাদের উচিত ছিল, তাদের মতামত দেওয়ার আগে বিষয়টির সঠিক যাচাই-বাছাই করা এবং কোনো একপেশে বক্তব্য না দেওয়া।
এদিকে, ভারতের নিজের সংখ্যালঘু জনগণের প্রতি যে অবিচার ও নিপীড়ন চলছে, তা সমালোচনার বাইরে রাখা যায় না। ভারতের মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখ ও অন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর যে ব্যাপক নিপীড়ন এবং অবিচার চলছে, তার প্রতি বিশ্ব সম্প্রদায়কে যথাযথ মনোযোগ দিতে হবে। কাশ্মীর ও গুজরাটসহ ভারতের অন্য অঞ্চলে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে যে অবিচার ও সহিংসতা ঘটছে, তা শুধুমাত্র ভারতের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়, বরং এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি স্পষ্ট উদাহরণ।
বাংলাদেশের বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য ভারতের হস্তক্ষেপ একটি নিন্দনীয় বিষয়। এটি স্পষ্ট যে, এমন হস্তক্ষেপের মাধ্যমে ভারত কৌশলগত স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছে। কিন্তু এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশকে আরও শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে—মানসিক ও শারীরিক উভয় দিক থেকেই। আমাদের জনগণকে বুঝতে হবে, কোনো বহিঃশক্তির চক্রান্তের কাছে মাথা নত করা মানে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের সঙ্গে আপস করা।
ভারত যদি সত্যিই সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে কথা বলে, তবে প্রথমে নিজেদের ঘর সাফ করা উচিত। নিজেদের দেশের জনগণের প্রতি অবিচার বন্ধ না করে, তারা অন্য কোনো দেশ বা জনগণের ব্যাপারে নৈতিক বক্তব্য রাখার অধিকার রাখে না। বাংলাদেশ তার সার্বভৌমত্ব এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোতে বহিরাগত হস্তক্ষেপ বরদাশত করবে না।
বাংলাদেশের অবস্থান আন্তর্জাতিক মঞ্চে আরও শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন। একটি ছোট দেশ, তবে ঐতিহাসিক সংগ্রাম ও একাত্মতার মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বে তার জাতিগত শক্তি এবং সংগ্রামের প্রতীক হয়ে উঠেছে। ভারত, কিংবা অন্য কোনো শক্তিশালী দেশের ষড়যন্ত্রে কিংবা অপপ্রচারে বাংলাদেশ কখনো হোঁচট খাবে না। আমাদের জনগণ কখনো নিজেদের সম্মান, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হস্তান্তর করবে না।
বিশ্ব মঞ্চে বাংলাদেশের অবস্থান আরও দৃঢ় করতে হবে। বাংলাদেশের জনগণ জানে, যেকোনো চাপ বা অন্যায়ের সম্মুখীন হলেও, আমরা একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ করব এবং আমাদের জাতির জন্য সব ধরনের অসম্মান ও অপমান সহ্য করা হবে না। আমরা শান্তিপূর্ণ, কিন্তু আমরা কখনোই অন্যায়ের কাছে মাথা নত করব না।
পরিশেষে বলতে চাই, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিশ্চয়তা আমাদের হাতে। এটি একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ, যা কখনো কারও করুণা বা সাহায্যে টিকে থাকবে না। ২০২৪ সালে স্বৈরশাসনের পতন এবং গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা এর প্রমাণ। স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে জনগণের সংগ্রাম সফল হয়েছে। গণতন্ত্র আবারও বাংলার মাটিতে শেকড় গেঁথেছে। আমাদের জাতি কখনো মাথা নত করবে না, কারণ বাংলাদেশের শক্তি, সম্মান ও মর্যাদা রক্ষা করার জন্য আমরা প্রস্তুত। শত্রু, বিরোধী শক্তি কিংবা আন্তর্জাতিক চাপের সম্মুখীন হলেও, বাংলাদেশ তার সার্বভৌমত্ব এবং স্বাধীনতা রক্ষায় শক্ত অবস্থানে থাকবে।
আমরা জানি, বাংলাদেশকে কেউ কখনো দাবাতে পারবে না, কারণ আমাদের দেশ তার জনগণের একতাবদ্ধ শক্তির মধ্যে নিহিত। শান্তিপূর্ণ প্রকৃতির পাশাপাশি, আমরা কখনোই অন্যায়ের কাছে নিজেদের পরাজিত হতে দেব না। দেশের প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান থেকে আমাদের জাতির শক্তি উঠে আসে এবং সেই শক্তি বাংলাদেশ আজ এবং ভবিষ্যতেও বিশ্ব মঞ্চে সম্মানিত স্থান লাভ করেছে। একটি বাংলাদেশ আমাদের জাগ্রত জনতার।
—রহমান মৃধা, গবেষক ও লেখক
(সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন)
ইমেইল: <[email protected]>
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে ভারতের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ।
দাবি মেনে নেওয়ায় গাজীপুর নগরের কোনাবাড়ী এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক থেকে বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছে শ্রমিকেরা। এর ফলে প্রায় ৪ ঘণ্টা পর সোমবার বেলা দেড়টার দিকে সড়কটিতে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বন্ধ ঘোষণা করা ২টি কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ী এলাকায় বিক্ষোভ এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেছেন শ্রমিকেরা।
যোগ্যতার চাইতে প্রাপ্তি বেশি হয়ে গেলে তখন সে লাগামহীন হয়ে ওঠে। এ অনেকটা মাটি ও খুঁটির মতো অবস্থা। খুঁটি শক্ত না হলে ঘর নড়বড়ে হবে আবার মাটি উর্বর না হলে খাওয়াপড়া জুটবে না। মানুষের চিন্তার সমৃদ্ধির জন্য পড়াশোনা কিংবা জ্ঞানের কোনো বিকল্প নেই।