top ad image
top ad image
home iconarrow iconসারা দেশ

রিমালের কেন্দ্র উপকূলে প্রবেশ করেছে

রিমালের কেন্দ্র উপকূলে প্রবেশ করেছে
ফাইল ছবি

প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমাল বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করা শুরু করেছে। রোববার সন্ধ্যায় ৬টায় ঘুর্ণিঝড়টির কেন্দ্র পটুয়াখালীর খেপুপাড়া ও আশপাশের এলাকা দিয়ে উপকূলে প্রবেশ করে। এর ফলে, উপকূলীয় অঞ্চলে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, রাত ১০টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ অতিক্রম করবে।

এদিকে, কুয়াকাটায় পানির তোড়ে ভেসে গিয়ে এক জেলের মৃত্যু হয়েছে।

আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার। যা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।

পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত এবং কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম বন্দরে ৯ নম্বর মহাবিপৎসংকেত জারি রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ ১৫ উপকূলীয় জেলা ও আশপাশের দ্বীপ ও নিম্নাঞ্চলে ৮ থেকে ১২ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা রয়েছে। ভারী বৃষ্টির কারণে পার্বত্য অঞ্চলে পাহাড় ধ্বসের শঙ্কাও রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি হচ্ছে। কোথাও কোথাও বইছে দমকা হাওয়া। নদীতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে দু-তিন ফুট বেশি উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। উপকূলবাসীকে সতর্ক করতে ও নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে জেলায় জেলায় চলছে মাইকিং।

রোববার সকাল থেকে বরগুনায় থেমে থেমে হালকা ও মাঝারি বৃষ্টি হচ্ছে। তলিয়ে গেছে বড়ইতলা ফেরি ঘাটের গ্যাংওয়ে। জেলায় দুর্যোগ মোকাবিলা ৬৭৩টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ৩টি মুজিব কেল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেখানে ৩ লাখ ২১ হাজার ২৪৪ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। এ ছাড়া সাতক্ষীরায় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বইছে। নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাগেরহাটের নদীতীরবর্তি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের জন্য ৩৫৯টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র খুলে দিয়েছে প্রশাসন।

নোয়াখালীর উপকূলীয় এলাকায় দমকা হাওয়া বইছে। হাতিয়ার মেঘনা নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উচ্চতায় জোয়ারের পানি প্রবাহিত হচ্ছে। বৈরি আবহাওয়ার কারণে হাতিয়ায় সব ধরনের নৌ পারাপার বন্ধ রাখা হয়েছে।

রিমাল মোকাবিলায় নোয়াখালীর উপকূলীয় পাঁচ উপজেলায় ৪৬৬টি আশ্রয়কেন্দ্র, ৮ হাজার ৩৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক ও ১০২টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ঝালকাঠির সুগন্ধা ও বিশখালী নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে দুই থেকে আড়াই ফুট উচ্চতা দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। রোববার সকাল থেকেই আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে, থেমে থেমে পড়ছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। সেই সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া বইছে।

একই অবস্থা বরিশাল, পিরোজপুরসহ বিভিন্ন জেলায়। বরিশাল, চাঁদপুর থেকে সব রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ আছে। এ ছাড়া, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখাসহ মেডিকেল টিম গঠন, স্যালাইন, ওষুধ ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় আট থেকে নয় হাজার নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান। সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণলায় সভা শেষে রোববার দুপুরে এক ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় সকাল পর্যন্ত উপকূলের ৫০ শতাংশ মানুষ এসব কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। দ্রুত অন্যদেরও কেন্দ্রগুলোয় অবস্থানের অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

r1 ad
r1 ad